এখনও যখন আমরা সবাই পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ও উত্তেজনাপূর্ণ লীগটির পুনঃআগমণের জন্য সাদর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, ঠিক তখনই আমরা এই নিবন্ধটি নিয়ে হাজির হয়েছি, যেখানে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব প্রিমিয়ার লীগের নিম্নভাগের দলগুলিকে নিয়ে। প্রিমিয়ার লীগের রেলিগেশন লড়াইটিকেই ধরা হয় ইংলিশ ফুটবলের টপ টিয়ারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই, যা প্রতি বছরই দর্শকদের মন মাতায়, এবং অনেকের মন খারাপের কারণও হয়।
গত মৌসুমে আমরা দেখেছি যে বার্নলি, ওয়াটফোর্ড এবং নরউইচ সিটি প্রিমিয়ার লীগ থেকে রেলিগেটেড হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় ফিরে গিয়েছে। তবে গত মৌসুমে রেলিগেশনের সেই লড়াইটি মোটেও একঘেয়ে বা একমুখী ছিল না, বরং লিডস ইউনাইটেড, সাউথ্যাম্পটন, এবং এমনকি এভারটনের মত বড় ক্লাবও রেলুগেশন থেকে বাঁচার সেই লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল। এখানে অবশ্যই এভারটনের নামটির দিকেই সবার নজর বেশি পড়বে, কারণ এসকল দলের মধ্যে তারাই সবচেয়ে ধনী ও বড় মাপের দল। তবে, তারা সেবার একদম ঠিক সময়ে ফর্মে ফিরে আসে, এবং নিরাপদে মৌসুমটি শেষ করে।
অধিকন্তু, আপনি যদি ভেবে থাকেন যে গত মৌসুমটি রেলিগেশনের নাটকীয়তায় ভরপুর ছিল, তাহলে আমরা আপনাকে পরামর্শ দিব আপনার হৃদয়টি এখনি একবার পরীক্ষা করিয়ে নিতে, কারণ আমাদের ধারণা ২০২২-২৩ মৌসুমটি হতে যাচ্ছে আরও বেশি নাটকীয়। বিশেষ করে চলমান ট্রান্সফার উইন্ডোতে সকল রেলিগেশন প্রত্যাশী ক্লাবের কার্যক্রম দেখে তো অন্তত তাই মনে হচ্ছে। কারো জন্য রাজ্যের খুশি, আবার কারো জন্য হৃদয় ভাঙার কান্না — এবারের মৌসুম এর রেলিগেশন ব্যাটেল থেকেও আপনারা এ সবকিছুই আশা করতে পারেন।
যেখানে সদ্য প্রমোটেড দুই দল এএফসি বোর্নমাউথ এবং নটিংহ্যাম ফরেস্ট এবার রেলিগেটেড হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি ফেভারিট, সেখানেই আবার অনেকে মনে করেন যে, লিডস ইউনাইটেড ও সাউথ্যাম্পটনের মত দলগুলোর জন্যও তাদের প্রিমিয়ার লীগ স্ট্যাটাস হুমকির মুখে রয়েছে। এ ব্যাপারে বলতে গেলে উল্লেখ না করলেই নয় যে, লিডস ইউনাইটেড এমন একটি দল যাদেরকে আক্রমণ করার সময় খুবই সচল ও গতিশীল একটি দল হিসেবে দেখা গেলেও, ডিফেন্স করার সময় তাদের দূর্বলতা সহজেই প্রকাশ পেয়ে যায়। তাদের ভঙ্গুর ডিফেন্সই তাদের পতনের কারণ হতে পারে। এছাড়া তারা তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুইজন খেলোয়াড় কেলভিন ফিলিপ্স এবং রাফিনহাকে যথাক্রমে ম্যানচেস্টার সিটি ও বার্সেলোনার কাছে হারিয়েছেন। তাই, এবার রেলিগেশন থেকে বাঁচতে হলে তাদেরকে একরকম অসম্ভবকেই সম্ভব করতে হবে।
