২০১৯-২০ মৌসুমে রেলিশনের শিকার হওয়ার পর দুই মৌসুম ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় টিয়ার “চ্যাম্পিয়নশিপে” কাটানোর আবারো প্রিমিয়ার লীগে ফিরে এসেছে এএফসি বোর্নমাউথ।

প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশন এর লড়াইটি আগের বারের মত এবার তাদের জন্য ততটাও অসাধারণ ছিল না। গতবার যখন তারা ২০১৪-১৫ সালে প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশন অর্জন করেছিল, সেবার তারা চ্যাম্পিয়নশিপের প্রায় সকল দলকেই উড়িয়ে দিয়ে প্রতিযোগিতাটির শিরোপা ঘরে তুলেই প্রিমিয়ার লীগে প্রবেশ করেছিল।

তাদের খেলার সেই দুর্জয় স্টাইলের উপর ভর করেই তারা প্রিমিয়ার লীগে নিজেদের একটি জায়গা তৈরি করে নেয়, এমনকি ২০১৬-১৭ মৌসুমে তারা তাদের শ্রেষ্ঠ মৌসুমে লীগ টেবিলের ৯ম স্থানে অবস্থান করতেও সক্ষম হয়। কিন্তু, ২০১৯-২০ মৌসুমের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে, এডি হাও (দলটির সে সময়কার ম্যানেজার) এবং তার দলের জন্য মৌসুমটি খুব একটা সুখকর হবে না।

তবে যাই হোক, বোর্নমাউথ আবার প্রিমিয়ার লীগে ফিরে এসেছে, এবং সেই ফিরে আসাটি সম্ভব হয়েছে তাদের হেড কোচ স্কট পার্কারের হাত ধরে। ম্যানেজার বা হেড কোচ হিসেবে স্কট পার্কার এর ছোট্ট ক্যারিয়ারে এর আগে মাত্র একবারই প্রিমিয়ার লীগে কোচিং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এবং সেই অভিজ্ঞতাটিও কিন্তু এই যুবা কোচের জন্য খুব একটা সুখকর ছিল না।

চ্যাম্পিয়নশিপে বোর্নমাউথের ২০২১-২২ মৌসুমের সার সংক্ষেপ (Bournemouth in the 2021-22 Championship)

প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশন অর্জন করলেও অনেক দিকে থেকে দেখলেই মনে হবে যে সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২২ মৌসুমটি বোর্নমাউথের জন্য খুবই কষ্টকর এবং ক্লান্তিকর ছিল। মৌসুমটি জুড়েই তাদের খেলা দেখলে যে কেউ বলবে যে তাদের ঘাড়ে যেন বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের সকল চাপে এসে পড়েছিল। তাদের সমর্থকদের আশা ভরসার চাপও সেক্ষেত্রে বিশাল বড় আকার ধারণ করেছিল। এছাড়া ব্রিটিশ মিডিয়াও তাদেরকে ২০১৫ সালের সেই ঐতিহাসিক রাতের কথা তাদেরকে বার বারই মনে করিয়ে দিচ্ছিল, যে রাতে তারা প্রথম দফায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় টিয়ারের শিরোপা জিতে প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশন অর্জন করেছিল। এ কারণেও ক্লাবটিতে কর্মরত সকলের ভেতরেই কিছুটা প্রত্যাশার চাপ বাসা বেঁধেছিল। এ সবকিছু মিলিয়ে ভাইটালিটি স্টেডিয়ামে এমন একটি আবহাওয়া তৈরি হয়েছিল যা তাদের খেলোয়াড়দের জন্য কোনক্রমেই আদর্শ একটি আবহাওয়া ছিল না।

তবে, এত কিছুর পরেও তারা কোনমতে লীগটির দ্বিতীয় স্থান বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। তারা শিরোপাজয়ী ফুলহ্যামের চেয়ে মাত্র ২ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকেই মৌসুম শেষ করেছিল। শুধু তাই নয়, গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপে তারাই সবচেয়ে কম গোল হজম করেছে। অর্থাৎ, তাদেরই ছিল লীগটির সেরা ডিফেন্স। তারা তাদের খেলা ৪৬টি ম্যাচে কেবলমাত্র ৩৯টি গোল হজম করেছে, এবং এমন সাফল্যমণ্ডিত একটি ডিফেন্সিভ সিস্টেম দাঁড়া করানোতে সক্ষম হওয়ায় বোর্নমাউথের ভক্ত সমর্থকরা অবশ্যই পার্কারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে।

