এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই যে, বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল এবং ট্যাক্টিকাল ম্যানেজারদের তালিকায় পেপ গার্দিওলা’র নাম অনেক উপরের দিকেই থাকবে। তার রেকর্ডই তার হয়ে কথা বলে এসেছে, এবং সেজন্যই হয়তো তিনি যেখানেই গিয়েছেন এবং ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই এসেছে সাফল্যের বন্যা।
বার্সেলোনায় থাকাকালীন তিনি এমন একটি খেলার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন যা পৃথিবী আগে কখনো দেখেনি। পুরো পৃথিবীই তাক লেগে গিয়েছিল এবং তার প্রতিভার দার দিতে বাধ্য হয়েছিল। তার সৃষ্ট সেই ‘তিকিতাকা’ স্টাইলটি পুরো বিশ্বে মুহূর্তের মধ্যেই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল, এবং তিনি বার্সেলোনাকে নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবল এবং সাথে সাথে ইউরোপেও সব ধরণের সাফল্য অর্জন করে নেন। এরপর তিনি পাড়ি জমান জার্মান রাজধানী মিউনিখে, সেখানকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতে। এবং সেখানেও তিনি জিতে নেন প্রায় সবকিছুই, ভাঙেন প্রচুর রেকর্ড, এবং প্রমাণ করেন যে বার্সেলোনায় তার সাফল্য কোন কাকতালীয় ঘটনা ছিল না।
এবার আসা যাক ম্যানচেস্টার সিটিতে, যেখানে গার্দিওলা বর্তমানে অবস্থান করছেন। প্রিমিয়ার লীগকেই ধরা হয় বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন ঘরোয়া ফুটবল লীগ হিসেবে। কিন্তু, গার্দিওলা এই লীগটিকেও বেশ সহজেই নিজের বশে এনে ফেলেছেন। তিনি সিটিজেনদের নিয়ে ভেঙেছেন বহু রেকর্ড, এবং চালিয়ে গিয়েছেন তার অসাধারণ ক্রীড়াশৈলির অনবদ্য ধারা। ২০১৬ সালে ক্লাবটির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি ক্লাবটিকে নিয়ে গিয়েছেন অসম্ভব এক উচ্চতায়, যেখানে তারাই হলেন বাস্তুতন্ত্রের প্রথম পর্যায়ের খাদক, অর্থাৎ লীগের অন্য সকল দলকেই তারা একরকম নিজেদের পদতলেই রেখে দিতে সক্ষম। সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমের শিরোপাটি নিজেদের নামে করার মধ্য দিয়ে তারা গত ৫টি মৌসুমের মধ্যে ৪টিতেই এই শিরোপা ঘরে তোলার নৈপুণ্য অর্জন করে নিয়েছে।
তবে, এতকিছু অর্জন করার পরেও, পেপ গার্দিওলাকে নিয়ে কম সমালোচনার ঝড় মিডিয়াতে ওঠেনি। এর পেছেনে প্রধান কারণ হল ম্যান সিটিকে নিয়ে ইউরোপীয় পরিমন্ডলে পেপ এর সাফল্যের ঘাটতি। মোটের উপর দেখলেও, চ্যাম্পিয়নস লীগে পেপ গার্দিওলার সাফল্য ততটাও গর্ব করার মত নয়। প্রতিযোগিতাটিতে তিনি জয়ী হতে পেরেছেন মাত্র দুইবার, এবং সেই দুইবারই তিনি সেই কীর্তিটি গড়েছেন বার্সেলোনাকে নিয়ে।
বার্সেলোনার হয়ে গার্দিওলার জেতা দুইটি চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা এসেছিল পর্যায়ক্রমে ২০০৯ এবং ২০১১ সালে। এরপর থেকে ১১ বছর কেটে গিয়েছে, কিন্তু সেই শিরোপাটির স্বাদ আর তিনি পাননি, কারণ বায়ার্ন মিউনিখ এবং ম্যানচেস্টার সিটিকে নিয়ে তার করা প্রত্যেকটি গুলিই ছিল ফাঁকা গুলি। ২০১১ সালে বার্সেলোনার হয়ে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপাটি জেতার পর থেকে অবশ্য তিনি সেটি আবার জেতার কাছাকাছি যেতে পেরেছেন, তবে শেষ হাসি আর হাসতে পারেননি। সর্বশেষ তিনি প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে খেলেছেন ২০২১ সালে, যেখানে তার দল ম্যান সিটি আরেক ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি’র কাছে ১-০ গোলে হেরে যায়।
ম্যানচেস্টার সিটিতে পেপ গার্দিওলা এখন পর্যন্ত কাটিয়েছেন ৬টি সাফল্যমণ্ডিত বছর, যা কি না যেকোন দলে তার কাটানো সবচেয়ে লম্বা সময়, কিন্তু এই সময়কালে তিনি যে সাফল্যটি এতিহাদ স্টেডিয়ামে এনে দিতে পারেননি তা হল চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপাটি। তার দিকে আরো বেশি সমালোচনার তোপ ছোঁড়ার কারণ হল তার নিকট সবসময়ই ছিল খরচ করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ, কিন্ত ইউরোপের বেশির ভাগ দলের চেয়ে বেশি আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি বার বার সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে অক্ষম হয়েছেন।
