এভারটন (Everton)
টফিস খ্যাত এভারটন চাইবে তাদের ২০২১-২২ মৌসুমের স্মৃতি যেন তাদেরকে খুব বেশি তাড়া করে না বেড়াতে পারে, এবং তারা আরো চাইবে যেন তাদের সুন্দর ইতিহাসে কোনই দাগ না পড়ে। গত মৌসুমে এভারটন শুধু সকলের হাতে নাকানিচুবানিই খায়নি, বরং মৌসুমটির শেষের দিকে তারা ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় টিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিল। ইংল্যান্ড ফুটবলের সাবেক নায়ক ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ড এর উপর মৌসুমের শেষের দিকে এসে এভারটনকে বাঁচানোর দায়িত্বটি দেওয়া হয়, এবং সেই দায়িত্বটি পালনে তিনি সফলও হোন।
তবে যাই হোক, প্রিমিয়ার লীগের প্রথম উইকেন্ডেই এভারটনের জন্য একটি মোক্ষম পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। থমাস টুখেলের চেলসিকে তারা আমন্ত্রণ জানাতে যাচ্ছে গুডিসন পার্কে।
এবারের গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডকে বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সেসব সিদ্ধান্তের মধ্যে অন্যতম ছিল গত মৌসুমের এভারটন হিরো রিচার্লিসনকে ৬০ মিলিয়ন এরও উপরের ট্রান্সফার ফি’র বিনিময়ে টটেনহ্যাম হটস্পার্স এর নিকট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত। গত মৌসুমে এভারটনের প্রিমিয়ার লীগে টিকে থাকার পেছনে ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলেন। মৌসুমজুড়ে তার গোলসংখ্যা ১০টি হলেও তার প্রত্যেকটিই ছিল দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একেকটি গোল।
ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ড চাইবেন যেন তার সাবেক দলের বাড়া ভাতে ছাঁই পড়ে, এবং তারা যেন এভারটনের বিরুদ্ধে গুডিসন পার্ক থেকে কোন পয়েন্টই না নিয়ে যেতে পারে। তাদের পক্ষে তেমনটি করা আদৌ সম্ভবপর হবে না, তা এখন তাদের খেলা দেখলেই বোঝা যাবে।
চেলসি (Chelsea)
চলমান ট্রান্সফার উইন্ডোতে বেশ কয়েকবারই চেলসি চরম হতাশার শিকার হয়েছে। দেখা গিয়েছে যে, চেলসি যে খেলোয়াড়ের সাথেই সমঝোতায় পৌঁছেছে, তাকেই অন্য কোন দল এসে তাদের নাকের গোড়া থেকে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়া, চেলসির দুশ্চিন্তা আরো অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়ার কারণ হল এই যে, দলটির প্রি সিজন ট্যুর অনেকটাই গড়পড়তা ছিল। যদিও তারা দুই একটি ভালো সাইনিং করাতে সক্ষম হয়েছে (যেমন ম্যানচেস্টার সিটি থেকে রাহিম স্টার্লিং, এবং ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি থেকে কালিদু কুলিবালি), তার পরেও দলের বিভিন্ন পজিশনে এখনো বহু শূন্যস্থান রয়েই গিয়েছে।
ব্রাইটন & হোভ এলবিয়ন থেকে স্প্যানিশ লেফট ফুল ব্যাক মার্ক কুকুরেয়াকে খুব সম্ভবত চেলসি দলে ভেড়াতে সক্ষম হয়েই গিয়েছে (যদিও যেকোন মুহূর্তে বার্সেলোনা ডিলটি ছিনিয়ে নিতেই পারে)। এছাড়া, বিভিন্ন ভরসাবান সংবাদ আউটলেটের মতে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পেছনে ফেলে ডাচ সুপারস্টার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে কেনার দৌড়ে এখন এগিয়ে রয়েছে চেলসি, এবং এই ডিলটি সম্পন্ন হওয়ার প্রচন্ড সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
তবে, এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই যে, গত মৌসুমের অগ্রগতিকে যদি তারা আরো এক ধাপ সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাদের কিছু খেলোয়াড় ছেঁটে ফেলতে হবে, এবং কিছু নতুন মুখকে দলে আনতে হবে।
গুডিসন পার্কে এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচটি অবশ্য চেলসি’র জন্য মোটেও একটি সহজ শুরু নয়, কারণ গত মৌসুমে এই ফিক্সচারটিতে চেলসি এভারটনের নিকট ছোট্ট ব্যবধানে হলেও হেরেছিল।
প্রেডিকশন (Prediction)
আমাদের মতে, এভারটনের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা তাদের মাঠের খেলার উপরও এক ধরণের বিরুপ প্রভাব ফেলবেই। এছাড়া যেহেতু চেলসি’র নিকট এখন যথেষ্ট পরিমাণে ডিফেন্ডার রয়েছে, এবং যেহেতু তাদের মিডফিল্ডাররাও বেশ ভালোই ফর্মে রয়েছেন, সেহেতু আমরা এই ম্যাচটিতে এভারটনের চেয়ে চেলসিকেই কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখছি।
এভারটন ১ – ২ চেলসি
৩.৫ গোলের নিম্নে
চেলসি -১.০ (এশিয়ান হ্যান্ডিক্যাপ)