রোনাল্ডো দে লিমা, রোবার্তো ব্যাজিও, মাইকেল ওয়েন, হামেস রদ্রিগেজ।

এদের মধ্যে এমন বেশ কিছু খেলোয়াড়দেরকে আমরা অতীতে দেখেছি বিশ্বকাপ মাতাতে, কিন্তু সেসব অসাধারণ বিশ্বকাপ পারফর্মেন্স এর পরে তারা তাদের সেই ফর্ম ঘরোয়া লীগ খেলায় আর প্রদর্শন করতে পারেননি। আবার এদের মধ্যে এমনও অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন যারা কি না সেটি করতে পেরেছেন, এবং এজন্যই বিশ্বকাপ ফুটবলকে ধরা হয় বিশ্ব ফুটবলের অজানা ও নতুন নতুন সব প্রতিভার আতুরঘর হিসেবে, যেখান থেকে বিশ্বের, বিশেষ করে ইউরোপের, বড় বড় ক্লাবগুলি নিজেদের দলের জন্য খেলোয়াড় বাছাই করে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

পূর্বের সবগুলি বিশ্বকাপ আসরের মতই, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও এমন বহু খেলোয়াড়ের দেখা মিলেছে, যাদেরকে হয়তো এর আগে কেউই চিনতো না, কিন্তু বিশ্বকাপে ভালো খেলার মাধ্যমে তারা সকলের নজর কেড়েছেন। আবার এমনও অনেকে রয়েছেন, যারা ক্লাব পর্যায়ে খুব একটা নাম না করতে পারলেও তাদের আন্তর্জাতিক পারফর্মেন্স দিয়ে সকলের মন জয় করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, এমন অনেক খেলোয়াড়ই রয়েছেন, যারা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দিলেই শুধুমাত্র নিজেদের প্রকৃত প্রতিভাটি ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

আমরা এখন এমন কিছু খেলোয়াড়দের সম্পর্কে জানব, যারা কি না এবারের কাতার বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অসাধারণ ক্রীড়ানৈপূণ্য প্রদর্শন করেছেন, এবং নিঃসন্দেহে নিজেদের বাজার মূল্য অনেকাংশেই বৃদ্ধি করে নিয়েছেন।

ইয়াসিন বুনু – মরক্কো (Yassine Bounou – Morocco)

স্প্যানিশ জায়ান্টস সেভিয়া’র এই দ্বিতীয় চয়েজ গোলকিপার আন্তর্জাতিক ফুটবলাঙ্গনে মোটেও কোন নতুন নাম নয়। কাতারে পেনাল্টি শুট আউটে তিনি যেমন পারদর্শীতা প্রদর্শন করেছেন, তা নিয়মিত ফুটবল অনুসারীদের (বিশেষ করে লা লিগা অনুসারীদের) জন্য একদমই বিষ্ময়কর কিছু নয়।

৩১ বছর বয়সী এই মরক্কান গোলকিপারের বর্তমান বাজার মূল্য হল ১৫ মিলিয়ন ইউরো, তবে বিশ্বকাপে আটলাস লায়নস’দের হয়ে তার সাহসী পারফর্মেন্স এর কারণে এখন যারাই সেভিয়ার কাছে তাকে কেনার আবদার নিয়ে যাবে, তার স্বাক্ষরটি পাওয়ার জন্য তাদের সকলকেই গুনতে হবে বড় অঙ্কের টাকা।

একটি অসাধারণ ২০২২ সাল পার করার পর কাতার বিশ্বকাপে তার পারফর্মেন্সটি ছিল যেন কেক এর উপর আইসিং এর মত। বর্তমানে তিনি সেভিয়ার প্রথম চয়েজ গোলকিপার মার্কো দিমিত্রভিচের সাথে রোটেশন পলিসিতে খেলে থাকেন। তাই, হয়তো ভালো কোন অফার পেলে তিনি সেভিয়া ছাড়তেও পারেন। বিশ্বকাপে তার অনবদ্য পারফর্মেন্স এর কারণে এখন যারাই তাকে কিনতে চাইবে, সেভিয়া নিশ্চয় তাদের সকলের কাছ থেকেই কমপক্ষে ৩০ মিলিয়ন ইউরো দাবি করে বসবে।