তবে, প্রিমিয়ার লীগে তার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পূর্বে স্কট পার্কারকে তার দলের সম্পূর্ণ প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি জুড়েই একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, এবং সেটি হল ট্রান্সফার মার্কেটে খুব বুঝে শুনে পা বাড়ানো। বোর্নমাউথের ভক্তরা অবশ্য স্কট পার্কারকে নিয়ে বেশ সন্দীহান, বিশেষ করে কারণ তারা প্রিমিয়ার লীগের অন্যান্য কোচ বা ম্যানেজারদের সাথে পার্কারের তুলনা করলে দেখতে পায় যে অন্যান্যদের চেয়ে বেশ কিছু জায়গাতেই তার অনেকাংশে ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হলেন বোর্নমাউথের সাবেক কোচ এডি হাও। তিনি বোর্নমাউথ ছাড়ার পর একটি শোচনীয় অবস্থায় থাকা নিউক্যাসেল ইউনাইটেড এর দায়িত্ব ঘাড়ে তুলে নেন, দলটিকে রেলিগেশন থেকে বাঁচান, এবং দলটির আনাচে কানাচে তার ছাপ রেখে দিতে সক্ষম হোন। বর্তমানে ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে দামী দল নিউক্যাসেলে এডি হাও যা করেছেন, স্কট পার্কার তার খুবই নগন্ন একটি অংশও যদি অর্জন করতে পারেন বোর্নমাউথের হয়ে, তাহলেও তাকে ক্লাবড়ির ইতিহাসের একজন মহানায়ক হিসেবেই গণ্য করা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

পড়ুন:  গ্যাব্রিয়েল জেসুসঃ তার ইঞ্জুরি কিভাবে আর্সেনালের শিরোপা স্বপ্নকে বিঘ্নিত করতে পারে?

২০২২-২৩ মৌসুমের জন্য প্রিমিয়ার লীগের দিকে যাত্রা (Journey to the 2022/23 Premier League season)

দ্য চেরিস খ্যাত বোর্নমাউথ তাদের ২০২১-২২ মৌসুমের সর্বশেষ ম্যাচের আগের ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ১-০ গোলে হারিয়ে আগামী মৌসুমের জন্য প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল নিশ্চিত করে।

কিফার মুরের গোলটি যখন ফরেস্টের জালে জড়ায়, তখন স্টেডিয়ামে থাকা সকল চেরিস সমর্থক উত্তেজনায় ফেটে পড়েন। তবে তার চেয়েও বিশাল আনন্দের চিৎকার শোনা যায় যখন ম্যাচটির সমাপ্তির বাঁশি বাজান রেফারি, এবং সেসকল সমর্থকরা বুঝতে পারেন যে পরের সিজনে তাদের দল ইংলিশ টপ ফ্লাইটে খেলার সুযোগ পাবে।

তবে, তাদের কিছু সমর্থক নিশ্চয় এমনও আছেন, যারা এই অর্জনের পরেও খুশি হোননি, এবং এই চিন্তায় মগ্ন ছিলেন যে “আরও কতটা ভালো হতে পারতো তাদের মৌসুম”! সিজনশেষে চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জয়ী ফুলহ্যামের থেকে যে তারা শুধুমাত্র ২ পয়েন্টই পিছিয়ে ছিল!