উপরের সম্পূর্ণ আলোচনার ভিত্তিতে সবার মনে এখন শুধু একটি প্রশ্নই জাগার কথাঃ সাত সাতটি বারের মত যদি সেই লক্ষ্যটি অর্জনে পেপ গার্দিওলা ব্যর্থ হোন, তাহলে কি আগামী মৌসুমের শেষে তাকে বিদায় জানানোই তাদের উচিৎ হবে? আসুন, ব্যাপারটি আরেকটু খতিয়ে দেখা যাক।
লক্ষ্যের কাছাকাছি গেলেও শিরোপাটি অধরাই থেকে গিয়েছে ম্যান সিটি’র জন্য (City have gone close, but not close enough)
এটি বিষ্ময়কর হলেও সত্যি যে, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যেসকল দলের দায়িত্বে পেপ গার্দিওলা ছিলেন, সেসকল দলই মৌসুমের শুরুতে চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতার জন্য ফেভারিট হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। এই স্প্যানিয়ার্ড যদিও স্পেন, জার্মানি ও ইংল্যান্ডের ঘরোয়া লীগগুলিতে বাজিমাত করতে সক্ষম হয়েছেন, কিন্তু বেশির ভাগ বায়ার্ন ও সিটি সমর্থকদের মতেই তার ট্যাক্টিক্যাল মস্তিষ্ক সবসময় চ্যাম্পিয়নস লীগের বড় ম্যাচগুলির আগে এক ধরণের অতিবুদ্ধিতার প্রমাণ দেয়।
ম্যানচেস্টার সিটি’র জন্য হৃদয় ভাঙার কাহিনীটি আসলেই অনেক মর্মান্তিক। এমনকি, ২০২০ সাল পর্যন্ত ম্যান সিটি চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যায় পার করতে পেরেছিল না। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অধিকাংশ মৌসুমেই তারা প্রতিযোগিতাটির রাউন্ড অব ১৬ পর্যায় থেকেই বিদায় নেয়।
২০২১ সালে সেই হৃদয় ভাঙার ব্যথা আরো কয়েকগুণে বেড়ে যায়, যখন তারা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে উঠেও আরেক ইংলিশ দল চেলসি’র কাছে হেরে যায়। স্বপ্ন চূর্ণ হলে কেমন লাগে তা সেদিন ডি ব্রুয়না বা জিনচেঙ্কোদের চেহারার দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছিল। সেবারের সেই পরাজয়ের পর থেকেই সবাই বলাবলি শুরু করে যে, হয়তো বড় মাপের ইউরোপীয় ম্যাচগুলির পূর্বে গার্দিওলা একটু হলেও অতিবুদ্ধিতার পরিচয়ই দেন, এবং তার প্রথম একাদশ নির্বাচন বা সম্পূর্ণ ট্যাকটিক্স নির্বাচনে কিছুটা ভুল করে বসেন। তবে, ২০২২ সালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এক স্মরণীয় সেমি ফাইনালে উপরের কোন কারণই দর্শানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি, কারণ সেক্ষেত্রে গার্দিওলা এবং ম্যান সিটি’র জন্য ভাগ্যই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রিমিয়ার লীগের অবিসংবাদিত শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটি দল সেদিন খুবই অপ্রত্যাশিত একটি ভঙিমায় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লস ব্লাঙ্কোস এর নিকট হেরে যায়। রিয়াল মাদ্রিদ সেই ম্যাচটির অতিরিক্ত সময়ে ২টি গোল করে সমতা আনে, এবং খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইমে, যেখানে করিম বেঞ্জেমা’র করা পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি পেয়ে যায় লস ব্লাঙ্কোস। ২য় লেগটিতে রিয়াল ৩-১ গোলে জিতে যায়, এবং দুই লেগ মিলিয়ে তারা পুরো ম্যাচটিই জিতে নেয় ৬-৫ গোলের ব্যবধানে। এর ফলে তারা পৌঁছে যায় চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে, যেখানে তারা পরবর্তীতে মুখোমুখি হয় লিভারপুলের। পেছনে পরে থাকে শুধু ম্যান সিটি’র ধ্বংসাবশেষ।
সিটি’র সমর্থকদের জন্য এর চেয়ে শোকের বোধ হয় আর কিছুই হতে পারতো না। এত কাছে গিয়েও পর পর দুই বছর শোকাহত হবার পর অনেকেই তাই মনে করছেন যে, পেপ গার্দিওলা হয়তো লিওনেল মেসিকে ছাড়া কখনোই চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন না।
ম্যানচেস্টার সিটিকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা জেতা সম্পর্কে পেপ গার্দিওলা কি বলেছেন? (What has Guardiola said about winning the Champions League title with Manchester City?)
