ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এখন তাদের নতুন কোচ এরিক তেন হাগের অধীনে আরো একটি রিবিল্ডিং প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে। গত বেশ কিছু বছর ধরে, বিশেষ করে স্যার আলেক্স ফার্গুসন দলটির দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নতুন খেলোয়াড়দের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা সত্ত্বেও প্রিমিয়ার লীগে তাদের সরাসরি প্রতিদ্বন্দীদের (যেমন ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, চেলসি ইত্যাদি) খেলার গুনমানের ধারেকাছেও ভিড়তে পারছে না। স্যার আলেক্স ফার্গুসন অবসর নেওয়ার পর থেকে পরবর্তী মৌসুমসহ চারটি মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়নস লীগে নিজেদের নাম লিখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এখন ভাবলে মনে হয়, এ যেন কয়েক দিন আগেরই কথা যখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভক্ত সমর্থকরা জয় ছাড়া কিছু বুঝতোই না। পরাজয়ের স্বাদ যেন তারা ভুলতেই বসেছিল! সাবেক এবারডিন ম্যানেজার ফার্গুসনের হাত ধরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হয়ে উঠেছিল ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব, এবং সারা বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত এবং জনপ্রিয় ক্লাবগুলির একটি। তারা যেমন ফুটবল খেলতো এবং যেমন দাপটের সাথে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা জিতে নিত তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তারা কি সাফল্যের সেই চূড়ায় আবারো পৌঁছাতে পারবে?
এই প্রশ্নটির উত্তর সম্পূর্ণ ফুটবল সমাজকেই দুই ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছে। তবে, এটি তাদের জন্য খুবই চিন্তার বিষয় যে, যত না বেশি কারণ আছে তাদের সাফল্যের দিনগুলি ফিরে পাওয়ার, তার চেয়ে বেশি কারণ খুঁজে পাওয়া যায় এই ব্যাপারে যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভাগ্যেও তেমনই রয়েছে যেমনটি ছিল নটিংহ্যাম ফরেস্ট বা এস্টন ভিলার মত সাবেক ইংলিশ জায়ান্টদের কপালে। যদি বর্তমানের ম্যান ইউনাইটেড এবং স্যার আলেক্স ফার্গুসনের সময়কালের শেষের দিকের ম্যান ইউনাইটেডের মধ্যে একটি ব্যাপারে মিল থেকে থাকে, তবে তা হচ্ছে তাদের মালিকদের (গ্লেজার পরিবার) প্রতি তীব্র ঘৃণা।
২০১৩ সালে শুধুমাত্র স্কটিশ ভদ্রলোক ফার্গুসনই ক্লাবটিকে ছাড়েননি, বরং তার পাশাপাশি ডেভিল গিলকেও বিদায় জানাতে হয়েছিল রেড ডেভিলদের। তাই এরপর থেকে ক্লাবটিকে কেন্দ্র করে সকল ব্যবস্থাপনা এবং ট্রান্সফার বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা চলে যায় এড উডওয়ার্ডের হাতে, যিনি হলেন কি না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বা সিইও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পূর্বে এড উডওয়ার্ড কোন ইউরোপীয় দলেই ফুটবল বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মত কোন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন না। কিন্তু তারপরেও সে সময়ের ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাবের সকল ফুটবল বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও দায়িত্ব তার উপরেই সমর্পণ করা হয়।