সোফিয়ান আমরাবাত – মরক্কো (Sofyan Amrabat – Morocco)

সোফিয়ান হলেন মরক্কো’র আরেক রত্ন নর্দিন আমরাবাতের ছোট ভাই। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলার মাধ্যমে গত এক দশকে অনুষ্ঠিত সকল বিশ্বকাপেই কোন না কোন আমরাবাতের অংশ নেওয়াটা নিশ্চিত করেছেন সোফিয়ান।

বর্তমানে তিনি ইতালিয়ান সিরি আ’র দল ফিয়োরেন্তিনা’র হয়ে খেলছেন, এবং বিশ্বকাপের পূর্বে তার বাজার মূল্য ছিল ৪ থেকে ৭ মিলিয়ন ইউরোর মাঝামাঝি। তবে, পুরো বিশ্বকাপ আসর জুড়ে আটলাস লায়নসদের হোল্ডিং মিডফিল্ড একান্তই নিজ হস্তে সামলানোর পরে এখন তাকে নিয়ে অনেক দলই টানাটানি করবে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে।

পড়ুন:  ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে প্রয়োগকৃত প্রযুক্তি: একটি গভীর বিশ্লেষণ

অনেক নামীদামী সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টেই জানা গিয়েছে যে, লিভারপুল, বার্সেলোনা, প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পার্স, এবং আটলেটিকো মাদ্রিদসহ আরো অনেক বড় বড় ক্লাবই তাকে দলে নেওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছে। তিনি নিজেই অবশ্য কোন এক সময় বলেছিলেন যে তিনি ডিয়েগো সিমিওনে’র একজন বিশাল ভক্ত। তাই, যদি ফিয়োরেন্তিনা তাকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আটলেটিকো মাদ্রিদ তাকে দলে নেওয়ার একটি চেষ্টা চালাতেই পারে।

তবে, আটলেটিকো মাদ্রিদ যদি তেমনটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েও নেয়, মাত্র ৭ মিলিয়ন বিনিময়ে তারা আটলাস লায়নস’দের অধিনায়ককে কেনার ব্যাপারে স্বপ্নেও ভাবতে পারে না। বিশ্বকাপ ফুটবলের ৯২ বছরের ইতিহাসে অন্যতম সেরা একটি গল্পের জন্ম দেওয়া আটলাস লায়নস’দের অধিনায়ককে দলে পেতে হলে তাদেরকে অবশ্যই আরো অনেক বেশি পয়সা খরচ করতে হবে।

হাকিম জিয়েশ – মরক্কো (Hakim Ziyech – Morocco)

চেলসি উইংগার হাকিম জিয়েশ অল্পের জন্য এবারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগটি হাতছাড়া করা থেকে বেঁচে গিয়েছেন, কারণ ভাহিদ হালিলোজিচ, যিনি কি না ২০২২ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত মরক্কোর হেড কোচ ছিলেন, হাকিম জিয়েশকে ছাড়াই বিশ্বকাপে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

মরক্কান’রা নিশ্চয় ওয়ালিদ রেগ্রাগুই এর নিকট চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবেন, কেননা ভেটেরান ইউক্রেনিয়ান কোচ ভাহিদ মরক্কো’র দায়িত্ব ছাড়ার পর আটলাস লায়নস’দের ডাগ আউট সামলানোর দায়িত্বটি তিনি নিজের করে নিয়েছিলেন। এরপর আরো অনেক কাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি তিনি রয়াল মরক্কান ফুটবল ফেডারেশনের সাথে হাকিম জিয়েশ এর সম্পর্কটিও মেরামত করে দেন।

এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে দর্শনীয় পারফর্মেন্সগুলির মধ্যে একটি এসেছে হাকিম জিয়েশ এর নিকট হতে। চেলসি, যারা কি না অনেকদিন ধরেই দিশেহারা হয়ে ছিল জিয়েশের ব্যাপারে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে, নিশ্চয় এখন জিয়েশকে বিক্রি করে বেশ খানিকটা অর্থ উপার্জন করতে পারবে।

বিশ্বকাপের আগে তার বাজার মূল্য ছিল মাত্র ১৫ মিলিয়ন ইউরো, তবে বিশ্বকাপের পরে এখন আর সেই দামে তাকে ছাড়তে চাইবে না চেলসি, যারা কি না ২০২০ সালে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আয়াক্স আমস্টারডাম থেকে দলে ভিড়িয়েছিল এই মরক্কানকে। তাই, আগামী মাসের ট্রান্সফার উইন্ডোটিতে যদি কোন দল তাকে কেনার আবেদন করেও, তাদের কাছে কমপক্ষে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোই দাবি করবে অল ব্লুস’রা।

ডমিনিক লিভাকোভিচ – ক্রোয়েশিয়া (Dominik Livakovic – Croatia)

একটি নয়, বরং এবারের বিশ্বকাপে দুই দুইটি পেনাল্টি শুট আউটের নায়ক হলেন ক্রোয়েশিয়ান গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ। শুধু তাই নয়, পুরো আসর জুড়েই এমন অনেক মুহূর্তে তিনি খেলার মোড় ঘুরিয়েছেন, যখন ক্রোয়েশিয়া ছিল বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার দ্বারপ্রান্তে।

তিনি তার নিজ দেশের ক্লাব ডাইনামো জাগ্রেব এর হয়ে খেলে থাকেন। তবে, এক সময় তাকে কেনার জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সে সময় তার বাজার মূল্য ছল ৫ মিলিয়ন থেকে ১০ মিলিয়ন ইউরোর মাঝামাঝি। যেহেতু তিনি এবারের বিশ্বকাপে একটি গোল্ডেন গ্লাভস পুরষ্কার জেতার উপযোগী খেলা উপহার দিতে পেরেছেন, সেহেতু তার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের ধারণা। অর্থাৎ তার জন্য অনুরাগী যেকোন ক্লাবকেই তার স্বাক্ষরটি পাওয়ার জন্য গুণতে হবে কমপক্ষে ৩০ মিলিয়ন ইউরো।

পড়ুন:  কেন প্রিমিয়ার লীগের রেফারিদের ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠছে?

তিনি এবারের বিশ্বকাপে তার দলকে শুধুমাত্র দুইটি পেনাল্টি শুট আউটেই জেতাননি, বরং অন্যান্য সকল ম্যাচেই তার পারফর্মেন্স ছিল দূর্দান্ত। পেনাল্টি শুট আউট বাদেও তিনি এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেইভ করেছেন। তবে, তিনি যদি সেই গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কারটি অর্জন নাও করতে পারেন, খুব শীঘ্রই তার বাজার মূল্য ৫০ মিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছে যাবে বলেই অনেকের ধারণা। এটিও কোন অংশেই তার জন্য ছোট কোন প্রাপ্তি নয়।

ইয়োস্কো গেভার্দিওল – ক্রোয়েশিয়া (Josko Gvardiol – Croatia)

জার্মান বুন্দেসলিগায় রেড বুল লাইপজিগ এর হয়ে ধারাবাহিকভাবে অসাধারণ ক্রীড়ানৈপূণ্য প্রদর্শন করে আসায় গেভার্দিওলকে এবারের বিশ্বকাপের আগেই অনেকে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর দাবিদার একজন ডিফেন্ডার হিসেবে দেখছিলেন। যদিও তার জন্য আগ্রহী কোন ক্লাবই সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে তাকে দলে নিতো না, তবুও যদি আরবি লাইপজিগ তাকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতো, তাহলে তার বিনিময়ে তারা খুব সহজেই কমপক্ষে ৫০ মিলিয়ন ইউরো কামিয়ে নিতে পারতো।

