প্রেডিকশন (Prediction)
ম্যানচেস্টার সিটি ৪ – ০ সাউথ্যাম্পটন
৩.৫ গোলের উর্ধ্বে
ম্যানচেস্টার সিটি -২.০ (এশিয়ান হ্যান্ডিক্যাপ)
গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ (Key notes)
- ম্যানচেস্টার সিটি এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত সকল প্রতিযোগিতায় অপরাজিত রয়েছে।
- সাউথ্যাম্পটন প্রিমিয়ার লীগে তাদের খেলা সর্বশেষ ৩টি ম্যাচেই টানা পরাজিত হয়েছে।
- ম্যানচেস্টার সিটি সকল প্রতিযোগিতায় তাদের খেলা সর্বশেষ ৬টি ম্যাচের মধ্যে ৫টিতেই ২.৫ এর অধিক গোল স্কোর করতে পেরেছে।
- সাউথ্যাম্পটন প্রিমিয়ার লীগে তাদের খেলা সর্বশেষ ১৮টি অ্যাওয়ে ম্যাচের একটিতেও ক্লিন শিট রাখতে সমর্থ্য হয়নি। বর্তমানে তাদের চেয়ে বড় অ্যাওয়ে ম্যাচে জয় না পাওয়ার রেকর্ড আর কোন দলের নেই, এবং তাদের ইতিহাসেও এই ধারাটিই সর্বোচ্চ।
ফর্ম বিবরণীঃ ম্যানচেস্টার সিটি (Form Guide: Manchester City)
এই মুহূর্তে কি কেউ ম্যানচেস্টার সিটিকে আটকাতে পারবে? — সকলের মুখে এখন এই একটাই প্রশ্ন। এবং সত্যি বলতে, এই মুহূর্তে এমন কোন দলকে খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য একটি ব্যাপার। সিটিজেনরা তাদের সামনে আসা যেকোন দলকেই তুলোধুনো করে দিচ্ছে, এবং গত উইকেন্ডে তাদের ক্রস-সিটি রাইভাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৬-৩ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর তারা মিডউইকে চ্যাম্পিয়নস লীগে এফসি কোপেনহেগেনকেও ৫-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারাতে সক্ষম হয়।
আপনি যদি ভেবে থাকেন যে, সেই ম্যাচটিতেও হাল্যান্ড গোল পেয়েছেন, তাহলে আপনি সঠিক। তিনি ম্যাচটিতে তার প্রথম টাচেই গোল করে বসেন। ফলে, চ্যাম্পিয়নস লীগে তার ম্যাচপ্রতি গোলের গড় এসে দাড়িয়েছে ১.২৭ এ, যা সত্যিই অভাবনীয়। নরওয়েজিয়ান এই ফরোয়ার্ডকে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে তুলে নেওয়া হয়, যদিও ম্যান সিটি কর্তৃপক্ষ থেকে পরে জানানো হয়েছে যে, তাকে তুলে নেওয়ার পেছনে ইঞ্জুরি বিষয়ক কোন কারণ ছিল না। তা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে সাউথ্যাম্পটনের জন্য খুবই কঠিন ৯০টি মিনিট অপেক্ষা করছে এতিহাদ স্টেডিয়ামে।
ফর্ম বিবরণীঃ সাউথ্যাম্পটন (Form Guide: Southampton)
প্রিমিয়ার লীগে সাউথ্যাম্পটনের সর্বশেষ জয়টি এসেছিল চেলসি’র বিরুদ্ধে, কিন্তু তার পর থেকে তারা পর পর তিনটি ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে। সর্বশেষ ম্যাচে তারা এভারটনের নিকট ২-১ গোলে হেরেছিল, যা ছিল এবারের মৌসুমে টফিস’দের প্রথম জয়। সেইন্টস’রা অবশ্য এবারের মৌসুমে বাজে ফুটবল খেলছে না, তবে মাঠের তৃতীয়াংশে অর্থাৎ গোলের সামনে তাদের ব্যর্থতার কারণেই আজ তাদের এমন পরিণতি ঘটেছে।
