প্রেডিকশন (Prediction)
ক্রোয়েশিয়া ১ – ২ ব্রাজিল
ভেন্যুঃ এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম
ব্রাজিল হল এমন একটি দল যাদেরকে বিশ্বকাপ পর্যায়ে কখনোই হারাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। এবার তারা সেই সমীকরণটিকে পরিবর্তন করার জন্যই তাই মুখিয়ে রয়েছে। এর আগে ফিফা বিশ্বকাপের মঞ্চে যে ২ বার এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে, তার মধ্যে দুইবারই পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে ক্রোয়াট’রা। অন্যদিকে, ব্রাজিল তাদের ৬ষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপার লক্ষ্যে এবার মরিয়া হয়ে উঠেছে, এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে তারা ক্রোয়েশিয়াকে অতি সাধারণ আরেকটি বাঁধা হিসেবেই চিহ্নিত করবে। একটি অত্যন্ত ফিজিক্যাল এবং মজার একটি ম্যাচ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, কারণ উভয় দলেই এমন অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন, যারা কি না জয় হাসিল করার জন্য যেকোন কিছু করতে রাজি।
ফর্ম বিবরণীঃ ক্রোয়েশিয়া (Form Guide: Croatia)
মরক্কোর পেছনে থেকে, অর্থাৎ রানার্স আপ হিসেবে গ্রুপ এফ থেকে কোনরকমে রাউন্ড অব ১৬ তে অগ্রসর হয় ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপ পর্যায়ে তারা একটি ম্যাচে জয়লাভ করে, এবং বাকি দু’টি ম্যাচেই তারা করে ড্র। জাপান এর বিপক্ষে রাউন্ড অব ১৬ এর এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েও তারা অতিরিক্ত সময়ের শেষে ড্র করতে সক্ষম হয় (১-১ গোলে),
এবং খেলাটিকে টেনে নিয়ে যায় পেনাল্টি শুট আউট পর্যন্ত। তাদের গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ এর উপর তাদের অসীম আস্থা থাকবে, কারণ তিনি সেদিন জাপানের নেওয়া ৪টি পেনাল্টি কিকের মধ্যে ৩টিই রুখে দিয়েছিলেন। তবে, তারা অবশ্যই আশা করবে যেন গোলের সামনে তাদের ফর্মে কিছুটা উন্নতিসাধন হয়, কেননা ব্রাজিলের অসাধারণ আক্রমণভাগ অনেকটা নিশ্চিতরূপেই ৯০ মিনিটে বা অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগকে ভেদ করতে পারবে বলেই মনে হয়।
ফর্ম বিবরণীঃ ব্রাজিল (Form Guide: Brazil)
প্রত্যাশা মোতাবেক গ্রুপ জি থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরের রাউন্ডে অগ্রসর হওয়ার পরে রাউন্ড অব ১৬ পর্যায়ে সাম্বা বয়েজ’রা দক্ষিণ কোরিয়ার মত একটি তুলনামূলকভাবে সহজ প্রতিপক্ষই পায়। তারা সেই ম্যাচটিতে কোন প্রকার অঘটনের সম্ভাবনা ম্যাচের শুরুর দিকেই নিঃশেষ করে দেয়, কারণ ম্যাচটিতে তাদের করা মোট ৪টি গোলের সবগুলোই এসেছে ম্যাচের প্রথম ৩৬ মিনিটের মধ্যেই।
সেই ম্যাচটির আগে তারা কেবলমাত্র ৩টি গোলই করতে পেরেছিল এবারের বিশ্বকাপে, যার ফলে অনেক নিন্দুকেরাই ভেবেছিল যে ব্রাজিলের ফিনিশিং মোটেও আশানুরূপ নয়। তবে, এশিয়ান দলটির বিপক্ষে তাদের পারফর্মেন্সই বলে দেয় যে তারা তাদের স্বভাবসুলভ খেলা এখনও ভোলেনি, এবং তাদের এই আক্রমণাত্মক টাচটি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষেও একান্তই জরুরি হবে, কারণ ক্রোয়েশিয়ার নিকট রয়েছে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে উত্তম ডিফেন্সগুলির একটি।
ম্যাচটিতে যা যা ঘটতে পারে (How the game could go)
গত চারটি বিশ্বকাপের মধ্যে দুইটিতেই একে অপরের সম্মুখীন হওয়ার পর এই দুই দলের প্রত্যেকেরই একটি ধারণা তৈরি হয়েছে যে অপর দলের কেন্দ্রীয় ফুটবলীয় দর্শনটি কেমন। এই ম্যাচটিও একান্তই একটি ইচ্ছাশক্তির লড়াইয়ে পরিণত হতে পারে। তবে, ব্রাজিলের জাদুকরী ফুটবল এবং টেকনিক্যালিটি ক্রোয়েশিয়ার জন্য ঘাতক প্রমাণিত হতে পারে। ক্রোয়াট’রা ম্যাচটিতে লাল কার্ডের দেখা পেয়ে ১০ জনের দলে পরিণত না হয়ে গেলে নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করতে পারবে, কারণ তারা খুবই আক্রমণাত্মক ট্যাকেলিং করে থাকে। উভয় দলই ম্যাচটিতে গোলের দেখা পাবে, কিন্তু ব্রাজিল খুব স্বল্প ও ক্ষীণ ব্যবধানে হলেও তাদের ইউরোপীয় প্রতিপক্ষকে বাজিমাত করতে পারবে বলেই আমাদের মনে হয়।