গত মঙ্গলবার কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এর সেমি ফাইনালে লিওনেল মেসি যখন তাকে নিরলসভাবে খাটিয়ে এবং তাকে ড্রিবল করে বল নিয়ে গিয়ে একটি অসাধারণ গোল তৈরি করে দিয়েছিলেন, তখন অনেকেই মজা করে বলেছিলেন যে, এবার বুঝি গেভার্দিওলের বাজার মূল্য পূর্বের তুলনায় অর্ধেক হয়ে যাবে। তবে, সেসকল হাস্যরসাত্মক কথায় কান দেওয়ার আগে সকলকে এ ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে হবে যে, সেই একটি মুহূর্ত বাদ দিলে এবারের পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই একদম নিখুঁত ফুটবল খেলেছেন তিনি।

মেসি’র কারণে গেভার্দিওলের বাজার মূল্য অর্ধেক হয়েছে কি না তা কয়েক মাসের মধ্যেই তার জন্য ধরা অসংখ্য বড় মাপের ক্লাবের লাইন এবং আরবি লাইপজিগ এর ব্যাংক ব্যালেন্স দেখলেই বোঝা যাবে।

এলেক্সিস ম্যাকআলিস্টার – আর্জেন্টিনা (Alexis MacAllister – Argentina)

মাত্র ২৩ বছর বয়সী এলেক্সিস ম্যাকআলিস্টার বেশ পারদর্শীতার সাথেই তার বাবা কার্লোস ম্যাকআলিস্টারের পদচিহ্ন অনুসরণ করে চলেছেন। তার বাবা যেভাবে অনেক বছর আগে আর্জেন্টিনা দলে ডিয়েগো মারাডোনার ডানহাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন, ঠিক যেন সেভাবেই এবারের বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন এলেক্সিস ম্যাকআলিস্টার।

অনেক বছর পূর্বের সেই বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন দলে একজন বয়স্ক ডিয়েগো মারাডোনার হেল্পিং হ্যান্ড হয়েছিলেন কার্লোস ম্যাকআলিস্টার। ঠিক একইভাবে এবারও ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে খেলছেন আরেক আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি, এবং তার হেল্পিং হ্যান্ড হয়েছেন কার্লোসপুত্র এলেক্সিস। ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়নের এই মিডফিল্ডার এখন আর্জেন্টাইন স্কোয়াডে মেসি’র অন্যতম পছন্দের সতীর্থে পরিণত হয়েছেন, এবং আর্জেন্টাইন নাম্বার ১০ তাকে খুব যত্নের সাথেই প্রতিরক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে এলেক্সিস অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে মাঠের খেলায় নিজেকে উজাড় করে দিতে পারছেন।

এর ফলেই তিনি বিশ্বকাপে একটি গুরুত্বপূর্ণ গোল করতে সক্ষম হয়েছেন, এবং মূল একাদশে এখন তার নামটি একরকম অবধারিতই হয়ে পড়েছে। বিশ্বকাপের আগে তার বাজার মূল্য যেখানে ৮ মিলিয়ন ইউরোর আশেপাশে ছিল, সেখানে অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই তার বাজার মূল্য এখন ২৫ মিলিয়ন ইউরোর কাছাকাছি হওয়ার কথা। তবে, বর্তমান ফুটবল বাজার খুবই আনপ্রেডিক্টেবল হওয়ায়, এবং টটেনহ্যাম হটস্পার্স ও চেলসি’র মত ক্লাবগুলি ম্যাকআলিস্টারের প্রতি ইন্টারেস্ট দেখানোয়, এখন তার মূল্য ৪০ মিলিয়ন ইউরোর সীমাটিও পার করে যেতে পারে।

