প্রেডিকশন (Prediction)

মরক্কো ১ – ০ ক্রোয়েশিয়া

ভেন্যুঃখলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম

কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আগামী শনিবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে গ্রুপ ‘এফ’ থেকে উঠে আসা দুই দল মরক্কো এবং ক্রোয়েশিয়া। এবারের বিশ্বকাপে তাই এটি হবে এই দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচটি একটি গোলশূন্য ড্র হিসেবেই শেষ হয়। তবে, সেই ম্যাচটিতে মরক্কো যেভাবে নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে জানান দিয়েছিল, তাতে ক্রোয়েশিয়া নিশ্চয় কিছুটা হলেও আশ্চর্যান্বিতই হয়েছিল।

সেই ম্যাচটির পর থেকে উভয় দলই নিজেদের খেলায় উন্নতিসাধন করে, এবং বিশ্বকাপের সেমি ফাইনাল পর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের বিপক্ষে নিজ নিজ সেমি ফাইনাল ম্যাচে হারার পর এখন উভয় দলই চাইবে একদম খালি হাতে কাতার ত্যাগ না করতে। মরক্কোর জন্য ইতিহাস রচনা করার একটি সুবর্ণ সুযোগ অপেক্ষা করছে, কারণ এর আগে আফ্রিকার কোন দলই পারেনি বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান অধিকার করতে। অন্যদিকে, এবার তৃতীয় স্থানটি নিজেদের করতে পারলে ক্রোয়েশিয়া পর পর দুইটি বিশ্বকাপে শীর্ষ তিনে থাকার গৌরব অর্জন করবে।

ফর্ম বিবরণীঃ ক্রোয়েশিয়া (Form Guide: Croatia)

গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মরক্কোর সাথে ড্র করার পর থেকে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই নিজেদেরকে ‘কামব্যাক কিং’ উপাধি দিয়ে স্বীকৃত করতে পেরেছে জ্লাটকো ডালিচের ক্রোয়েশিয়া দলটি। মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচটির পর থেকে তারা কানাডা, জাপান এবং ব্রাজিলের বিপক্ষে এক গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচগুলি জিতে নিতে সমর্থ হয়। সেই জয়গুলির উপর ভর করেই তারা পৌঁছে যায় বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে।

দুঃখজনকভাবে তাদের জন্য আর্জেন্টিনা খুব বেশিই শক্তিশালী প্রমাণিত হয়, এবং মেসি ও তার সতীর্থরা ক্রোয়েশিয়ার জালে ৩টি গোল ঢুকানোর ফলে তারা আর এইবার কোন অভূতপূর্ব কামব্যাক সম্পন্ন করতে পারে না। মরক্কো’র ক্রীড়াকৌশল অবশ্য তাদের জানা রয়েছে, যেহেতু তারা মরক্কো’র বিপক্ষে ইতিমধ্যে একবার খেলেছে। সেই ম্যাচটিতে আবার তাদেরকে তাদের প্রকৃত রূপে দেখা যেতে পারে, তবে তাদের ফিনিশিং দক্ষতা নিয়ে এখনো অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে, এবং সেটির কারণেই ডিফেন্সে শক্তিশালী মরক্কো দলটি এই ম্যাচটিতে কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে।

পড়ুন:  লিভারপুল বনাম অ্যাস্টন ভিলা: ক্লপ শীর্ষ চার তাড়া চালিয়ে যাচ্ছেন

ফর্ম বিবরণীঃ মরক্কো (Form Guide: Morocco)

বিশ্বকাপ সেমি ফাইনালে ফ্রান্সের সম্মুখীন হওয়ার আগ পর্যন্ত আটলাস লায়নস খ্যাত মরক্কান’রা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে কেবলমাত্র একটি গোল হজম করেছিল। তাদের নিকটই ছিল এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে শক্তিশালী ডিফেন্স। এছাড়া, যদি না আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ফাইনাল ম্যাচে অনেক বেশি সংখ্যায় দূর্দান্ত সব সেইভ করে ফেলেন, তাহলে খুব বেশি বিতর্ক ছাড়াই এবারের বিশ্বকাপের গোল্ডেন গ্লাভস (সেরা গোলকিপার) পুরষ্কারটি জিতে নিবেন মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বুনু।

এ থেকে তাদের রক্ষণভাগের শক্তিমত্তা ও ক্ষমতা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়, এবং ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষেও তারা সেই চমৎকার রক্ষণভাগটির উপরেই ভরসা স্থাপন করবে। ক্রোয়েশিয়ার ফিনিশিং নিয়ে অবশ্য আগে থেকেই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে, ওয়ালিদ রেগ্রাগুই নিশ্চয় চাইবেন যেন তার নিজের দলের ফিনিশিংও আগের ম্যাচের থেকে শ্রেয় হয়, কেননা সেমি ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে তারা এক কথায় তাদের ফিনিশিং ব্যর্থতার কারণেই হেরেছে।

ম্যাচটিতে যা যা ঘটতে পারে (How the game could go)

সেমি ফাইনাল পর্যায়ে নিজেদের ম্যাচগুলিতেই শুধুমাত্র মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়া পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে। তবে, উভয় দলই জানে অপর দলের শক্তি ও দূর্বলতার জায়গাগুলি সম্পর্কে। তাই, এই ম্যাচটি আরো উচ্চ গতিতে খেলবে উভয় দল, এমনটিই আশা করা যাচ্ছে। তবে, আমাদের মতে, এই ম্যাচটিতে জেতার জন্য বেশি আগ্রহী হবে মরক্কান’রাই, এবং সেজন্য আমরা তাদেরকেই এগয়ে রাখছি জয়ের জন্য।

Share.
Leave A Reply