মৌসুনের প্রথম ১৫টি ম্যাচে পুরোপুরিভাবে অপরাজিত থাকার পর যখন বোর্নমাউথ আঁচ করতে পেরেছিল যে হয়তো তারা প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশনের পথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে, তখন তারা হাল অনেকটাই ছেড়ে দেন, এবং তার ফলে তাদের ফর্মও অনেকটাই পড়ে যায়। এর প্রভাব তাদের ফলাফলগুলির উপর পড়তে শুরু করে। বিশেষ করে গত শীতকালীন সময়টিতে তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় ফর্মের দিক দিয়ে, এবং লীগের নিচের সারির দলগুলিকে হারাতেও তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

কিন্তু, এমনটি ঘটতে পারে তাও তাদের প্রথমদিকের সেই ১৫টি ম্যাচেও আঁচ করা যাচ্ছিল, কারণ সেসব ম্যাচের বেশির ভাগই তারা জিতেছিল মাত্র ১ গোলের ব্যবধানে। শীতকালীন সেই সময়কালটি তাদের আকাশ থেকে আবার মাটিতে নামিয়ে আনতে সাহায্য করে। সেই সময়কালের মধ্যে তারা তাদের নিকট উপলব্ধ মোট ৩৬ পয়েন্টের মধ্যে মাত্র ১২ পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

কালের ক্রমে, তারা স্বয়ংক্রিয় প্রমোশনের স্থানগুলি থেকে ছিটকে পড়েন, এবং তাদের ফর্মে ফেরার কোন সম্ভাবনাও তেমন একটা দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তারা সেই স্বয়ংক্রিয় প্রমোশন অর্জন করতে সক্ষম হোন, এবং সেটির পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল শীতকালীন (জানুয়ারি) ট্রান্সফার উইন্ডোতে কিছু অসাধারণ কেনাকাটা।

চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বোর্নমাউথের মুক্তির যাত্রা (Road to Championship redemption)

লিভারপুলের যুবা তারকা ন্যাট ফিলিপ্স এবং বোর্নমাউথের প্রমোশনের মূল নায়ক মুরের হাত ধরেই দলটি আবার ধীরে ধীরে নিজেদের লক্ষ্যের দিকে আগাতে শুরু করে। এই দুইজনকেই তারা কিনেছিলেন জানুয়ারির ট্রান্সফার উইন্ডোতে, এবং এই দুজনই একরকম স্বহস্তে এক নাগারে চেরিস’দের ডিফেন্স ও অ্যাটাক সামলেছেন।

পড়ুন:  ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ বলের ইতিহাস

তারা চ্যাম্পিয়নশিপের সকল বড় বড় দলের সাথে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয়েছিল, এবং মোটমাট, তারা তাদের মৌসুমের শেষ ১৭ ম্যাচের মধ্যে কেবল ২টিতেই হেরেছিল। অধিনায়ক লয়েড কেলি’র সাথে ন্যাট ফিলিপ্স একটি অসাধারণ ডিফেন্সিভ যুগলবন্দি তৈরি করতে সক্ষম হোন। লীগটির অন্যান্য প্রমোশন প্রত্যাশী ক্লাবগুলোর হাতে তুলোধুনো হওয়া থেকে বোর্নমাউথকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে বিশাল বড় অবদান ছিল অধিনায়ক লয়েডের।

মাত্র ২৩ বছর বয়সী লয়েড কেলি শুধু যে চমৎকার ডিফেন্ডিংই করেছেন, তাও কিন্তু নয়। তিনি গত মৌসুমে তার পুরো খেলায় বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষন হয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হল তার অবস্থানগত সতর্কতা, এবং ডিফেন্স থেকে অ্যাটাকে বল আনা নেওয়া করা, এবং এর ফলও তিনি সাথে সাথেই পেয়েছেন। ন্যাট ফিলিপ্স এর সাথে, যিনি কি না লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ না খেলে বেছে নিয়েছিলেন বোর্নমাউথের হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ, লয়েডের অমায়িক যুগলবন্দী এবং আরো বেশি গেমটাইম হাসিল করার লক্ষ্যই তাদেরকে ক্রমেই আরো ভালো খেলোয়াড়ে পরিণত করে দেয়। এবং, শেষ পর্যন্ত দেখা গিয়েছে যে সবকিছুই বোর্নমাউথ এবং স্কট পার্কারের জন্য কাজে দিয়েছে।

যতই মৌসুমটি আগাচ্ছিল, ততই চেরিস ফরোয়ার্ড ডমিনিক সোলাঙ্কি ফর্মের তুঙ্গে উঠছিলেন, এবং প্রমোশনের সেই দৌড়ে অধিনায়ক লয়েড কেলির পাশাপাশি তিনিই দলটির জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হোন। গণণা করলে অবাকই লাগে যে, গত মৌসুমে চেরিস’দের করা মোট ৭৪টি গোলের মধ্যে ৪০টিই করেন সোলাঙ্কি। এছাড়া তার নামের পাশে ৭টি এসিস্টও ছিল।

