যেহেতু ক্লাব ফুটবলের শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোটি এখন সমাপ্ত হয়েছে, সেহেতু বলাই যায় যে, আমরা এখন অফিশিয়ালি মৌসুমের মাঝামাঝি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি, এবং মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পিরিয়ডেও প্রবেশ করে ফেলেছি।
ট্রান্সফার উইন্ডোটির শেষ দিন অর্থাৎ ডেডলাইন ডে’টিও ছিল চমৎকার। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর একটি জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো এবার বিশ্ববাসী উপভোগ করেছে।
সাধারণত এই উইন্ডোতে তেমন বড় কোন ব্যবসা না হলেও, এবার নামী দামী অনেক খেলোয়াড়েরাই ক্লাব পরিবর্তন করেছেন, সেসকল ক্লাব আবার ঐসকল খেলোয়াড়দের বদলি হিসেবে অন্যান্য খেলোয়াড়দেরকেও দলে ভিড়িয়েছে, এবং অনেক ট্রান্সফার রেকর্ডও ভাঙা হয়েছে এই উইন্ডোতে। আমরা তাই চলে এসেছি এবারের জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোর সকল খুটিনাটি বিষয় আপনাদেরকে জানানোর উদ্দেশ্যে। এছাড়া, যেহেতু আমরা মৌসুমের মাঝামাঝি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি, সেহেতু মৌসুমের শুরুতে করা আমাদের প্রেডিকশনগুলি কতটা সত্য হয়েছে, সেটিও আমরা দেখব এই নিবন্ধের শেষ অংশে।
কেমন গেল ডেডলাইন ডে? (How did the Deadline Day go?)
এই প্রশ্নের জবাব দিতে গেলে, আমাদেরকে একটি অবধারিত জায়গা থেকেই আলোচনা শুরু করতে হবে।
শেষমেষ এঞ্জো ফার্নান্দেজকে দলে ভেড়াতে পেরেছে চেলসি (Chelsea FINALLY sign Enzo Fernandez)
বিশ্বব্যাপী যত চেলসি সমর্থক রয়েছেন, গত একটি মাস নিশ্চয় তাদের জন্য স্বপ্নের মত ছিল। এমনটি মনে হচ্ছিল যেন, অল ব্লুস’রা প্রতি ৪৮ ঘন্টায় একটি করে সাইনিং এর ঘোষণা দিচ্ছিল। পুরো মাস জুড়েই তারা ছিল চরম ব্যস্ত। এবারের জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো’র সবচেয়ে বড় চমকই ছিল পশ্চিম লন্ডনের এই ক্লাবটি। তাই, এটিই স্বাভাবিক যে, মাসের শেষটাও তারা ধামাকার সাথেই করবে। এবং, হ্যাঁ, তারা সেটিই করেছে, যদিও কাজটি তাদের জন্য মোটেও সহজ ছিল না।
ট্রান্সফার উইন্ডোটির শুরু থেকেই চেলসি’র প্রধান টার্গেটই ছিলেন বেনফিকার বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এঞ্জো ফার্নান্দেজ, এবং তাকে নিয়ে টানাটানি চলেছে একদম উইন্ডোটির শেষ দিন পর্যন্ত। এক পর্যায়ে বেনফিকার দৃঢ় অবস্থান দেখে মনে হয়েছিল যে, চেলসি হয়তো তাদের প্রধান টার্গেটকে দলে ভেড়াতে পারবে না। তবে, ডেডলাইন ডে’তে ট্রান্সফার উইন্ডো শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে এসে বেনফিকার সাথে একটি চুক্তি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয় অল ব্লুস’রা।
শেষ পর্যন্ত এই ২২ বছর বয়সী প্রতিভাবান মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়ানোর জন্য চেলসিকে ব্রিটিশ ট্রান্সফার রেকর্ড ভাঙতে হয়। ২০৩১ সাল পর্যন্ত করা এই চুক্তিতে চেলসি’র খরচ হতে চলেছে মোট ১০৫.৬ মিলিয়ন পাউন্ড। এই ট্রান্সফার উইন্ডোতে তিনি ছিলেন চেলসি’র নবম সাইনিং। পুরো উইন্ডো মিলিয়ে অল ব্লুস’রা নতুন সাইনিংয়ের উপর সর্বমোট খরচ করেছে ২৮০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি অর্থ।
জর্জিনহোকে পেয়েই খুশি আর্সেনাল (Arsenal settle for Jorginho)
প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা প্রত্যাশী গানারস’দের জন্য যেন একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়াময় ট্রান্সফার উইন্ডোই শেষ হল। মিখাইলো মুদ্রিক এবং জাঁও ফেলিক্স এর চুক্তিগুলো তাদের নাকের গোড়া থেকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যায় চেলসি। আবার মইসেস কাইসেদোকেও তারা ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়ন থেকে দলে ভেড়াতে ব্যর্থ হয়।