আরেক দিকে তাকালে, সাউথ্যাম্পটন বেশ কিছু বছর ধরেই রেলিগেটেড হবে হবে করেও হচ্ছে না। তাদের বার বার এমন বেঁচে যাওয়ার কারণে কোচ রাল্ফ হ্যাসেনহুটলকে বহু কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়াও আরেকটি ব্যাপারকে সেইন্টস সমর্থকদের প্রচুর ক্রেডিট দেওয়া উচিৎ, এবং সেটি হল ‘ভাগ্য’। গত বছরের গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে একদমই নিষ্ক্রিয় থাকার ফল হ্যাসেনহুটলকে প্রায় দিতেই হয়েছিল, নিজেদের প্রিমিয়ার লীগ স্ট্যাটাস হারানোর মধ্য দিয়ে, কিন্তু তারা একটুর জন্য বেঁচে যায়। এখন শুধু এটিই দেখার বাঁকি যে, জেমস ওয়ার্ড-প্রাউস এবং তার সতীর্থরা এবারের মৌসুমে আবারো ভাগ্যের সাথ পায় কি না।
আরেকটি পাক্কা রেলিগেশন প্রার্থী হল পশ্চিম লন্ডনের ক্লাব ফুলহ্যাম। সাদা কালো জার্সিধারী এই দলটি বেশ কিছু বছর ধরেই প্রিমিয়ার লীগে যাওয়া আসার মধ্যে রয়েছে, যার কারণে তাদেরকে ডাকা হয় ‘দ্য ইয়ো ইয়ো টিম অব দ্য প্রিমিয়ার লীগ’ বলে। তবে, গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় তাদের অসাধারণ ক্রীড়ানৈপূণ্য দেখে মনে হয়েছে যে, এবার তারা প্রিমিয়ার লীগে দীর্ঘকাল যাবৎ অবস্থান করার জন্য বধ্যপরিকর।
তবে আর দেরি নয়। চলুন, দেখে নেওয়া যাক কোন ৭টি দল প্রিমিয়ার লীগের আসন্ন মৌসুমের রেলিগেশন লড়াইয়ে সামিল থাকতে পারে।
১. এএফসি বোর্নমাউথ (1. AFC Bournemouth)
যদিও চেরিস খ্যাত এএফসি বোর্নমাউথ একটি সাজানো গুছানো ক্লাব, যারা খুবই দর্শণীয় ফুটবলও খেলে থাকে, তবুও আমরা নিশ্চিত যে বেশির ভাগ ফুটবল প্রেমীর জন্যই এটি মোটেও আশ্চর্যজনক নয় যে তারা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গত মৌসুমে স্কট পার্কারের এই লাল-কালো বাহিণী খুবই সুন্দর ফুটবল খেলে চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে প্রিমিয়ার লীগে প্রবেশ করে। সেবার তারা প্রতিযোগিতাটিতে শুধুমাত্র ফুলহ্যামেরই পেছনে ছিল। এর আগে অবশ্য বেশ কিছু মৌসুম ধরে বোর্নমাউথ প্রিমিয়ার লীগেই অবস্থান করেছিল। তব্ব, তারা দুই মৌসুম আগে রেলিগেটেড হওয়ার পর থেকে প্রিমিয়ার লীগ বেশ খানিকটা বদলে গিয়েছে। এখন দেখার বিষয় একটিই, এবং সেটি হল যে চেরিস’রা কিভাবে সেই পরিবর্তনটির সাথে মানিয়ে নিতে পারে বা আদৌ তারা তা করতে পারে কি না।
স্কট পার্কার, যিনি কি না এর আগেও প্রিমিয়ার লীগে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন (ফুলহ্যাম), অবশ্যই জানেন যে এই লীগটিতে টিকে থাকা মোটেও ছেলেখেলা নয়। গতবার ফুলহ্যামের হয়ে তার করা সকল ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তিনি চেষ্টা করবেন তার বর্তমান ক্লাব বোর্নমাউথকে রেলিগেশনের ছোবল থেকে বাঁচাতে।
বুকমেকারদের মতে, চেরিস’রাই এবার প্রিমিয়ার লীগ থেকে রেলিগেটেড হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে হট ফেভারিট দল। আর যাই বলুন না কেন, তারা এবার এই বাঁচা মরার লড়াইয়ে লিপ্ত থাকবেই থাকবে।
২. নটিংহ্যাম ফরেস্ট (2. Nottingham Forest)