আম জনতার চোখে পেপ গার্দিওলাকে ম্যানচেস্টার সিটির বোর্ড শুধুমাত্র একটি উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই নিয়োগ দিয়েছিল, এবং তা হল — চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জয়। তবে এই ৫১ বছর বয়সী তারকা কোচ ২০২০ সালে প্রতিযোগিতাটির কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবার আগে কিছু আবেগঘন কথা মিডিয়াকে বলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “হ্যাঁ, আমি অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা জিততে চাই।”
“আমি এই শিরোপাটি জেতার স্বপ্নে বিভোর, এবং সেজন্যই আজ থেকে দুই সপ্তাহ পর রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হওয়াকে সামনে রেখে আমরা শীঘ্রই প্রস্তুতি শুরু করে দেব।”
“যদি আমরা তাদেরকে হারাতে না পারি, তাহলে তার পরের দিনই আমাদের চেয়ারম্যান বা স্পোর্টিং ডিরেক্টর কেউ একজন এসে আমাকে বলবে যে, ‘এটি যথেষ্ট নয়। আমাদের চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা দরকার। আপনাকে এখন আমরা চাকরিচ্যুত করব।”
এরকম মন্তব্য এমনই একজন মানুষ করতে পারেন যাকে বার বার বোঝানো হয়েছে তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এবং সেটি অর্জন না করতে পারলে তার কি পরিণাম হতে পারে সে সম্পর্কে। তবে, খুব সম্প্রতি এই স্প্যানিয়ার্ডের করা কিছু মন্তব্য অবশ্য তার করা পূর্বের ঐসব মন্তব্যের বিরোধীতাই করছে, যেখানে তিনি পূর্বের মন্তব্যগুলি থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছেন এবং বলেছেন যে, এতিহাদ স্টেডিয়ামে শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা নিয়ে আসার জন্যই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
গত মৌসুমের শেষের দিকে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া তার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “গত মৌসুমে আমরা চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা ঘরে আনতে অক্ষম হয়েছি। মোট ১৩টি খেলা ছিল। তার মধ্যে আমরা জিতেছিলাম ১১টিতে, একটিতে হেরেছিলাম, এবং একটিতে করেছিলাম ড্র।”
“এমন রেকর্ডের পরেও যদি আমরা গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা না জিতে থাকি, তাহলে কি আপনি বলবেন যে আমাদের চ্যাম্পিয়নস লীগ ক্যাম্পেইনটি খুবই খারাপ ছিল? একদমই না। এর পরের কথাই ধরুন। আমরা এই মৌসুমেও চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমি ফাইনালে উঠতে পেরেছি।”
“আমরা অবশ্যই চ্যাম্পিয়নস লীগের এই অধরা শিরোপাটি জিততে চাই। কিন্তু, আপনি যদি বলেন যে আমাকে নিয়োগ করার সময় তারা আমাকে বলেছিল যে চ্যাম্পিয়নস লীগ জিততেই হবে, তাহলে আপনি সম্পূর্ণরূপে ভুল। তারা আমাকে প্রিমিয়ার লীগ জেতার কথাও বলেনি তখন, কারণ তারা জানেন যে প্রতিটা শিরোপাই আমার জন্য কতটা মাইনে রাখে!”