এরপর তারা অল্টারনেটিভ খুঁজতে হানা দেয় চেলসিতে (যা তারা পূর্বেও অনেকবার করেছে), এবং অল ব্লুস শিবির থেকে তারা তাদের সহ অধিনায়ক এবং চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের নায়ক জর্জিনহোকে দলে ভেড়ায়। ৩১ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান মিডফিল্ডার গানারস শিবিরে যোগ দিয়েছেন ১২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। ইউরো ২০২০ জয়ী এই খেলোয়াড় আর্সেনালে যোগ দিয়েছেন ১৮ মাস মেয়াদী একটি চুক্তিতে। অবশ্য, উভয় পক্ষ চাইলে সেই চুক্তিটি আরো এক বছর বাড়িয়ে নেওয়ার অপশনও রাখা হয়েছে। এই চুক্তিটি তাদের প্রধান উদ্দেশ্য না থাকলেও অধিকাংশ আর্সেনাল সমর্থকই এই সাইনিংয়ে খুশি হয়েছেন।
লিয়ান্দ্রো তোসার্দ, যিনি এই ট্রান্সফার উইন্ডোর শুরুর দিকে আর্সেনালে যোগ দিয়েছিলেন, এর মত এই ইতালিয়ান মিডফিল্ডারও আর্সেনালের ফার্স্ট-চয়েজ টার্গেট ছিলেন না, তবে অন্তত জর্জিনহোর নিকট রয়েছে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা, যা আর্সেনালের জন্য এখন অতীব প্রয়োজনীয়। এছাড়া, উভয় খেলোয়াড়ই আগে থেকেই আর্সেনালের পজিশন ফুটবলের সাথে পরিচিত, কারণ তাদের সাবেক দলে তারা অনুরূপ সিস্টেমেই খেলে এসেছেন।
টটেনহ্যাম হটস্পার্সে যোগ দিলেন পেদ্রো পোরো (Pedro Porro joins Tottenham Hotspurs)
ডেডলাইন ডে’র মাত্র একদিন আগেই মনে হয়েছিল যে, স্পার্স এই চুক্তিটি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হবে। তবে, সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ডেডলাইন ডে শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা পূর্বেই সাইনিংটি সম্পন্ন করে ফেলে তারা। স্পোর্টিং লিসবনের এই তারকা ফুল ব্যাক ৫ মিকিয়ন পাউন্ডের একটি লোন ডিলে আপাতত টটেনহ্যাম হটস্পার্স স্টেডিয়ামে পাড়ি জমিয়েছেন, যদিও উভয় পক্ষ আগামী গ্রীষ্মে ৩৯ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিও আগে থেকেই চূড়ান্ত করে রেখেছে।
তার কিছুদিন আগেই আর্নৌট ডাঞ্জুমাকে দলে ভেড়ানোর ফলে, ২২ বছর বয়সী পোরো হলেন এবারের জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে স্পার্সের করা দ্বিতীয় সাইনিং।
শেষ মুহূর্তের চাপে মার্সেল সাবিৎজারকে দলে ভিড়িয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United scramble for Marcel Sabitzer at the eleventh hour)
গত সপ্তাহে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এফএ কাপের খেলায় রিডিং স্ট্রাইকার এন্ডি ক্যারোল এর করা একটি ভয়ংকর ট্যাকেলের দরুণ ইঞ্জুরিতে আক্রান্ত হোন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ড্যানিশ এই মিডফিল্ডার হয়তো আগামী এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ মাঠে ফিরতে পারবেন। এর মানে এই দাঁড়িয়েছিল যে, ট্রান্সফার উইন্ডোর শেষ দিনে এসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে অন্তত একজন মিডফিল্ডার সাইন করাতেই হবে, এবং সেই কাজটিতে তারা ভালোভাবেই সফল হয়েছে।
অস্ট্রিয়ান এই মিডফিল্ডার, যিনি কি না জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ থেকে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন, তাকে দলে পাওয়ার জন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ এরিক তেন হাগ এড়িয়ে গিয়েছেন ইস্কো, সাউল নিগুয়েজ, হুসেম আওয়ার, এবং ইয়ানিক কারাসকো’র মত খেলোয়াড়দের, যারা রেড ডেভিলস শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন।
এখন যখন আমরা ডেডলাইন ডে’র সকল কার্যকলাপ সম্পর্কে একটি মূখ্য ধারণা পেয়ে গিয়েছি, তখন আমরা সামনে এগিয়ে এটি যাচাই করতেই পারি যে, মৌসুমের শুরুতে করা আমাদের প্রিমিয়ার লীগ প্রেডিকশনগুলির কি অবস্থা।
মিড-সিজন পর্যালোচনা: আমাদের করা প্রেডিকশনগুলির বর্তমান পরিস্থিতি (Mid-season review: How are the predictions going?)