পড়ুন:  কোপেনহেগেন বনাম ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচ রিপোর্ট

হুলিয়ান আলভারেজ – আর্জেন্টিনা (Julian Alvarez – Argentina)

এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অন্যতম নায়ক হুলিয়ান আলভারেজ বর্তমানে তার ইউরোপীয় যাত্রার একদম প্রাথমিক পর্যায়ে অবস্থান করছেন। কেবলমাত্র গত গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতেই তিনি আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভারপ্লেট থেকে মাত্র ১৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে পাড়ি জমিয়েছেন।

এটি একদমই আশা করা যায় না যে, ম্যানচেস্টার সিটি’র মত একটি ক্লাব তাকে এত তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দিবে। তবে, বিশ্বকাপে তার দূর্দান্ত সব পারফর্মেন্স এর পর এবং তার ইউরোপীয় যাত্রায় একটি অনবদ্য সূচনা করার পর, অনেক বিশেষজ্ঞের মতেই তার বাজার মূল্য এখনি ৫০ মিলিয়ন ইউরোর কোঠা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

আশরাফ হাকিমি – মরক্কো (Achraf Hakimi – Morocco)

বর্তমানে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সেরা রাইট ব্যাক’দের মধ্যে একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন আশরাফ হাকিমি। এরই মধ্যে তিনি রিয়াল মাদ্রিদ, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, ইন্টার মিলান এর মত ক্লাবসমূহে খেলে ফেলেছেন, এবং বর্তমানে মেসি, এমবাপ্পে, নেইমারদের সাথে পিএসজি’তে খেলছেন।

যেহেতু তিনি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি ক্লাবে খেলছেন, সেহেতু খুব জলদি তার ফ্রেঞ্চ রাজধানী ছাড়ার সম্ভাবনা কেউই দেখছেন না। তবে, তার নিজের এবং তার দেশের জন্য এতটা দূর্দান্ত একটি বিশ্বকাপ আসর পার করার পর এখন যদি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই তাকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়ও, সেক্ষেত্রেও তারা ৮০ মিলিয়ন ইউরোর নিচে কোন বিড আমলেই নিবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এই অঙ্কটি আরো উপরের দিকেই যেতে পারে বলেও তারা অভিহিত করেছেন।

আজেদিন উনাহি – মরক্কো (Azzedine Ounahi – Morocco)

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর হয়ে অতি চমৎকার সব পারফর্মেন্স উপহার দেওয়ার পরে আজেদিন উনাহি রাতারাতি কেবলমাত্র ফ্রেঞ্চ ফুটবলের তৃতীয় টিয়ারে খেলা একজন মামুলি খেলোয়াড় থেকে এমন একজন খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন, যাকে দলে নেওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছে স্বয়ং স্প্যানিশ জায়ান্টস বার্সেলোনা। 

এঞ্জারস এফসি’তে খেলা ২২ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এবারই কেবলমাত্র তার প্রথম টপ ফ্লাইট মৌসুম পার করছেন, এবং এখনি তিনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে এসে বিশ্বের সবচেয়ে নামীদামী খেলোয়াড়দেরকে টক্কর দিতে সক্ষম হয়েছেন। 

২০২১ সালে যখন তিনি এঞ্জারস এফসি’তে যোগ দিয়েছিলেন, তখন ফ্রান্সের ক্লাবটিকে তার জন্য খরচ করতে হয়েছিল মাত্র ২ মিলিয়ন ইউরো। তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র বিশ্বকাপে দূর্দান্ত ক্রীড়ানৈপূণ্য প্রদর্শনের কারণেই বর্তমানে তার বাজার মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ মিলিয়ন ইউরোতে, যা অদূর ভবিষ্যতে আরো অনেকটাই বাড়তে পারে বলেও তারা ধারণা করছেন।

Share.
Leave A Reply