লিভারপুল

মৌসুমের প্রথম তিনটি ম্যাচে এনফিল্ডের জায়ান্টরা বেশ হড়কেছে, এবং পয়েন্টও হারিয়েছে। তাদের প্রথম ম্যাচে তারা ফুলহ্যামের বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র করে। ম্যাচটিতে ফুলহ্যামের সার্বিয়ান স্ট্রাইকার আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ জোড়া গোল করেন। লিভারপুলের পক্ষে মোহাম্মদ সালাহ্ ও ডারউইন নুনেজ সমতাসূচক গোলগুলি করেন।

এরপর তারা ক্রিস্টাল প্যালেসকে এনফিল্ডে আমন্ত্রণ জানায় এই মানসিকতা নিয়ে যে এবার তারা অবশ্যই জয়ের ধারায় ফিরবে। তবে, তাদের গুঁড়ে বালি দিয়ে প্যালেস উইংগার উইল্ফ্রিড জাহা গোল করে বসেন, আর ১০ জনের লিভারপুল লুইস ডিয়াজের সমতাসূচক গোলের উপর ভর করে একটি পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করে।

সম্প্রতি তারা স্ট্রাগলিং দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নিকট হারার পর অনেক ফুটবল বোদ্ধা ও বিশ্লেষকরাই বলেছিলেন যে লিভারপুল দলের মধ্যে বেশ কিছু শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব তাদের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে স্পষ্টভাবে, এবং সেসকল শূন্যস্থানের মধ্যে অন্যতম হল সাদিও মানে’র অনুপস্থিতি। বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়া সেই সেনেগালিজ ফরোয়ার্ডকে রিপ্লেস করা যে মোটামুটি অসম্ভবই বটে।

তবে, তাদের সর্বশেষ খেলায় তারা ঘরের মাটিতে এএফসি বোর্নমাউথকে ৯-০ গোলের ব্যবধানে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করে দিতে সক্ষম হয়েছিল, এবং সেটির ফলেই মার্সিসাইডের লাল অর্ধে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস পড়েছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও আরেকবার টের পেয়েছে যে ইয়ুর্গেন ক্লপের সৈন্যরা ঘুমিয়ে পড়েনি, বরং এখনো জেগে রয়েছে।

সেই ম্যাচটির স্কোরলাইন অনেকের জন্য বিষ্ময়কর হলেও তার চেয়েও বিষ্ময়কর ব্যাপার হল যে, সেদিনের ৯টি গোলের মধ্যে একটিও আসেনি তাদের সুপারস্টার ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ্ এর পা থেকে। লিভারপুল এমন বিশাল ব্যবধানে জেতার দিনে এই মিশরীয় জাদুকর গোল পাননি এমন খুব কম সংখ্যক বারই হয়েছে বৈকি!

সামনে লিভারপুলের জন্য অপেক্ষা করছে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ, যার নাম নিউক্যাসেল ইউনাইটেড। ম্যাগপাইদের মুখোমুখি হতে এখন লীগের যে কারোরই ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক, বিশেষ করে ম্যান সিটি’র বিরুদ্ধে তাদের পারফর্মেন্সটি দেখার পরে।

পড়ুন:  চেলসি বনাম নেকড়ে প্রিভিউ

 

নিউক্যাসেল ইউনাইটেড (Newcastle United)

ইংল্যান্ডের নিউক্যাসেল নামক ছোট্ট শহরটি সম্প্রতি অনেক নতুন কিছু দেখতে শুরু করেছে, যার মধ্যে অন্যতম হল সাফল্য, এবং সেই সাফল্যটি এই শহরবাসীর নিকট পৌঁছেছে তাদের হোম ফুটবল ক্লাব নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের রূপ নিয়ে।

এক বছর পূর্বের নিউক্যাসেল ইউনাইটেড যেমন মলিন এবং গড়পড়তা ছিল, এই নতুন যুগে এসে এডি হাও এবং তার শিষ্যরা সেই চিত্রটি পুরোপুরিভাবে পালটে দিয়েছেন।

বর্তমান প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি’র বিরুদ্ধে তাদের ৩-৩ গোলের ড্র’টিই প্রমাণ করে দেয় যে এডি হাও এর অধীনে দলটি কতটা উন্নতি সাধন করেছে। সেই উন্নতির পেছনে মূল কারণ শুধুই নতুন ও দামী খেলোয়াড়দের আগমণ নয়, বরং নতুন পুরাতনের সম্মেলন, দলের মধ্যকার একতাবদ্ধতা, এবং অসম্ভব রকমের ট্যাকটিকাল সচেতনতার কারণেই ম্যাগপাইরা আজকের পজিশনে আসতে পেরেছে।

তাদের সবশেষ ম্যাচে তারা ওলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স এর বিপক্ষে এলান সেইন্ট-ম্যাক্সিমিন এর একটি অসাধারণ শটের উপর ভর করে একটি ড্র হাসিল করে নেয়।

তবে, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে একটি ক্ষুধার্থ ও ক্ষুব্ধ লিভারপুল দল, যারা কি না সম্প্রতি রক্তপিপাসু হয়ে উঠেছে। এই ম্যাচটি তাই খুবই শ্বাসরুদ্ধকর ও উত্তেজনাপূর্ণ হতে চলেছে বলেই ধারণা করা যায়।

 

প্রেডিকশন (Prediction)

নিউক্যাসেল ইউনাইটেড গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো একটি সূচনা করেছে তাদের নতুন মৌসুমের, এবং সেটির পেছনে মূল কারণ হলেন এডি হাও৷ কিন্তু তারপরও, প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষ ২ দলের বিরুদ্ধে লড়াই করার মত দল এখনও তারা গড়ে তুলতে পারেনি, এবং মূলত সেজন্যই আমরা এই ম্যাচটিতে লিভারপুলকেই এগিয়ে রাখব।

লিভারপুল ২ – ০ নিউক্যাসেল ইউনাইটেড

১.৫ গোলের উর্ধ্বে

লিভারপুল -১.০ (এশিয়ান হ্যান্ডিক্যাপ)

Share.
Leave A Reply