প্রেডিকশন (Prediction)
লিভারপুল ২ – ২ চেলসি
এমন দুইটি দল যারা প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের ২য় ও ৩য় স্থানে থেকে, এবং এবারের মৌসুমে আরো উন্নতি করার লক্ষ্য নিয়ে গত মৌসুম শেষ করেছিল, চলতি মৌসুমের মাঝ পর্যায়ে এসে নিজেদেরকে প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের যথাক্রমে ৮ম ও ৯ম স্থানে আবিষ্কার করতে পারছে।
উভয় দলই শীর্ষ চার থেকে ১০ পয়েন্টের দূরত্বে অবস্থান করছে, এবং উভয়কেই সেখানে পৌঁছাতে হলে পাহাড় অতিক্রম করতে হবে। তবে, এই ম্যাচটিতে যে দল জিততে পারবে, তাদের জন্য বাকি মৌসুমে ভালো করার একটি আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েও যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ (Key notes)
- এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে লিভারপুলের রেকর্ড বেশ ভালোই, কেননা বর্তমানে শুধুমাত্র শীর্ষ চারে অবস্থানকারী দলগুলিই তাদের চেয়ে বেশি হোম পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া, তারা এনফিল্ডে মোট ২৩টি গোল স্কোর করেছে, যা কি না বর্তমান মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগের তৃতীয় সর্বোচ্চ হোম গোল ট্যালি।
- চেলসি তাদের খেলা সর্বশেষ ৫টি অ্যাওয়ে প্রিমিয়ার লীগ ম্যাচের মধ্যে ৩টিতেই পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে, এবং সেই যাত্রায় তারা মোট ৮টি গোলও হজম করেছে।
ফর্ম বিবরণীঃ লিভারপুল (Form Guide: Liverpool)
অ্যামেক্স স্টেডিয়ামে লিভারপুলের সফরটি তাদের আশানুরূপ যায়নি, এবং সেখানে ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়ন তাদেরকে এক কথায় শাসন করে পরাজিত করে। রোবার্তো ডি জার্বি’র দলটি সেদিন ৩-০ গোলে অল রেডস’দেরকে হারায়। যেহেতু, আরেকটি স্ট্রাগলিং জায়ান্ট চেলসি তাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ, তাই লিভারপুল চাইবে যেন এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই তারা তাদের দুই ম্যাচের পরাজয়ের ধারা ভঙ্গ করে জয়ের পথে ফিরতে পারে।
লিভারপুলের স্কোয়াড, বিশেষ করে তাদের মিডফিল্ড এবং আক্রমণভাগ, ইঞ্জুরির কারণে এখনো অনেকটাই দূর্বল, তবে তারা এটিই আশা করবে যেন কোন না কোন উপায়ে তারা গোলের দেখা পায়। তাদের উদ্দেশ্যই থাকবে এসকল ম্যাচ থেকে যত সম্ভব পয়েন্ট হাসিল করে নেওয়া, এবং শীর্ষ চারের সাথে তাদের দূরত্বটিকেও যতটুকু সম্ভব কমিয়ে নেওয়া, যাতে করে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু খেলোয়াড় ইঞ্জুরি থেকে ফিরে এসে মৌসুমের শেষের দিকে তাদেরকে শীর্ষ চারের দিকে ধাবিত করতে পারে।
ফর্ম বিবরণীঃ চেলসি (Form Guide: Chelsea)
গত মিডউইকে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ১-০ গোলে হারানোর মধ্য দিয়ে গ্রাহাম পটারের শিষ্যরা টানা তিনটি পরাজয়ের একটি ধারাকে ভঙ্গ করেছে। সেই জয়টি তাদের জন্য যতটা না গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারেন তাদের নতুন সাইনিং ইউক্রেনিয়ান ফরোয়ার্ড মিখাইলো মুদ্রিক, যাকে পাওয়ার জন্য আর্সেনালও উদগ্রীব ছিল।