এখন তারা সম্মুখীন হতে চলেছে প্রিমিয়ার লীগের সবচেয়ে গোল-ক্ষুধার্ত দলটির, অর্থাৎ ম্যানচেস্টার সিটি’র। যদিও প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে তারা হারলে কারোই ভ্রু কুচকাবে না, তবুও তাদের প্রধান উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই থাকবে একটি বিশাল ব্যবধানের হার এড়ানো।
ম্যানচেস্টার সিটি বনাম সাউথ্যাম্পটন সম্পর্কিত কিছু তথ্য (Manchester City Vs Southampton Game Facts)
- সাউথ্যাম্পটন এর বিরুদ্ধে তাদের খেলা সর্বশেষ ১২টি ম্যাচের মধ্যে শুধু একটিতেই হেরেছে ম্যানচেস্টার সিটি (৮টি জয়, ৩টি ড্র)। তবে, গত মৌসুমে এই দুই দলের মধ্যকার দু’টি ম্যাচই হয়েছিল ড্র।
- ২০০৪ সালে এতিহাদ স্টেডিয়ামে তাদের সর্বপ্রথম সফরে একটি অসাধারণ ৩-১ গোলের জয়ের পর থেকে স্টেডিয়ামটিতে আরো ১১ বার সফর করে মাত্র ২ পয়েন্ট (২টি ড্র) হাসিল করতে সক্ষম হয়েছে সেইন্টস’রা (২টি ড্র, ৯টি পরাজয়)।
- সাউথ্যাম্পটন তাদের ইতিহাসে প্রিমিয়ার লীগের তৎকালীন চ্যাম্পিয়ন দলের বিরুদ্ধে মোট ৪৫টি ম্যাচ খেললেও তার মধ্যে শুধুমাত্র ২টিতেই তারা জয়লাভ করতে পেরেছে (১১টি ড্র, ৩২টি পরাজয়)। সেই দুইটি জয় এসেছিল ১৯৭০ সালের মার্চ মাসে লিডস ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে (ব্যবধানঃ ৩-১), এবং ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে চেলসি’র বিরুদ্ধে (ব্যবধানঃ ৩-১)।
- ম্যানচেস্টার সিটি নিজেদের মাঠে খেলা তাদের সর্বশেষ ৮টি ম্যাচের সবকটিতেই জয় পেয়েছে, এবং তার প্রত্যেকটি ম্যাচেই তারা কমপক্ষে ৩টি করে গোল করেছে। এস্টন ভিলা ছিল এমন সর্বশেষ দল যারা কমপক্ষে ৩টি করে গোল করে হোমে জেতার এর চেয়ে বড় ধারা তৈরি করতে পেরেছিল। ১৩ ম্যাচের সেই ধারাটি তারা তৈরি করেছিল ১৯৩০ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ১৯৩১ সালের সেপ্টেম্বর এর মাঝামাঝি।
- এবারের মৌসুমে ৮টি ম্যাচ খেলে ম্যানচেস্টার সিটি’র করা ২৯টি গোল হল প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে মৌসুমের এই পর্যায়ে কোন ক্লাবের পক্ষে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। তবে তাদেরকে এই রেকর্ডটি নিজেদের সাথেই ভাগাভাগি করতে হচ্ছে, কারণ ২০১৭-১৮ মৌসুমেও তারা ৮ ম্যাচ পরে ২৯টি গোলেই অবস্থান করেছিলেন। সব মিলিয়ে প্রিমিয়ার লীগ যুগে (৫ বছর লীগের বাইরে কাটানোর পরেও) ম্যানচেস্টার সিটি সর্বমোট ২১ বার একই ম্যাচে ৬টি বা তার বেশি গোল করতে পেরেছে (এই মৌসুমে ইতিমধ্যে ২ বার), যা কি না সংখ্যার দিক দিয়ে অন্য যেকোন ক্লাবের থেকে অন্তত ২ বেশি।
যেসকল খেলোয়াড়দের উপর সবার নজর থাকবে (Players to watch out for)
আর্লিং হাল্যান্ড – ম্যানচেস্টার সিটি (Erling Haaland – Manchester City)
