পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ভালো খেলোয়াড়দের জন্যও প্রিমিয়ার লীগ হল একটি স্বপ্নের গন্তব্যস্থল। এই লীগটির ক্লাবগুলির যে পরিমাণ অর্থনৈতিক সক্ষমতা রয়েছে, এবং যত বড় বড় স্পন্সরশিপ ডিল তারা হাতিয়ে নেয়, তাতে করে ট্রান্সফার মার্কেটে খরচ করার জন্য তাদের নিকট অনেক অর্থ চলে আসে। তবে, আজকাল যেমন অঢেল টাকা ব্যয় হচ্ছে খেলোয়াড়দের পেছনে, এর মধ্যেও এমন অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন যারা তাদের পেছনে খরচ করা টাকার তুলনায় তাদের ক্লাবকে অনেক বেশি কিছুই উপহার দিতে পেরেছে।
কোন খেলোয়াড়ের পেছনে যখন বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করে কোন ক্লাব, তখন সেই খেলোয়াড়ের উপর সেই ক্লাবসহ সকলেরই প্রত্যাশা বেড়ে যায়। যেসকল খেলোয়াড়দেরকে বহু মূল্য দিয়ে কেনা হয়, তাদেরকে বলা হয় মার্কি সাইনিং, এবং এসকল খেলোয়াড়দেরকে কেন্দ্র করেই সাধারণত একেকটি দল গঠন করা হয়ে থাকে। তবে, এটিও উল্লেখ্য যে, বেশি দাম দিয়ে খেলোয়াড় কিনলেই যে সফলতা নিশ্চিত, এমনটিও কিন্তু নয়। বড় মূল্যের একটি চাপ সেই খেলোয়াড়ের দ্বারা অবশ্যই অনুভূত হয়, এবং সেই প্রত্যাশার চাপে অনেককেই ঢলে পড়তে দেখা গিয়েছে প্রিমিয়ার লীগে।
কোন খেলোয়াড়কে যদি কম মূল্য দিয়েই কেনা হয়, এবং কোন প্রকার প্রত্যাশার চাপ না থাকায় সেই খেলোয়াড়টি যদি উক্ত ক্লাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়, তাহলে সেই ক্লাবটির জন্য এর চেয়ে শ্রেয় কোন চিত্রপট কল্পনা করা আর সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। এতে খেলোয়াড়ের জন্যও লাভ বেশি, আবার ক্লাবের জন্যও। জেমি ভার্ডি এবং ম্যাক্স কিলম্যান এর মত খেলোয়াড়েরাই হলেন এমন সব খেলোয়াড়দের জন্য পথিকৃৎ, যারা ইংলিশ জাতীয় লীগের ছোট পরিসর থেকে উঠে এসে প্রিমিয়ার লীগের মত বিশাল পর্যায়ে খেলার স্বপ্ন দেখেন।
এছাড়া আমরা এরিক ক্যান্টোনা’র মত একজন কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের কথাও ধরতে পারি। তাকে কেনার সময় সকলেই ভেবেছিল যে, দাম কম হলেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে কিনে একটি বড় ভুল করতে যাচ্ছে। কিন্তু, পরবর্তীতে তিনিই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিজ হাতে বেশ কিছু শিরোপা জিতিয়েছিলেন, এবং কয়েক বছরের জন্য তিনিই ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ইংলিশ ফুটবলের পোস্টার বয়। এমন আরো অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন যারা তাদের নিজ নিজ ক্লাবের জন্য বার্গেইন বা সুলভ মূল্যের সফল সাইনিং ছিলেন। কিন্তু, এখানে যেহেতু সকলের নাম নেওয়াটা সমীচীন হবে না, তাই আমরা তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুলভ এবং সবচেয়ে সফল ১০ জন খেলোয়াড়কে বেছে নিয়েছি।
যদিও আমাদের মনে হয় যে, বার্গেইন সাইনিং এর সংজ্ঞাটি ক্লাবভেদে এবং খেলোয়াড়ভেদে বেশ পরিবর্তনশীল। দুপক্ষের মধ্যে মিলবন্ধন তৈরি করে দেয় অবশ্য খেলোয়াড়টির পারফর্মেন্স লেভেল। তাই ক্লাবের অর্থনৈতিক অবস্থা যেমনই হোক না কেন, আমরা এই তালিকাটিতে সেসকল খেলোয়াড়দেরকেই জায়গা দিয়েছি যাদেরকে খুবই সুলভ মূল্যে কেনা হয়েছিল, এবং যারা ধারাবাহিকভাবে তাদের ক্লাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গিয়েছেন।
১০. পাওলো ডি ক্যানিও (শেফিল্ড ওয়েনসডে এবং ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড) [10. Paolo Di Canio (Sheffield Wednesday and West Ham United)]
ইতালিয়ান এই কিংবদন্তি ফুটবলারের পরিচয় দ্বিতীয়বার দিতে হয় না। তার নামটিই তার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা। ইংলিশ ফুটবলে তার প্রথম গন্তব্যস্থল ছিল শেফিল্ড ওয়েনসডে নামক একটি ক্লাব, যেখানে পল অ্যালকক নামক একজন রেফারির সাথে হাতাহাতি করার ঘটনা ছাড়া তিনি আর তেমন কিছু করেই খবরের শিরোনাম হতে পারেননি।