ভাবতেই অবাক লাগে না যে প্রথম ইংলিশ ক্লাব হিসেবে কোন ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি কখনো প্রিমিয়ার লীগে খেলেনি? হ্যাঁ, আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লীগের গোড়াপত্তনের পর থেকে একবারও লীগটিতে খেলার সুযোগ হয়নি সদ্য প্রমোটেড ক্লাব নটিংহ্যাম ফরেস্ট এর। তারা গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে অফ এর মধ্য দিয়ে প্রিমিয়ার লীগে প্রবেশ করে, যেখানে তারা ফাইনাল ম্যাচে হাডারসফিল্ড টাউনকে ১-০ গোলে হারাতে সক্ষম হয়।
যদিও তারা এবারের গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে জেসি লিংগার্ড ও তাইয়ো আওয়োনিয়ি’র মত বেশ কিছু ভালো সাইনিং সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে, তবুও অনেকের মতেই তারা এমন কোন দল গঠন করতে সক্ষম হয়নি, যা প্রিমিয়ার লীগে টিকে থাকার সামর্থ্য রাখে। স্টিভ কুপারের জাদু প্রিমিয়ার লীগে কতটুকু কার্যকর হয় সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।
৩. ফুলহ্যাম (3. Fulham)
পশ্চিম লন্ডনের এই অভিজাত ক্লাবটি আরো একটি বার চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে প্রিমিয়ার লীগে ফিরে এসেছে, এবং এবার তাদেরকে দেখে আরো বেশি সংগঠিত এবং প্রস্তুত মনে হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু নামীদামী খেলোয়াড় দলে থাকায়, অনেকেই মনে করছেন যে তারা এবার তাদের প্রিমিয়ার লীগ স্ট্যাটাসটি ধরে রাখতে সক্ষম হবে। ক্রেভেন কটেজ এর এই ক্লাবটি এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোতে বেশ কিছু দর্শনীয় সাইনিং সম্পন্ন করতেও সক্ষম হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মিডফিল্ডার আন্দ্রেয়াস পেরেরা, এবং সাবেক আর্সেনাল ও বরুশিয়া মুনচেনগ্লাদবাখ গোলকিপার বার্নড লেনো।
গত মৌসুমে ব্রাজিলিয়ান লীগে দূর্দান্ত ফর্মে থাকা আন্দ্রেয়াস পেরেরাকে দলে আনতে ফুলহ্যামকে খরচ করতে হয়েছে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড, যা তার দক্ষতা অনুসারে মোটেও খুব বেশি নয়। তিনি এমন একটি দলে যোগ দিয়েছেন, যার মধ্যমণি হলেন সার্বিয়ান স্ট্রাইকার আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ, যিনি কি না গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় ৪৪টি ম্যাচ খেলে সর্বমোট ৪৩টি গোল করেছিলেন। ফুলহ্যামকে প্রিমিয়ার লীগে টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে এই দুইজনই হবেন ক্লাবটির সবচেয়ে মোক্ষম দুইটি হাতিয়ার।
৪. লিডস ইউনাইটেড (4. Leeds United)
