ম্যানচেস্টার সিটি (Manchester City)
বর্তমান মৌসুমে এ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লীগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা তাদের স্বভাবসুলভ এবং প্রত্যাশিত অসাধারণ ফর্ম প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের সর্বশেষ ম্যাচে নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে সেইন্ট জেমস’স পার্কে অনুষ্ঠিত খেলাটিতেও তারা সেই ফর্মেরই পুনরাবৃত্তি করতে চেয়েছিল।
তবে, তারা সেটি মোটেও করতে পারেনি, কারণ ম্যাগপাইস খ্যাত নিউক্যাসেল তাদের সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে ম্যান সিটিকে আক্রমণ করে বসে, এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের নিকট সেটির ভালো কোন জবাব ছিল না। নিউক্যাসেল তাদের সবটুকু যেন মাঠেই ঢেলে দিতে সক্ষম হয়েছিল।
গোলের উৎসবটি শুরু হয়েছিল যখন বার্নার্দো সিলভা’র অনবদ্য ডিফেন্স চেড়া ক্রসে পা ঠেকিয়ে সিটি’র হয়ে প্রথম গোলটি করেন জার্মান মিডফিল্ডার ইল্কাই গুন্দোগান। তবে সেই অসাধারণ গোলটির জবাবে ম্যাগপাইদের পক্ষে এলান সেইন্ট-ম্যাক্সিমিন এর ক্রস থেকে সমতাসূচক একটি গোল করেন মিগুয়েল আলমিরোন।
নিউক্যাসেল এর বাম উইং দিয়ে বার বার সিটিকে আঘাত করেই চলেছিলেন সেইন্ট-ম্যাক্সিমিন, যার ফলশ্রুতিতেই মূলত নিউক্যাসেলের দ্বিতীয় গোলটি তৈরি হয়েছিল, যা সিটি’র জালে জড়ান ক্যালাম উইলসন। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য গোল ব্যবধান ৩-১ এ নিয়ে যান নিউক্যাসেল রাইট ব্যাক কিয়েরান ট্রিপিয়ার, যিনি তার দূর্দান্ত ফ্রি কিকটিকে এডারসনের নাগাল থেকে কিছুটা দূরে রাখতে সমর্থ্য হোন। তবে, এভাবে পিছিয়ে পড়ার পরও চ্যাম্পিয়নরা তাদের জাত ঠিকই চিনিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আর্লিং হাল্যান্ড এবং বার্নার্দো সিলভা’র করা দুইটি গোলের মাধ্যমে সিটি খেলায় আবারো সমতা ফেরায়। তবে, বাকি ম্যাচজুড়ে নিউক্যাসেল সেই সমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়, এবং একটি কঠিন পরীক্ষা থেকে সিটি এক পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফিরে আসে।
এমন পারফর্মেন্সগুলি দেখলেই আসলে বোঝা যায় কেন ম্যানচেস্টার সিটি একটি চ্যাম্পিয়ন দল, কারণ তাদের খারাপ দিনেও তারা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে কিছু না কিছু অর্জন করেই ছাড়ে।
ক্রিস্টাল প্যালেস (Crystal Palace)
ঈগলস খ্যাত ক্রিস্টাল প্যালেস এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত বেশ উঁচুতেই উড়ে চলেছে। নিজেদের মাঠে আর্সেনালের বিরুদ্ধে দুঃখজনকভাবে ২-০ গোলে হারার পর তারা এনফিল্ডে গিয়ে লিভারপুলের বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়। সেই ম্যাচটিতে তারা তাদের শক্তিমত্তার কিছুটা পরিচয় দিতে পারলেও তার পরের সপ্তাহে তারা এস্টন ভিলাকে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের আগমণের জানান খুব ভালো করেই দিয়ে দেন।
তাদের সর্বশেষ সেই ম্যাচটিতে গোলের ধারা শুরু অবশ্য করেছিলেন ভিলা ফরোয়ার্ড ওলি ওয়াটকিন্স। তবে, সেই গোলটির কয়েক মিনিট পরেই প্যালেস এর আইভরিয়ান উইংগার উইলফ্রিড জাহা একটু দূর্দান্ত গোল করে খেলায় সমতা আনেন। বিপজ্জনক এই উইংগার, যিনি কি না শেষ পর্যন্ত ম্যাচটিতে সর্বমোট দুইটি গোল করেন, পুরো ম্যাচটি জুড়েই এস্টন ভিলা’র ডিফেন্ডারদের রেখেছিলেন ভয়ের সাগরে ডুবিয়ে। টাইরিক মিশেল এর ক্রস থেকে খেলার সবশেষ গোলটি অবশ্য করেছিলেন প্যালেসের নতুন সাইনিং জঁ-ফিলিপ ম্যাটেটা, যাকে ক্লাবটির সমর্থকরা সাদরে গ্রহণ করে নেন।
এরপরে প্যাট্রিক ভিয়েরা এবং তার সতীর্থদের জন্য ম্যানচেস্টারের এতিহাদ স্টেডিয়ামে একটি অতি কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।
প্রেডিকশন (Prediction)
সফরে গিয়ে ২টি পয়েন্ট খোয়ানোর পর এবার ম্যানচেস্টার সিটি ঘরের মাঠে এই ম্যাচটি জেতার জন্য উঠেপড়ে লাগবে বলেই আশা করা যায়। তাই, যদিও এই ফিক্সচারটিতে সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ক্রিস্টাল প্যালেস খুব ভালো করে আসছে, তবুও আমরা মনে করি যে, ম্যানচেস্টার সিটি এই ম্যাচটি সহজেই জিতে নিতে পারবে।
ম্যানচেস্টার সিটি ৩ – ০ ক্রিস্টাল প্যালেস
২.৫ গোলের উর্ধ্বে
ম্যানচেস্টার সিটি -১.০ (এশিয়ান হ্যান্ডিক্যাপ)