এরপর ১৯৯৯ সালে তিনি ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডে পাড়ি জমান, কেবলমাত্র ১.৬ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। ইতালিয়ান এই জাদুকর খুব সহজেই এবং অতি কম সময়ের মধ্যেই ক্লাবটি মানিয়ে নেন এবং তার নতুন নিয়োগকর্তাদের মন জয় করে নেন। খুবই স্মরণীয় এবং অন্যরকম সব গোল করে তিনি সকল হ্যামার্স সমর্থকদের হৃদয়েও স্থায়ীভাবে জায়গা করে নেন।
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের হয়ে ডি ক্যানিও ১৪১টি ম্যাচ খেলে সব ধরণের প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৫১টি গোল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এএফসি উইম্বলডন এর বিরুদ্ধে তার করা অসাধারণ ভলি গোলটি এখনও সকল ফুটবল প্রেমীদের চোখে ভাসে। কোন জাদুর মাধ্যমে তিনি বলটিকে সেদিন মেরেছিলেন এবং জালে জড়িয়েছিলেন, তা আজীবন একটি রহস্যই থেকে যাবে। তবে যাই হোক, এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই যে, তিনি হলেন ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে খেলতে নামা সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন।
৯. এন্ডি রবার্টসন (হাল সিটি এবং লিভারপুল) [9. Andy Robertson (Hull City and Liverpool)]
এই স্কটিশ ইন্টারন্যাশনাল খেলোয়াড় অধিকতর পরিচিত তার গতিশীলতা, সুন্দর ড্রিব্লিং ও মুভমেন্ট, এবং ডি বক্সের মধ্যে অসাধারণ সব ক্রস দেওয়ার দক্ষতার জন্য। ২০১৭ সালে লিভারপুল তাকে হাল সিটি থেকে ৮ মিলিয়ন পাউন্ড এর বিনিময়ে দলে ভেড়ায়, এবং সে সময়ে বেশির ভাগ ফুটবল বোদ্ধা ও সমর্থকদেরই তার উপর তেমন কোন প্রত্যাশা ছিল না। তবে, এই স্কটিশ খেলোয়াড়টি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সেখান থেকে আজ অনেক দূর এসেছেন, এবং লিভারপুলের মত কালজয়ী একটি দলের জন্য তিনি এখন একজন অপরিহার্য খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন। তার ট্রফি ক্যাবিনেটে রয়েছে কয়েকটি ঘরোয়া কাপ শিরোপা, একটি চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা, এবং একটি প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি কতটা পারদর্শী একজন খেলোয়াড়।
এন্ডি রবার্টসন এবং ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নোল্ড লিভারপুলের দু’পাশের উইং দিয়ে তাদের পারদর্শীতার মাধ্যমে অনেক আক্রমণের জন্ম দেন, এবং তাদের সুদূরপ্রসারী ক্রসগুলির উপর ভর করেই লিভারপুলের আক্রমণভাগ অধিকতর সক্রিয় হয়ে উঠে থাকে। এটি এখন ভাবতেও অবাক লাগে যে, এই দুই হীরার টুকরাকে লিভারপুল কিনেছিল মাত্র সম্মিলিত ৮ মিলিয়ন পাউন্ড এর বিনিময়ে।
৮. লুকাস রাদেবে (লিডস ইউনাইটেড) [8. Lucas Radebe (Leeds United)]
যখন লুকাস রাদেবে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছিলেন, তখন তার উপর কারো প্রত্যাশা রাখা তো দূরের কথা, তাকে খুব বেশি কেউ চিনতোও না। তাকে লিডস ইউনাইটেড ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকান জায়ান্ট ক্লাব কায়জার চিফস থেকে কিনেছিল।
লিডস ইউনাইটেড প্রথমে এই খেলোয়াড়টিকে কিনতেও চায়নি। তবে কায়জার চিফস তাদের আরেক দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড় ফিল মাসিংগার সাথে একই ডিলে ২৫০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে রাদেবেকেও পাঠিয়ে দেয়। রাদেবেকে দলে নেওয়ার মূল কারণই ছিল মাসিংগাকে দলটিতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য যথাযথ সময় প্রদান করা, এবং সেই পর্যন্ত রাদেবেকে খেলানো।