আমেরিকান কোচ জেসি মার্শের অধীনে থাকা লিডস ইউনাইটেড এবার আবারো এমন একটি মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে যেখানে তাদের রেলিগেশন লড়াইয়ের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বিশেষ করে গত মৌসুমে তাদের পারফর্মেন্স দেখার পর বেশির ভাগ বুকমেকার এবং ফুটবল বোদ্ধারা তেমনটিই মনে করছেন। তারা আরও মনে করেন যে, লিডস এর বর্তমান দলটি চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার জন্যই অধিক উপযোগী বা মানানসই। ইয়োর্কশায়ারে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটির জন্য ২০২১-২২ মৌসুমটি ছিল এক কথায় ভুলে যাওয়ার মত। সেবার তারা মৌসুম শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই দীর্ঘকালীন আর্জেন্টাইন হেড কোচ মার্সেলো বিয়েলসাকে হারায়, যার পেছনেও কারণ ছিল একই — দলের বাজে পারফর্মেন্স। মার্সেলো বিয়েলসা’র সেই অদ্ভূদ কোচিং টেকনিক এখন আর দেখতে পাওয়া যাবে না। লিডস ডাগ আউটে তাকে আর হাঁটু গেড়ে বসে উপদেশ দিতেও দেখা যাবে না। মিডিয়ার সাথে তার মজার ইন্টারভিউগুলিও আর উপভোগ করা যাবে না। তার চাকরিচ্যুত হওয়ার পেছনে মূল কারণই ছিল লিডস এর বাজে ডিফেন্স, যা এখনো পর্যন্ত মোটামুটি একই অবস্থাতেই রয়েছে।
এলান্ড রোডে যেমন আক্রমণাত্মক ও আকর্ষণীয় ফুটবল খেলা হয়ে থাকে, সেটি প্রমোট করার জন্য ক্লাবটির সমর্থকদের মনে আজীবন জায়গা ধরে রাখবেন মার্সেলো বিয়েলসা। তবে, তাদের নতুন আমেরিকান কোচ জেসি মার্শও ম্যানেজিং দক্ষতার দিক দিয়ে কোন অংশেই কম যান না। তিনিও এলান্ড রোডে সুখের সময় ফিরিয়ে আনার সামর্থ্য রাখেন। তবে, যেহেতু তারা সম্প্রতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের হারিয়েছে, এবং তাদেরকে রিপ্লেস করার জন্য দলে ভিড়িয়েছে কিছু হাইলি-রেটেড আমেরিকান খেলোয়াড়দের, সেহেতু আমরা কোনভাবেই নিশ্চিত নই যে তারা আগামী মৌসুমে কতটা ভালো খেলতে সক্ষম হবে। এছাড়া, গত মৌসুমে তাদের ভয়ানক বাজে পারফর্মেন্সগুলোর স্মৃতিও এখনো আমাদের মস্তিষ্ক থেকে বিতাড়িত হয়নি। তাই, আমরা মনে করি যে, রেলিগেশন লড়াইয়ে তারা প্রথম থেকেই সামিল থাকবে।
৫. ব্রেন্টফোর্ড (5. Brentford)
ব্রেন্টফোর্ড, যাদেরকে আদর করে বিস (মৌমাছির দল) ডাকা হয়, হয়তো এই বিষয়ে খুবই মনক্ষুণ্ণ হবে যদি তারা জানতে পারে যে এই তালিকায় তাদের নামও এসেছে, কারণ গত মৌসুমে তারা এটি বার বার প্রমাণ করেছে যে, তারা প্রিমিয়ার লীগের জন্য মানানসই ও উপযোগী একটি দল। কিন্তু, বহু ফুটবল বিশারদরাই এমনটি বলেছেন যে, গত মৌসুমে ব্রেন্টফোর্ড যতটা না ভালো খেলেছে, তার চেয়ে বেশি তারা ভাগ্যের জোড়েই বেশ কিছু ম্যাচ জিতেছে। তারা ব্রেন্টফোর্ডকে আরো জানিয়ে দিয়েছেন যে, টানা তিনটি মৌসুম ধরে প্রিমিয়ার লীগে অবস্থান করতে পারলে তবেই তাদেরকে প্রিমিয়ার লীগের একটি নিরবিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া যাবে।