ম্যানচেস্টার সিটি’র নতুন নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড আর্লিং ব্রাউত হাল্যান্ড এবারের প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমে মাত্র ৮টি ম্যাচ খেলে ইতিমধ্যে ১৪টি গোল তুলে নিয়েছেন। নিজেদের মাঠ এতিহাদ স্টেডিয়ামে তার খেলা সর্বশেষ তিনটি ম্যাচেই তিনি হ্যাট্রিক করতে সমর্থ্য হোন, যা কি না একটি বিরল রেকর্ড যা আগে কেউ তৈরি করতে পারেনি। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে ম্যানচেস্টার সিটি’র সর্বোচ্চ গোলদাতা কেভিন ডি ব্রুয়না’র গোল ট্যালিকে (১৫টি) এবারের মৌসুমে আর্লিং হাল্যান্ড (১৪টি) মাত্র ৮টি ম্যাচ খেলেই প্রায় ধরে ফেলছেন।
যুবা ও প্রতিভাবান এই স্ট্রাইকার এবারের প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমে গড়ে প্রতি ৪৮ মিনিট পর পর একটি করে গোল দিতে সক্ষম হয়েছেন। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে একটি গোলের বেশি করা যেকোন খেলোয়াড়ের জন্যই এটি সবচেয়ে বড় গোলের গড়। এছাড়া, তিনি তার করা মোট শটের ৪২% কেই গোলে পরিণত করতে পেরেছেন (৩৩টি শট, ১৪টি গোল)। ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর থেকে প্রিমিয়ার লীগে কমপক্ষে ২০টি শট করেছেন এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে হাল্যান্ডের গোল কনভার্শন রেট সবচেয়ে বেশি।
কেভিন ডি ব্রুয়না – ম্যানচেস্টার সিটি (Kevin De Bruyne – Manchester City)
ম্যানচেস্টার সিটি’র ট্যালিসমানিক মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুয়না ইতিমধ্যে এবারের মৌসুমে ৮টি ম্যাচ খেলে ৮টি এসিস্ট করে ফেলেছেন। গত মৌসুমে এই পরিমাণ এসিস্ট অর্জন করতে তার লেগেছিল ৩০টি ম্যাচ।
তিনি তার খেলা সর্বশেষ দুইট প্রিমিয়ার লীগ ম্যাচেই ২টি করে এসিস্ট করতে সক্ষম হোন — ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে সিটি’র সাবেক মিডফিল্ড জাদুকর ডেভিড সিলভা সর্বশেষ এমনটি করতে পেরেছিলেন। সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি লীগটির ইতিহাসে এমন প্রথম খেলোয়াড় হবেন যিনি পর পর তিনটি ম্যাচে ২টি করে এসিস্ট করতে সমর্থ্য হবেন।
ম্যানচেস্টার সিটি বনাম সাউথ্যাম্পটন প্রেডিকশন? (Manchester City Vs Southampton Prediction)
আমরা এই ম্যাচটিকে শুধু একটি পথেই এগুতে দেখতে পাচ্ছি। তবে, সাউথ্যাম্পটন যদি কোনভাবে এই ম্যাচটিতে অঘটন ঘটিয়ে ১টি বা ৩টি পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফিরতে পারে, তাহলে তা হবে তাদের জন্য একটি বিশাল অর্জন। আর্লিং হাল্যান্ড নিশ্চয় তৈরি হয়ে আছেন এই ম্যাচে তার গোল উদযাপন এর নতুন নতুন তরিকাগুলি নিয়ে। তাই, সেইন্টস’দের বিরুদ্ধে ম্যানচেস্টার সিটি তাদের নিজস্ব মাঠে কোনপ্রকার ভুল না করে একটি সহজ জয় তুলে নিবে, এমনটাই প্রত্যাশিত।