যদিও লিডস ইউনাইটেডে তার কাটানো ১১টি বছরের মধ্যে বেশ কিছু দীর্ঘকালীন ইঞ্জুরি ছিল, তবুও তিনি তার গতিশীল ও স্কিলফুল খেলার মাধ্যমে লিডস সমর্থকদের মন জয় করেছিলেন, এবং ক্লাবটিতে একজন কিংবদন্তি রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
৭. রিয়াদ মাহরেজ (লেস্টার সিটি) [7. Riyad Mahrez (Leicester City)]
আলজেরিয়ান এই সুপারস্টার বর্তমানে পেপ গার্দিওলা’র অধীনে প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি’র হয়ে ইউরোপ কাঁপাচ্ছেন। কিন্তু, তার সুপারস্টার হয়ে ওঠার পেছনের কাহিণীটি বেশ চমকপ্রদ এবং অনুপ্রেরণায় ভরা। আলজেরিয়ান স্বর্ণবালক হিসেবে পরিচিত মাহরেজকে লেস্টার সিটি মাত্র ৫০০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে কিনেছিল ফ্রান্সের দ্বিতীয় বিভাগের অখ্যাত ক্লাব লা হাভ্র থেকে।
শীঘ্রই তিন লেস্টারের জন্য একজন বার্গেইন সাইনিং হিসেবে ফুটে ওঠেন, এবং জেমি ভার্ডির সাথে তার অসাধারণ জুটির উপর ভর করেই লেস্টার সিটি ২০১৬ সালে তাদের ইতিহাসের সর্বপ্রথম প্রিমিয়ার লীগ শিরোপাটি জিতে নেয়।
৬. রবিন ভ্যান পার্সি (আর্সেনাল) [6. Robin Van Persie (Arsenal)]
ফ্লায়িং ডাচম্যান খ্যাত এই সুপারস্টারকে আর্সেনাল ২০০৪ সালে কিনেছিল ডাচ ক্লাব ফেয়ানুর্দ থেকে, তাও আবার মাত্র ২.৭৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। সবাই ভেবেছিল এই যুবা স্ট্রাইকার প্রিমিয়ার লীগের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় নিবেন। কিন্তু, সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে তিনি তার উপর করা প্রত্যাশার বাঁধ ভেঙে দেন, এবং খুব তাড়াতাড়িই নিজেকে প্রিমিয়ার লীগের সেরা স্ট্রাইকারদের কাতারে দাঁড়া করান। এমিরেটস স্টেডিয়ামে তার খ্যাতি মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আর্সেনালের হয়ে ২৭৮টি ম্যাচ খেলে সর্বমোট ১৩২টি গোল করতে সক্ষম হোন। তারপর তিনি ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগদান করে একটি প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা অর্জন করতেও সক্ষম হোন।
৫. কোলো টোরে (আর্সেনাল) [5. Kolo Toure (Arsenal)]
আইভোরিয়ান এই ডিফেন্ডার প্রিমিয়ার লীগে একটি দীর্ঘ ও সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ার অতিবাহিত করেন। তিনি একটি নয়, বরং তিন তিনটি বড় ক্লাবে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন, যারা হল লিভারপুল, আর্সেনাল, এবং ম্যান সিটি। তবে, তার এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় হাত যার, তিনি হলেন সাবেক আর্সেনাল হেড কোচ, আর্সেন ওয়েংগার, যিনি কি না কোলো টোরেকে এএসিসি মিমোসাস নামক একটি অখ্যাত দল থেকে মাত্র ১৫০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে ইংল্যান্ডে এনেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি যা যা সাফল্য অর্জন করেছেন, সেগুলি আমলে নিলে অবশ্যই মানতে হবে যে তিনি একজন সফল বার্গেইন সাইনিং ছিলেন।
৪. শেমাস কোলম্যান (এভারটন) [4. Seamus Coleman (Everton)]
যেহেতু এই আইরিশ ফুল ব্যাক তার ক্লাবের হয়ে কখনোই কোন শিরোপা জয় করতে সক্ষম হোননি, তাই হয়তো অনেকের জন্যই এই তালিকাটিতে তার নাম আশ্চর্যের উদ্রেক করবে। কিন্তু, ২০০৯ সালে এই আইরিশম্যানকে কেনার পর থেকেই তিনি এভারটনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনে পরিণত হোন। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, তাকে টফিস’রা স্লিগো রোভার্স নামক একটি আইরিশ দল থেকে কিনেছিল মাত্র ৬০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে। তিনি এখনো প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষ রাইট ব্যাকদের মধ্যে অন্যতম। এভারটনের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪০টি ম্যাচ খেলে তিনি ২৬টি গোলও করতে সক্ষম হয়েছেন।