এছাড়াও, গত মৌসুমের শেষ ভাগে তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় যিনি ছিলেন, সেই ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনও তাদেরকে ছেড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন। তাই, দলটিতে এখন বুদ্ধিদীপ্ততার একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তারা এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোতে সেই শূন্য স্থানটির জন্য কাকে কিনতে পারে সেটিই এখন দেখার বিষয়। শোনা যাচ্ছে যে, এরিকসেন এর স্বদেশী আরেক প্লেমেকার মিকেল ড্যামসগার্ডকে স্যাম্পদোরিয়া থেকে কেনার বেশ কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ব্রেন্টফোর্ড? সেটি যদি সত্যি হয়, তাহলে এই যুবা ড্যানিশ মিডফিল্ডার কি পারবেন এরিকসেন এর জায়গা নিতে? সেটির উত্তর সময়ই বলে দিবে৷ এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই যে, ব্রেন্টফোর্ড একটি শক্তিশালী দল, এবং থমাস ফ্র্যাংক এর অধীনে তাদের মধ্যে একটি অসাধারণ ঐক্যও রয়েছে। তবে প্রিমিয়ার লীগের নত একটি কঠিন লীগে কখন কি হয়ে যাবে তার কোনই নিশ্চয়তা নেই।
৬. সাউথ্যাম্পটন (6. Southampton)
সেইন্টস’রা এই তালিকায় জায়গা করে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে গত মৌসুমে। যদিও তারা প্রিমিয়ার লীগে এখন একটি প্রতিষ্ঠিত দল, তবুও কোন বড় বা নামকরা খেলোয়াড় না কেনার কারণে এবং শুধুমাত্র যুবা খেলোয়াড়দের উপর ভরসা করার ফলে তাদের দলের এখন বেশ বেহাল অবস্থা। কেন তারা এমনটি করেন তা এখনো একটি রহস্যের বিষয়। গত কয়েক মৌসুম ধরে যদি আমরা তাদের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করি, তাহলে দেখা যাবে যে, তারা একটি ক্রমবর্ধমান নিম্নমুখী ঢালে অবস্থান করছে।
রাল্ফ হ্যাসেনহুটল নিশ্চিতরূপে একজন প্রতিভাবান ম্যানেজার, এবং জেমস ওয়ার্ড-প্রাউস ও চে এডামস এর মত অসাধারণ খেলোয়াড়েরা যকজন ফর্মে থাকেন, তখন সাউথ্যাম্পটন বেশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তবে বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় যে, কেবল তাদের দল কোণঠাসা হয়ে পড়লেই তারা ফর্মে আসেন। আমাদের মনে হয় না এমনটির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকলে সাউথ্যাম্পটন প্রিমিয়ার লীগে আর বেশিদিন টিকতে পারবে।
৭. এভারটন (7. Everton)
সম্ভবত গত মৌসুমে শিরোপার লড়াই ব্যতীত প্রিমিয়ার লীগের সবচেয়ে বড় চমকটিই ছিল এভারটনের রেলিগেটেড হওয়া থেকে বেঁচে যাওয়াটা। মার্সিসাইডের এই দলটি গত মৌসুমের অধিকাংশ জুড়ে এতটাই বাজে ফুটবল খেলেছিল, যে আপনি হুট করে তাদের খেলা দেখলে ভাবতেন যে ক্লাবটির খেলোয়াড়েরা নিশ্চয় ক্লাবের বিরুদ্ধে কোন এজেন্ডা নিয়েই মাঠে নেমেছে।
গত মৌসুমে যখন তারা কোনরকম নিজেদের নিরাপত্তাটি নিশ্চিত করতে পেরেছিল, তার পরে পুরো মার্সিসাইডই এভারটনের নীল রঙে রেঙেছিল। তবে, এখন তাদের উৎসব করার সময় ফুরিয়ে এসেছে, কারণ তাদের মনে রাখতে হবে যে, তাদের নিকট মোটেও একটি ভালো একাদশ নেই। ট্রান্সফার উইন্ডো বন্ধ হওয়ার আগে কিছু ভালো সাইনিং না করাতে পারলে এমনটির সম্ভাবনাই বেশি যে, তাদেরকে আবারো একটি রেলিগেশন লড়াইয়ে লিপ্ত হতে হবে। যুবা কোচ ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডের ঘাড়ে তাই এখন এক বিশাল বড় দায়িত্ব।