অল ব্লুস’রা চাইবে যেন তাদের এই ২২ বছর বয়সী নতুন সাইনিং খুব সময়ের মধ্যেই খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, এবং আগামী শনিবারে লিভারপুলের বিপক্ষেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
লিভারপুল বনাম চেলসি সম্পর্কিত কিছু তথ্য (Liverpool Vs Chelsea Facts)
- গত মৌসুমে যখন প্রিমিয়ার লীগে এই দুই দল এনফিল্ডে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন সেই ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। ম্যাচটির প্রথমার্ধে কাই হ্যাভার্টজ চেলসিকে এগিয়ে দিলেও হাফ টাইমের একটু আগেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রিস জেমস। তার করা ফাউল থেকেই পেনাল্টি পায় লিভারপুল, এবং সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে খেলায় সমতা আনেন মোহাম্মদ সালাহ্।
- গত মৌসুমের সেই ড্র’টির আগে এই দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ দুই ম্যাচের মধ্য থেকে উভয় দলই একটি করে ম্যাচে জয়লাভ করে।
যেসকল খেলোয়াড়দের উপর সবার নজর থাকবে (Players to watch out for)
মোহাম্মদ সালাহ্ – লিভারপুল (Mohamed Salah – Liverpool)
লিভারপুলের আক্রমণভাগের প্রায় সম্পূর্ণ চাপই এখন এসে পড়েছে মোহাম্মদ সালাহ্ এর ঘাড়ে, এবং তিনিই হলেন বর্তমানে অল রেডস’দের দলে এমন একমাত্র ফিট খেলোয়াড় যার নিকট চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে ২টির বেশি গোল রয়েছে।
এবারের মৌসুমে তিনি এ পর্যন্ত ৭টি গোল করেছেন, কিন্তু তার খেলা সর্বশেষ ৩টি প্রিমিয়ার লীগ ম্যাচে তিনি গোলের দেখা পাননি। চেলসি’র বিপক্ষে অল রেডস’দের জিততে হলে মোহাম্মদ সালাহ্কে আবারও ফর্মে ফিরতে হবে।
কাই হ্যাভার্টজ – চেলসি (Kai Havertz – Chelsea)
জার্মান এই ফরোয়ার্ডকে এবারের মৌসুমে চেলসি’র অসফল আক্রমণাভাগের একমাত্র উজ্জ্বল তারকা বলা যেতে পারে। ফর্মের দিক দিয়ে খুব বেশি ধারাবাহিক না হলেও, তার প্রতিভার বেশ খানিকটা ঝলক তিনি কিছু মুহূর্তে দেখিয়েছেন।
চেলসি’র সর্বশেষ ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেস এর বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটিও তিনিই করেছিলেন। সেই গোলটির মধ্যে দিয়ে তার এই মৌসুমের লীগ গোল ট্যালি পৌঁছালো ৫ এ।
এনফিল্ডে চেলসি’র সর্বশেষ সফরেও তিনিই অল ব্লুস’দের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছিলেন, এবং এবারও তেমনি কিছু একটা করে তিনি আবারও সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
লিভারপুল বনাম চেলসি প্রেডিকশন (Liverpool Vs Chelsea Prediction)
আমরা এই ম্যাচটির জন্য একটি ২-২ গোলের ড্র প্রেডিক্ট করছি, কেননা উভয় দলের রক্ষণভাগই সাম্প্রতিক সময়ে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে, এবং এই ম্যাচেও সেটি স্পষ্ট দেখা যাবে বলেই আমরা মনে করি। আমরা আরও মনে করি যে, এই ম্যাচটিতে উভয় দিক থেকেই গোলের বন্যা বইবে, যা নিরপেক্ষ দর্শকদেরকে অনেক আনন্দ দিতে সক্ষম হবে।
এই ম্যাচটিতে একটি ড্র হওয়ার মানে হল এই যে, ম্যাচের পরেও উভয় দল সমান সমান পয়েন্টে অবস্থান করবে, এবং সেদিনের অন্যান্য ম্যাচগুলির ফলাফলের উপর নির্ভর করে তাদের লীগ পজিশন আরো নিচের দিকেও ধাবিত হতে পারে। উভয় দলেরই শীর্ষ চারে প্রবেশের সম্ভাবনা তাই দিন দিন কমেই যাচ্ছে।