৩. পিটার স্মাইকেল (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড) [3. Peter Schmeichel (Manchester United)]
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মত বিশাল একটি ক্লাবে এই ড্যানিশ গোলকিপারের আগমণ প্রাথমিকভাবে ক্লাবটির সমর্থকদের ও তৎকালীন ইউনাইটেড খেলোয়াড়দেরকে খুব একটা খুশি করতে পেরেছিল না। কিন্তু, খুব শীঘ্রই তিনি সবার মন জয় করে নেন সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে অনবদ্য সব পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে।
ড্যানিশ ক্লাব ব্রন্ডবি থেকে তাকে রেড ডেভিলরা কিনেছিল মাত্র ৫০০,০০০ পাউন্ডের বদৌলতে। তিনি ক্লাবে প্রবেশ করার সময় কোন প্রকার করতালির আওয়াজ না পেলেও, ক্লাবটি তিনি ছেড়েছেন একজন রাজার বেশেই। অসংখ্য প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জায়গা করে নিয়েছে তার ব্যক্তিগত ট্রফি ক্যাবিনেটে। তাছাড়া, ১৯৯৯ সালের বিখ্যাত ট্রেবল জয়ী ইউনাইটেড দলেরও তিনি ছিলেন একজন অপরিহার্য অংশ।
২. এরিক ক্যান্টোনা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড) [2. Eric Cantona (Manchester United)]
রহস্যময় এবং জাদুকরী এক ফুটবলার, এরিক ক্যান্টোনাকে ব্যতীত এই তালিকাটি কখনোই পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারে না। সবসময়ই সমালোচনার তোপে থাকা এই ফরাসি ফুটবলার তখন লিডস ইউনাইটেডে বেশ বাজে একটি সময় পার করছিলেন। খেলোয়াড় এবং ক্লাব উভয় পক্ষই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, তার জন্য অন্য কোন ক্লাব খুঁজে নেওয়ায় শ্রেয় হবে। লিডস ইউনাইটেড তখনো জানতো না যে এই সিদ্ধান্তের দরুণ তারা কত বড় একটি ভুল করতে যাচ্ছে।
জাদুকরী গুণসম্পন্ন এই খেলোয়াড় লিডস থেকে তৎকালীন প্রিমিয়ার লীগ বিগ বয়েজ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পাড়ি জমান, কেবলমাত্র ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। তার এই দলবদলের জের ধরেই ৯০’এর দশকজুড়ে প্রিমিয়ার লীগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রাজত্বের শুরু হয়। তিনি দলটির হয়ে অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্তেরও জন্ম দিয়েছেন, যা রেড ডেভিল সমর্থকদের স্মৃতিতে এখনো তর্তাজা।
১. জেমি ভার্ডি (লেস্টার সিটি) [1. Jamie Vardy (Leicester City)]
তালিকার শীর্ষ নাম হিসেবে হয়তো এর চেয়ে সহজ বাছাই আর কেউ হতেই পারেন না। দূর্দান্ত এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড তার অসামান্য দক্ষতা ও ধৈর্য্যের বদৌলতে ইংলিশ ফুটবলের পাকস্থলী থেকে উঠে এসে আজ মাথায় অবস্থান করছেন। ফ্লিটউড টাউন নামক একটি দল থেকে লেস্টার সিটি তাকে সাইন করে মাত্র ১ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। লেস্টারের সেই একটি মুভ আজ দলটিকে শূন্য থেকে আকাশে পৌছিয়েছে।
প্রিমিয়ার লীগ অর্থাৎ ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ চূড়ায় এসে তিনি লেস্টারের হয়ে একটি অপ্রত্যাশিত প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জেতা ছাড়াও একাধিকবার লীগটির গোল্ডেন বুট পুরষ্কারও জিতেছেন, যা গোলের সামনে তার অসাধারণ দক্ষতারই পরিচায়ক। লেস্টার সিটি’র হয়ে তিনি আজ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪৪টি গোল করেছেন, যার মধ্য থেকে ১১৫টিই এসেছে ক্লাবটি প্রিমিয়ার লীগে প্রমোশন অর্জন করার পর থেকে। তার গল্পটি প্রমাণ করে যে, আপনি আপনার জীবনে যতটাই নিচে নেমে যান না কেন, কঠোর পরিশ্রমের সুন্দর ফুল আপনি কখনো না কখনো পাবেনই। বিশ্বব্যাপী লাখো ফুটবলারের অনুপ্রেরণার নাম তাই এখন জেমি ভার্ডি।