আগামী মৌসুমের জন্য ইউরোপীয় ফুটবল নিশ্চিত করবে নিউক্যাসেল ইউনাইটেড (Newcastle United will secure a European spot)
এই ভবিষ্যদ্বাণীটি আমরা যেমনটি ভেবেছিলাম, তার থেকেও ভালো অবস্থানে রয়েছে। সত্যি বলতে, তাদের উপর আমাদের এতটাও ভরসা ছিল না। বর্তমানে তারা প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে, এবং ৫ম স্থানে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পার্স এর থেকে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে। এবারের মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে সকল দলের মধ্যে সবচেয়ে গোছানো ও ধারাবাহিক ফুটবল খেলে চলেছে ম্যাগপাইজ’রা, এবং ফলস্বরূপ, লীগের সবচেয়ে ভালো ডিফেন্সটিও রয়েছে তাদেরই দখলে।
এমন অবস্থান থেকে অনেক বেশি অঘটন না ঘটলে আগামী মৌসুমে ম্যাগপাইজ’দেরকে চ্যাম্পিয়নস লীগে দেখতে পাওয়া যাবে বলেই ধারণা করা যায়। আর যদি তারা শীর্ষ চারে নাও থাকতে পারে, তবুও তারা ইউরোপীয় কোন প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিবে, এ ব্যাপারে আর কোনই সন্দেহ নেই।
এবারও শীর্ষ চারে জায়গা করে নিতে পারবে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United will miss out on top four again)
এই বিষয়ে আপনাদের উচিৎ আমাদেরকে অন্তত কিছুটা কৃতিত্ব দেওয়া৷ আমরা যখন মৌসুমের শুরুর দিকে এই প্রেডিকশনটি করেছিলাম, তখন মৌসুমের প্রথম দুইটি ম্যাচে তারা শুধু হারেইনি, বরং সেই দুই ম্যাচে তারা সম্মিলিতভাবে ৬টি গোলও হজম করেছিল। তারা এমনই একটি বাজে সূচনা করেছিল তাদের মৌসুমের, এবং তার সাথে সর্বশেষ মৌসুমের বাজে পারফর্মেন্স যোগ করে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে, আরো একটি কঠিন মৌসুম পার করতে চলেছে রেড ডেভিলরা। তবে, আমাদেরকে ভুল প্রমাণিত করতে সফল হয়েছে এরিক তেন হাগের শিষ্যরা।
যদিও এই প্রেডিকশনটি সত্য হওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে, তবুও এটি মানতেই হবে যে, বর্তমানে বেশ অসাধারণ ফুটবলই খেলছে তেন হাগের দল। তারা বর্তমানে লীগ টেবিলের ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে, এবং ৫ম স্থানে থাকা স্পার্সের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে তাদের থেকে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।
এছাড়া, তারা হল বর্তমানে পুরো ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ইন-ফর্ম দলগুলির একটি। তাই, এখন থেকেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মৌসুমের শেষ নাগাদ তারা তাদের চ্যাম্পিয়নস লীগ স্পটটি ধরে রাখতে পারবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।
চ্যাম্পিয়নস লীগে ফিরে আসবে আর্সেনাল (Arsenal will return to the Champions League)
তারা শুধু উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগে ফিরেই আসবে না, যেভাবে তাদের মৌসুম এগুচ্ছে, তাতে এমনটিই মনে হচ্ছে যে, কয়েক বছরের বিরতির পর এবার তারা ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই পুনরায় চ্যাম্পিয়নস লীগে প্রবেশ করবে।
