প্রেডিকশন (Prediction)
লেস্টার সিটি ২ – ০ নটিংহ্যাম ফরেস্ট
২.৫ গোলের নিম্নে
লেস্টার সিটি +১.০ (এশিয়ান হ্যান্ডিক্যাপ)
গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ (Key Notes)
- এবারের প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমে লেস্টার সিটিই এমন একমাত্র দল যারা কি না এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচেও জয়লাভ করতে পারেনি (১টি ড্র, ৬টি পরাজয়)। সর্বশেষ তারা ২০০১-০২ এ মৌসুমের প্রথম চারটি হোম ম্যাচে পরাজয় বরণ করেছিল। সেবার তারা প্রিমিয়ার লীগের তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছিল, অর্থাৎ রেলিগেটেড হয়ে গিয়েছিল।
- নটিংহ্যাম ফরেস্ট তাদের সর্বশেষ চারটি প্রিমিয়ার লীগ ম্যাচের সবকটিই হেরেছে। সেই ম্যাচগুলির প্রত্যেকটিতেই তারা কমপক্ষে ২টি করে গোলও হজম করেছে। তারা সর্বশেষ ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে একই মৌসুমে পর পর ৫টি ম্যাচ হেরেছিল।
- লেস্টারের ম্যানেজার হিসেবে তার সর্বশেষ দুইটি ম্যাচেই পরাজয় বরণ করার পর (০-১ বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এবং ১-২ বনাম সাউথ্যাম্পটন), ব্রেন্ডান রজার্সের সামনে হয়তো তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে লজ্জাজনক একটি রেকর্ড অপেক্ষা করছে — পর পর তিনটি হোম ম্যাচে পরাজয়।
- এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত অন্য কোন দলই সেট পিস পরিস্থিতি থেকে (পেনাল্টি ব্যতীত) লেস্টার সিটি বা নটিংহ্যাম ফরেস্ট (উভয়ই ১৫) এর সমান গোল হজম করেনি।
ফর্ম বিবরণীঃ লেস্টার সিটি (Form Guide: Leicester City)
যদিও সাধারণত ফুটবল প্রেমীরা আন্তর্জাতিক বিরতিকে খুব একটা পছন্দ করেন না, এবার কিন্তু কিছুটা ভিন্নতা দেখা গিয়েছে, বিশেষ করে লেস্টার সিটি সমর্থকদের মধ্যে। এর পেছনে মূল কারণই হল যে, তাদের দল এখনও এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে কোন ম্যাচই জিততে পারেনি, এবং লীগ টেবিলের তলানিতেও তারাই রয়েছে। লেস্টার সিটি তাদের সর্বশেষ দুইটি ম্যাচে ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়ন এবং টটেনহ্যাম হটস্পার্স এর বিরুদ্ধে যথাক্রমে ৫-২ এবং ৬-২ গোলের লজ্জাজনক হারের শিকার হয়েছে। প্রিমিয়ার লীগ যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে ইংলিশ ফুটবলের যেকোন টিয়ারে বা যেকোন ডিভিশনে লেস্টার সিটি’র জন্য এটিই হল মৌসুমের প্রথম সাতটি ম্যাচের পর সবচেয়ে বাজে পয়েন্ট ট্যালি।
দু’পায়ের মাঝে নিজেদের লেজ গুটিয়েই তাই লেস্টার সিটি তাদের ঘরের মাঠ কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে ফিরে আসছে। এর আগে হোমে খেলা তাদের সর্বশেষ দুই ম্যাচেই তারা পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে।
এমনটিই জানা গিয়েছে যে, এমন বাজে পারফর্মেন্স ও ফলাফলের পর লেস্টার বোর্ড এখন চিন্তিত। এমনটিও শোনা যাচ্ছে যে, নটিংহ্যাম ফরেস্ট এর বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচটিতে তাদের চেয়ারম্যান মিঃ আইয়াওয়াত শ্রীভাদ্দানাপ্রাভা উপস্থিত থাকবেন। এর মানে হল ওই যে, টানা তৃতীয় হোম ম্যাচে হেরে গেলে ব্রেন্ডান রজার্স এর চাকরিটি আরো বেশি হুমকির সম্মুখীনই হবে।
ফর্ম বিবরণীঃ নটিংহ্যাম ফরেস্ট (Form Guide: Nottingham Forest)
শুধুমাত্র লেস্টার সিটি এবং তাদের বাজে পারফর্মেন্সগুলির কারণেই বর্তমানে নটিংহ্যাম ফরেস্ট প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের তলানিতে নেই। নিজেদের সর্বশেষ চারটি ম্যাচের সবকটিতেই হারার পর স্টিভ কুপারের দল এখন তাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ লেস্টারের চেয়ে মাত্র ৩ পয়েন্টেই এগিয়ে রয়েছে, অর্থাৎ লেস্টারের বদৌলতেই তারা লীগ টেবিলের তলানিতে নেই।