ক্লাবটির সাফল্যের পেছনে তাদের ২২ বছর বয়সী গোলকিপার মার্ক ট্র‍্যাভার্স এর অবদানও কোন অংশেই কম নয়। কেলি, ফিলিপ্স এবং সোলাঙ্কির পাশাপাশি তিনিও ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। তিনি সর্বমোট ১৯টি ক্লিন শিট রাখতে সমর্থ্য হোন এবং দলের জন্য একের পর এক অসাধারণ সব সেভ করেও তিনি দলটিকে বেশ কিছু পয়েন্ট জিতিয়েছেন।

কিভাবে বোর্নমাউথ আগামী মৌসুমে রেলিগেশন থেকে বাঁচবে? (How can they survive the drop next season?)

আগামী মৌসুমে বাঘের খাঁচায় (প্রিমিয়ার লীগ) প্রবেশ করার পূর্বে বোর্নমাউথের বেশ কিছু দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে কিছু ভালো ভালো সাইনিং করানোর পাশাপাশি তাদের বেশ কিছু নিজস্ব খেলোয়াড়কে ধরেও রাখতে হবে, কমপক্ষে ব্যাক আপ অপশন হিসেবে, যেহেতু প্রিমিয়ার লীগে ইঞ্জুরির সমস্যা চিরন্তন।

গত মৌসুমে যেসব দল তাদের বিরুদ্ধে লো-ব্লক এবং হাই-ব্লক স্ট্র‍্যাটেজিতে ডিফেন্স করেছে, তাদের বিপক্ষে গোল করতে বোর্নমাউথকে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। মোট কথা, আক্রমণভাগে বুদ্ধিদীপ্ততার পরিচয় তারা কিছুটা কমই দিতে পেরেছিলেন গত মৌসুমে। এখন, চিন্তার বিষয় হল যে, সেই ডিফেন্সিভ ট্যাকটিক অনুসরণ করে, প্রিমিয়ার লীগে এমন দলের অভাব নেই। বড় দলগুলির মধ্যে এমনটি করে থাকে চেলসি এবং টটেনহ্যাম হটস্পার্স।

বোর্নমাউথ তাদের সাবেক কোচ এডি হাও এর অধীনে খেলার সময় একটি ডাইরেক্ট স্টাইল অনুসরণ করতো। ডিফেন্স থেকে সরাসরি অ্যাটাক, অথবা মিডফিল্ড দিয়ে ঝড়ের গতিতে কয়েকটি পাসের মাধ্যমেই অ্যাটাকে প্রবেশ — এমনটিই ছিল তখন তাদের রণকৌশল। তবে, তাদের বর্তমান কোচ স্কট পার্কার সেটি পুরোপুরি বদলে দিয়েছেন। এখন বোর্নমাউথ একটি পাসিং দল। বল পজিশন ধরে রেখে তারা প্রতিপক্ষকে ডমিনেট করে খেলতে পারদর্শী, যদিও অনেকেই মনে করেন এই খেলার স্টাইলটি বেশ একঘেঁয়ে।

পড়ুন:  টটেনহ্যামকে কি আসলেও একটি বড় ক্লাব হিসেবে গণ্য করা উচিৎ?

বোর্নমাউথের জন্য সুসংবাদ হল, প্রিমিয়ার লীগের বেশির ভাগ দলও তাদের মতই পজিশন ফুটবল খেলে অভ্যস্ত। তাই তাদের বিরুদ্ধে ডিফেন্ড করা চেরিস’দের জন্য কিছুটা হলেও সহজ হতে পারে। তবে, সবচেয়ে ভালো দলগুলির বিরুদ্ধে তাদেরকে এক বা একাধিক পরিকল্পনা হাতে রাখতে হবে, এবং তাছাড়াও যেসকল দল পুরনো বোর্নমাউথের মত ডাইরেক্ট ফুটবলে বিশ্বাসী, তাদের বিরুদ্ধে খেলার সময় চেরিস’দেরকে আরো গতিশীলতার সাথে বল আগাতে হবে। প্রিমিয়ার লীগে এধরণের ট্যাকটিক্স অনুসরণকারী দলগুলির মধ্যে অন্যতম হল লিভারপুল, এস্টন ভিলা, সাউথ্যাম্পটন, এবং এমনকি ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়নও।