মৌসুমের মাঝ পর্যায়ে ১৯টি ম্যাচ খেলে ইতিমধ্যে ৫০ পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছে গানারস’রা। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে এর চেয়ে ভালো সূচনা আর্সেনাল এর আগে কোন মৌসুমেই করতে পারেনি। গতিবিধি এবং আত্মবিশ্বাস উভয়ই তাদের অনুকূলে রয়েছে, এবং তাদের নিকট আরো রয়েছে তারুণ্যের চাঞ্চল্য, এবং অদম্য সাহস। এক কথায়, ইতিহাস গড়ার সকল সরঞ্জামই এবার তাদের নিকট বিদ্যমান।
২০২২-২৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে কমপক্ষে ৩০টি গোল করবেন আর্লিং হাল্যান্ড (Haaland will score at least 30 Premier League goals)
লীগে মাত্র ২০টি ম্যাচ খেলেই ২৫টি গোলের কাতারে পৌঁছে গিয়েছেন আর্লিং ব্রাউত হাল্যান্ড নামক ম্যানচেস্টার সিটি’র এই বিপজ্জনক স্ট্রাইকার। অর্থাৎ, আমাদের এই প্রেডিকশনটি সত্য প্রমাণিত হওয়ার জন্য তার দরকার আর মাত্র ৫টি গোল, যেগুলি স্কোর করার জন্য তার হাতে রয়েছে প্রায় অর্ধেকটা মৌসুম। এই গতিতে চলতে থাকলে, হাল্যান্ড এবারের মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে ৪০টিরও বেশি গোল করে ফেলবেন বলে ধারণা করা যায়।
খুব সহজেই হাল্যান্ড একটি নির্দিষ্ট প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমে করা সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটিও ভেঙে ফেলবেন বলেই মনে হচ্ছে। তবে, এত কিছু অর্জন করতে পারলেও, তিনি তার দলকে প্রিমিয়ার লীগ শিরোপাটি জেতাতে পারেন কি না, সেটিও আলোচনার একটি মোক্ষম বিষয়।
লিভারপুল এবার দ্বিতীয় স্থানে ফিনিশ করতে পারবে না (Liverpool may not finish second this term)
ইয়ুর্গেন ক্লপের অল রেডস’রা বর্তমানে প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের ৯ম স্থানে অবস্থান করছে। আমরা প্রেডিক্ট করেছিলাম যে, দলটি এবারের মৌসুমে কিছুটা হলেও স্ট্রাগল করবে। তবে, সেটি যে এমন যুগান্তকারী রূপ ধারণ করবে, সে ব্যাপারে আমাদের কোনই ধারণা ছিল না। যেকোন ভাবেই হোক না কেন, প্রতি মৌসুমেই কোন না কোন সময়ে এমন খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সবাইকেই যেতে হয়। তবে, ইয়ুর্গেন ক্লপের খারাপ দিন যেন শেষ হওয়ার নামই নিচ্ছে না।
ক্লান্তির পাশাপাশি দলটির সকল খেলোয়াড়দের মধ্যেই একরকম আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া, ২০২২-২৩ মৌসুমে বিশ্বকাপের কারণে প্রিমিয়ার লীগ একটি কঠিন শিডিউল বেছে নেয়, যেখানে খেলোয়াড়দের ছুটিছাটার পরিমাণ বা অবকাশও অনেকটাই কম। এছাড়া, ২০২১-২২ মৌসুমটিও তাদের জন্য খুবই ক্লান্তিকর ছিল, কারণ সেবারের মৌসুমে তারা বেশির ভাগ প্রতিযোগিতাতেই প্রায় শেষ পর্যন্ত টিকেছিল। সেবার রীতিমত তাদের জন্য ক্যালেন্ডারের পাতাগুলি পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র খেলার তারিখগুলি চিহ্নিত করে রাখার কারণে।
এবারের মৌসুমে শীর্ষ চারে জায়গা করে নিতে হলে তাদেরকে হতে হবে এক কথায় অপ্রতিরোধ্য, যা বর্তমানে তাদের খেলা বা ফর্ম দেখে খুব একটা সম্ভবপর মনে হচ্ছে না। তারা শীর্ষ চারে বা ছয়ে জায়গা করে নিতে পারলেও, প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের ২য় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করতে পারবে বলে আমাদের বর্তমানে মনে হচ্ছে না। এছাড়া, লীগ লিডার্স আর্সেনালের থেকে তারা ইতিমধ্যে ২১ পয়েন্ট পিছিয়েও রয়েছে। লিভারপুলের মৌসুমটি যেন খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকেই এগুচ্ছে।