তারা তাদের খেলা সেই সর্বশেষ চারটি ম্যাচে সর্বমোট ১৫টি গোল হজম করেছে। এ থেকেই বোঝা যায় তাদের মূল সমস্যাটি কোথায়। এ থেকে আরো বোঝা যায় যে, এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোতে স্টিভ কুপারের করা মোট ২২টি সাইনিং এর মধ্যে প্রায় সবারই এখনো দল ও লীগটির সাথে মানিয়ে নেওয়া বাকি। এছাড়া, এটিও মনে হয়েছে যে, গত বছরের চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার সবচেয়ে ভালো রক্ষণভাগগুলির একটি (মাত্র ৪০টি গোল হজম করেছিল) এবার প্রিমিয়ার লীগে এসে কিছুটা হকচকিত হয়ে অনেক গোল হজম করছে।
এখন তারা ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে প্রথমবারের মত পর পর পাঁচটি ম্যাচ হারার হুমকির সামনে। এমতাবস্থায়, লেস্টারের মত একটি শোচনীয় পরিস্থিতিতে থাকা ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচটি যেন তাদের জন্য একটি স্বর্গীয় ইশারা হয়েই এসেছে।
লেস্টার সিটি বনাম নটিংহ্যাম ফরেস্ট সম্পর্কিত কিছু তথ্য (Leicester City Vs Nottingham Forest Game Facts)
- নটিংহ্যাম ফরেস্ট এর বিরুদ্ধে খেলা তাদের সর্বশেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র একটিতেই জয় পেয়েছে লেস্টার সিটি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিটি গ্রাউন্ডে একটি ২-২ গোলের ড্র এর পর থেকে এটিই এই দুই দলের মধ্যকার প্রথম ম্যাচ।
- নটিংহ্যাম ফরেস্ট প্রিমিয়ার লীগে লেস্টার সিটি’র বিরুদ্ধে ৬ বার মাঠে নেমে কেবল ১ বারই পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে। ১৯৯৯ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত এই দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ম্যাচে লেস্টার ১-০ গোলের জয় পেয়েছিল। মজার হলেও সত্যি যে, এবার প্রমোশন নিয়ে প্রিমিয়ার লীগে খেলার আগে সেটিই ছিল লীগটিতে নটিংহ্যাম ফরেস্ট এর শেষ ম্যাচ।
- যদিও প্রিমিয়ার লীগে তাদের দেখা হয়নি প্রায় ৮ বছরেরও উপরে, তবুও সকল প্রতিযোগিতায় তাদের মধ্যকার সর্বশেষ ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্ট লেস্টার সিটিকে হারিয়েছিল। সিটি গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এফএ কাপ এর সেই ম্যাচটিতে ফরেস্ট জিতেছিল ৪-১ গোলে। সর্বশেষ ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে নটিংহ্যাম ফরেস্ট লেস্টার সিটিকে পর পর দু’টি ম্যাচে হারাতে পেরেছিল (৩ ম্যাচের ধারা)।
যেসকল খেলোয়াড়দের উপর সবার নজর থাকবে (Players to watch out for)
জেমস ম্যাডিসন – লেস্টার সিটি (James Maddison – Leicester City)
জেমস ম্যাডিসন তার দলের হয়ে সর্বশেষ ১০টি ম্যাচে সর্বমোট ১১টি গোল ইনভলভমেন্ট (৭টি গোল, ৪টি এসিস্ট) সরাসরিভাবে অর্জন করেছেন। এছাড়া প্রিমিয়ার লীগে কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে খেলা তার সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে তিনি ৭টি গোল এবং ৬টি এসিস্টও করতে পেরেছেন।
নিকো উইলিয়ামস – নটিংহ্যাম ফরেস্ট (Neco Williams – Nottingham Forest)
নটিংহ্যাম ফরেস্ট এর হয়ে প্রিমিয়ার লীগে এবারের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি শট মারা (১৫টি) এবং সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরির রেকর্ড এখন নিকো উইলিয়ামস এর কাছেই। ২০২২-২৩ মৌসুমে ইউরোপের সকল লীগে কেউই পারেনি উইলিয়ামস এর অদ্ভূত একটি রেকর্ড ভাঙতে — ২৪টি শট মারা সত্ত্বেও কোন গোল বা এসিস্ট না করতে পারা।
লেস্টার সিটি বনাম নটিংহ্যাম ফরেস্ট প্রেডিকশন (Leicester City Vs Nottingham Forest Prediction)
এই ফিক্সচারটিতে যেকোন প্রকার অঘটন ঘটার জন্য সব ধরণের উপকরণই উপস্থিত, কারণ উভয় দলই রয়েছে ফর্মের তলানিতে। তবে, লেস্টার সিটি’র জন্য তাদের মৌসুমের প্রথম জয়টি তুলে নেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ বুঝি আর আসবে না। এই ম্যাচে পরাজয় নিশ্চয় লেস্টার ডাগ আউট থেকে ব্রেন্ডান রজার্স এর বিদায় ডেকে আনবে। কিন্তু, এই ম্যাচে জিতলেই তাদের ভাগ্যের ও মৌসুমের মোড় পুরোপুরিভাবে উল্টো দিকে পরিবর্তন হয়ে যেতেও পারে।