যেসকল স্থানে তাদের শক্তি বাড়ানো উচিৎ (Areas to strengthen)

যে অবস্থায়, বা যেসকল খেলোয়াড়দের হাত ধরে চেরিস’রা প্রিমিয়ার লীগে পুনঃপ্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন, সেই দলটি অবশ্যই বেশ শক্তিশালী এবং যেকোন দলকে টক্কর দিতে সক্ষম। তবে, প্রিমিয়ার লীগ কিন্তু একটি সম্পূর্ণ আলাদা লীগ, এবং এখানে ভালো করতে হলে অবশ্যই বড়সড় একটি স্কোয়াড এবং বেশ কিছু ম্যাচ উইনারদের দিয়েই দল সাজানো উত্তম। স্কট পার্কারের তাই উচিৎ দলটিতে আরেকটু শক্তির অনুপ্রবেশ ঘটানো।

প্রথমেই বলতে হয় যে, চেরিস’দের একজন প্রতিভাবান গোলকিপার খুবই দরকার, যিনি ট্র‍্যাভার্স এর ব্যাক আপ হিসেবে দলে থাকবেন, যা তাকে আরো ভালো করার জন্য তাগিদ দিতে থাকবেন। তবে, তাদের ট্রান্সফার-ইন তালিকায় সবার উপরে যার থাকা উচিৎ তার নাম হল ন্যাট ফিলিপ্স, যিনি কি না বোর্নমাউথে তার লোন স্পেল শেষে তার প্রকৃত ক্লাব লিভারপুলে ফিরে গিয়েছেন।

এই ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার যেকোন দলের রক্ষণভাগেই মজবুতি প্রদান করতে সক্ষম, তবে লিভারপুলের সেন্ট্রাল ডিফেন্সে ভার্জিল ভ্যান ডাইকের পার্টনার হিসেবে জয়েল ম্যাটিপের পাশাপাশি ইব্রাহিমা কোনাতেও প্রাধান্য পাওয়ায় সেখানে খেলার সুযোগ পাওয়াটা ফিলিপ্স এর জন্য বেশ দুরূহ হয়ে পড়বে, বিধায় লিভারপুলে থেকে যাওয়াটা তার জন্য এক ধরণের বোকামি হবে বলেই মনে হচ্ছে। ভাইটালিটি স্টেডিয়ামে তার দর্শকপ্রিয়তা বেশ উঁচুতে, তাই তাকে দলে ভেড়ানোর সকল পন্থাই অবলম্বন করবে বোর্নমাউথ, এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে।

তাদের মিডফিল্ডের বিভিন্ন জায়গায়ও বেশ কিছু খেলোয়াড় কেনা খুবই দরকার হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে লুইস কুক এর পজিশনটিতে। তার পজিশনটি স্কট পার্কারের ফর্মেশনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি পজিশন, এবং তার ধারাবাহিক ইঞ্জুরি সমস্যা পার্কারের জন্য একটি বিশাল বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।

গতবার যখন পার্কার একটি প্রমোটেড দলের দায়িত্বে ছিলেন, তখন তিনি সেই দলটির পুরো রূপই বদলে দিয়েছিলেন। ফুলহ্যামে সেবার তিনি সর্বমোট ১১ জন নতুন মুখকে স্কোয়াডে ঢুকিয়েছিলেন, যা দলটির ভাবমূর্তি সম্পূর্ণরূপে বিঘ্নিত করেছিল। সেই ধরণের ভুল যদি তিনি আবার করেন, তাহলে তিনি প্রিমিয়ার লীগের স্বাদ ঠিক মত নিতে না নিতেই চ্যাম্পিয়নশিপে ফিরে যাবেন, এমনটিই ধারণা করছেন ফুটবল বিশারদরা।

Share.
Leave A Reply