প্রেডিকশন (Prediction)
মরক্কো ১ – ১ পর্তুগাল (অতিরিক্ত সময় শেষে) | মরক্কো ৫ – ৩ পর্তুগাল (পেনাল্টি শুট আউট)
ভেন্যুঃ আল থুমামা স্টেডিয়াম
রাউন্ড অব ১৬ তে উভয় দলের পারফর্মেন্স বিচার করলেই বোঝা যায় যে, এবারের কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এর কোয়ার্টার ফাইনাল ফিক্সচারগুলির মধ্যে সবচেয়ে মজার ও চমকপ্রদ ম্যাচটি হতে চলেছে মরক্কো ও পর্তুগালের মধ্যে। মরক্কোকে গণ্য করা হচ্ছে এবারের টুর্নামেন্টটির ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি হিসেবে, এবং টুর্নামেন্ট শুরুর পর থেকে একটি বহিরাগত দল থেকে নিজেদেরকে শিরোপা প্রত্যাশী একটি দলে পরিণত করে ফেলেছে পর্তুগাল।
উভয় দলই খুবই গতিনির্ভর এবং আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্বাসী, এবং এমন দু’টি দল যখন একে অপরের মুখোমুখি হবে তখন কিছুটা হলেও আগুনের ফুলকি আশা করাই যায়। ইতিহাসও বলছে যে, এই ম্যাচটিতে দাঁড়িপাল্লা ভারসাম্যে অবস্থান করছে, কেননা এর আগে এই দল দু’টি ২ বার একে অপরের মুখোমুখি হয়ে উভয়েই একবার করে জয়লাভ করেছে।
ফর্ম বিবরণীঃ মরক্কো (Form Guide: Morocco)
এটলাস লায়নস খ্যাত মরক্কো এবারের বিশ্বকাপের রাউন্ড অব ১৬ এর ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়, যদিও তাদেরকে ম্যাচটির আগে আন্ডারডগ হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়েছিল। জাপানের মত করেই তারাও স্পেনের বিপক্ষে বেশির ভাগ সময় ডিফেন্সে মনযোগ দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকিং ফুটবল উপহার দেয়। তবে, ‘লা ফুরিয়া রখা’ খ্যাত স্পেন দলটি তাদের পূর্ববর্তী ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছিল, এবং নিজেদের রক্ষণভাগ কম্প্যাক্ট রেখেছিল।
এরপরেও ম্যাচটির সেরা সেরা গোলের সুযোগগুলি মরক্কোই পেয়েছিল, যা গোলের সামনে বা আক্রমণভাগে তাদের কার্যকারিতারই প্রমাণস্বরূপ। রোমান ছাইস এর নেতৃত্বে তাদের রক্ষণভাগও একান্তই সেরা ফর্মে অবস্থান করছে, এবং পর্তুগালের বিপক্ষেও তাদেরকে একই রকম ফর্মেই থাকতে হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
ফর্ম বিবরণীঃ পর্তুগাল (Form Guide: Portugal)
এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা দলগুলির মধ্যে একটি হল পর্তুগাল। গতকাল রাতে তাদের রাউন্ড অব ১৬ এর ফিক্সচারটিতে তারা একটি দিশেহারা সুইজারল্যান্ডের জালে ৬ বার বল জড়াতে সক্ষম হয়। এর আগে গ্রুপ পর্যায়ে তারা আরো ৬টি গোল করেছিল। অর্থাৎ, এ পর্যন্ত তারা টুর্নামেন্টটিতে মোট ১২টি গোল করেছে। তবে, সেই ১২টি গোলের মধ্যে কেবলমাত্র একটি এসেছে কিংবদন্তি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো’র পা থেকে।
গন্সালো রামোস এর করা অসাধারণ হ্যাট্রিক এর পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মূল একাদশে সুযোগই অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় যে, এই পর্তুগাল দলের প্রত্যেকটি খেলোয়াড়ই নিজ নিজ স্থানে অসাধারণ খেলছেন, এবং দলের যেকোন প্রান্ত থেকেই গোল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, গোলের সামনে এই দলটির কার্যকারিতাকে মাথায় রেখেই নিজেদের দল সাজাতে হবে মরক্কোকে। পর্তুগাল এবার তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠবে, যদি তারা মরক্কোকে হারাতে পারে।
ম্যাচটিতে যা যা ঘটতে পারে (How the game could go)
ম্যাচটিতে কিক অফ এর পর থেকেই একটি মানসিক লড়াই শুরু হয়ে যাবে। মরক্কো শুধু তাদের দেশের কোটি কোটি মানুষেরই নয়, বরং পুরো আফ্রিকা মহাদেশের সকল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে, এবং তাদের সকলের সম্মান রক্ষার বা বাড়ানোর দায়িত্ব এখন তাদেরই কাঁধে। মরক্কো তাই এই ম্যাচটিতে আরো একটি অঘটন ঘটানোর উদ্দেশ্যেই মাঠে নামবে।
পর্তুগালকে তাদের সর্বশেষ ম্যাচের চেয়ে এই ম্যাচটিতে মরক্কোর ডিফেন্স ভেদ করতে অনেক বেশি বেগ পেতে হবে, তবে তারা বল পজিশন নিয়ন্ত্রণ করবে। নিয়মিত ভিত্তিতে উভয় গোলকিপারকেই সেইভ করে যেতে হবে, এবং নিজ নিজ দলকে প্রতিযগিতায় বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এরপর, সবশেষে তারাই গড়ে দিবেন ম্যাচটির মূল পার্থক্য, এবং হয়ে উঠবেন ‘দ্য ডিসাইডিং ফ্যাক্টর’। ম্যাচটি পেনাল্টি শুট আউটে যাওয়ার প্রচন্ড সম্ভাবনা আমরা দেখতে পাচ্ছি, এবং তেমনটি যদি হয়, তবে সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সুবিধা পাবেন মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বুনু, যার ইতিমধ্যে নিজের দলকে একটি পেনাল্টি শুট আউট জেতানোর অভিজ্ঞতাও তৈরি হয়ে গিয়েছে।