তবে, বাস্তবতা লক্ষ্য করলে আমরা এ ব্যাপারে একমত হতে পারি যে, পেপ গার্দিওলা হয়তো এমন মন্তব্য করছেন শুধুমাত্র তার দায় এড়াবার জন্যই। তার এমন মন্তব্য খুব একটা যথাযোগ্য নয়, বিশেষ করে কারণ তিনি ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পূর্বেও ইতিমধ্যেই ম্যানচেস্টার সিটি দুইবার প্রিমিয়ার লীগ শিরোপাটি জিতে নিয়েছিল।
এখনি, নতুবা কখনোই নয় — গার্দিওলার জন্য সামনে বাঁচা মরার লড়াই (Now or Never – make or break for Guardiola)
ম্যানচেস্টার সিটি’র দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন খেলোয়াড় কেনা বাবদ ৯০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি, অর্থাৎ প্রায় এক বিলিয়ন ইউরোর কাছাকাছি খরচ করার পরও যদি পেপ গার্দিওলা ক্লাবটির মালিক এবং সমর্থকদেরকে অন্তত একটি চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা উপহার দিতে না পারেন, তাহলে তার কাছে দেওয়ার মত আর তেমন কোন অজুহাতই থাকবে না।
বর্তমান ট্রান্সফার উইন্ডোতে ম্যানচেস্টার সিটি’র কেনা সর্বশেষ কয়েকজন খেলোয়াড় যেমন গোলকিপার স্টেফান অর্তেগা, মিডফিল্ডার কেলভিন ফিলিপ্স, ফরোয়ার্ড জুলিয়ান আলভারেজ, এবং বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের সেরা যুবা স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ড দলে যোগ দেওয়ার পরও যদি চ্যাম্পিয়নস লীগে গার্দিওলা সাফল্য অর্জন করতে না পারেন, তাহলে আসলেই তার কোন অজুহাতই আর কাজে দিবে না। বর্তমান সময়ে নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড হাল্যান্ড এর চেয়ে শ্রেয় আক্রমণভাগের কোন খেলোয়াড় পাওয়া প্রকৃতপক্ষেই বেশ কঠিন, এবং অনেকেই মনে করছেন যে, তিনিই হলেন ম্যানচেস্টার সিটি’র চ্যাম্পিয়নস লীগ বধের সেই গুপ্ত অস্ত্র, যার অপেক্ষায় তারা এতদিন পথ চেয়ে ছিল।
ম্যানচেস্টার সিটি’র সাথে করা পেপ গার্দিওলা’র বর্তমান চুক্তির মেয়াদ আর মাত্র এক বছরই বাকি রয়েছে। এবং কেন তিনি অনেক আগেই সেই চুক্তিটির মেয়াদ বাড়িয়ে নেননি, বা শুধুমাত্র তা শেষ হওয়ার পরই আবার তা নবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা এখন বেশ স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে। এর মানে শুধু এটিই হতে পারে যে, সামনে মৌসুমের শেষে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে সাতবার চেষ্টা করার পরেও যদি চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপাটি তার জন্য অধরাই হয়ে থাকে, তাহলে সিটি কর্তৃপক্ষ চাইলেও তিনি আর ক্লাবটিতে থাকবেন না।
তবে, যদি আমরা ম্যানচেস্টার সিটি’র দিক থেকে দেখি, তাহলে হয়তো আগামী মৌসুমেও পেপ গার্দিওলা তাদেরকে তাদের বহুল প্রত্যাশিত শিরোপাটি এনে দিতে না পারলে তারা তাকে অন্তর থেকেই ধন্যবাদ জানাবেন, বিশেষ করে ম্যানচেস্টার সিটিকে ইউরোপা জুড়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রাস এ পরিণত করার জন্য, কিন্তু তাকে বিদায় জানিয়ে এমন একজন ম্যানেজারকে নিয়োগ দিবেন যিনি সাম্প্রতিক সময়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ জিতেছেন এবং ম্যান সিটি’র হয়ে আবারও তা জেতার ক্ষমতা রাখেন।
জিনেদিন জিদানের মত একজন চ্যাম্পিয়নস লীগ বিশেষজ্ঞ বর্তমানে বেকার রয়েছেন, যদিও অনেকেই মনে করেন যে তিনি ফ্রান্স জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। তবে, এমন সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না যে তিনি অদূর ভবিষ্যতে ম্যানচেস্টার সিটি’র মত একটি অসাধারণ ক্লাবে যোগ দিতে রাজি হবেন না, বিশেষ করে যদি সেখানে অনেক বড় অঙ্কের টাকাও জড়িত থাকে।