তখন থেকে আজ অবধি এই তিন বারের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নরা শুধু একের পর এক বাজে সাইনিংই করায়নি, বরং তার সাথে সাথে অনেক ম্যানেজারদেরও দলে এনেছে, কিন্তু পরবর্তীতে তাদের উপর আর আস্থা ধরে রাখতে পারেনি, এবং তাদেরকে দলটি রিবিল্ড করার জন্য যথেষ্ট সময় বা সুযোগ না দিয়েই পদচ্যুত করেছে। স্যার আলেক্স ফার্গুসনের যোগ্য উত্তরসুরী যাকে ধরা হয়েছিল, সেই ডেভিড ময়েসকে ম্যান ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ কেবলমাত্র এক বছরই সময় দিয়েছিল নিজেকে প্রমাণ করার দলটির প্রধান কোচ হিসেবে, এবং যখন তিনি সেই এক বছরের মধ্যে কোন সাফল্য এনে দিতে পারেননি, তখন সাথে সাথেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। ময়েসের অধীনে একমাত্র গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে গুজব ছড়িয়েছিল যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিনতে যাচ্ছে সেস্ক ফ্যাব্রিগাস এবং টনি ক্রুস এর মত খেলোয়াড়দের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গিয়ে তারা যে খেলোয়াড়টিকে প্রচুর দাম দিয়ে কিনতে সমর্থ হয় তিনি হলেন ময়েসের সাবেক দল এভারটন থেকে আসা বেলজিয়াম মিডফিল্ডার ম্যারুয়েন ফেলাইনি।
দলটির প্রধান একাদশ নিয়ে অব্যবস্থাপনা চলতে থাকে লুইস ভ্যান গাল এবং হোসে মোরিনহোর সময়েও। ২০১৪ সালে তাদের অনেক অনেক খেলোয়াড় ক্লাব ছেড়ে চিলে গিয়েছে, কিন্তু যেসকল খেলোয়াড়দেরকে তারা লক্ষ্য বানিয়েছিল ট্রান্সফারের জন্য তার মধ্যে কোনটিই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়নি। এঞ্জেল ডি মারিয়া ব্রিটিশ ক্লাব ট্রান্সফার রেকর্ড ভেঙেচুড়ে চুরমার করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন। তবে, ডি মারিয়া’র ইচ্ছা সবসময়ই ছিল ফ্রেঞ্চ লীগে খেলার এবং ফ্রান্সে বসবাস করার। তার এই স্বপ্ন পূরণ হতে মাত্র এক বছরই লেগেছিল, কারণ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে তিনি একদমই খাপা খাইয়ে নিতে পারছিলেন না। এই সুবাদে ডি মারিয়া যোগ দেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই নামক ফরাসি ক্লাবে, এবং কয়েক বছরের মধ্যেই জিতে নেন বেশ কিছু শিরোপাও।
একইভাবে ইউনাইটেডের কেনা আরেকজন দামী খেলোয়াড় ছিলেন কলোম্বিয়ান ফরোয়ার্ড রাদামেল ফ্যালকাও। কিন্তু তিনিও ডি মারিয়ার মতই দলটির উপর কোন প্রকার ভালো প্রভাব ফেলতেই ব্যর্থ হোন। এবং, এ জন্যই ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে কেনা উভয় খেলোয়াড়ই এক বছরের মাথায়ই দলটি ছেড়ে চলে যান। তবে, লুইস ভ্যান গাল চেয়েছিলেন ক্লাবটির ভক্তদের কিছুটা আনন্দ দিতে, এবং সেজন্য তিনি বেশ কিছু যুবা খেলোয়াড়দের সুযোগ দিয়েছিলেন প্রথম একাদশে। এই সুবাদে এন্থোনি মারশিয়াল এবং মার্কাস র্যাশফোর্ড নিয়মিত মূল একাদশে খেলতে শুরু করেন, এবং তাদের অ্যাটাকিং প্রতিভা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেন।
যখনই মনে হচ্ছিল যে এসকল যুবা তারকাদের খেলিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার পথে এগিয়ে চলেছে, ঠিক তখনই দলটি কিছু খারাপ ফলাফলের মধ্য দিয়ে যায়, এবং এমন কয়েকটি ফলাফলের পরই ডাচ কোচ ভ্যান গাল হোসে মোরিনহোর কাছে নিজের চাকরিটি হারান। ইয়াং খেলোয়াড়দের নিয়ে দল সাজানোতে পর্তুগীজ কোচ হোসে মোরিনহোর চেয়ে কম পারদর্শী বুঝি বর্তমান ফুটবল জগতে আর কেউ নেই। কিন্তু, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ কেন তাকে নিয়োগ দিয়েছিল তা বুঝতে পারাও তেমন কোন কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয় — তাদের দরকার ছিল তাৎক্ষনিক সাফল্য, আর অনেক অনেক শিরোপা।
স্যার আলেক্স ফার্গুসন অবসরে যাওয়ার পর থেকেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একটি কাজ করেছে, এবং তা হল চ্যাম্পিয়নস লীগে কোয়ালিফাই করার পরও তাদের ম্যানেজারদের চাকরিচ্যুত করা। কারণ খুবই সহজ — তারা বড় বড় শিরোপাগুলিতে শুধু অংশগ্রহণ করতে চায় না, বরং জিততে চায়। তবে, লুইস ভ্যান গাল ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়নস লীগে কোয়ালিফাই করার পর তিনি যেসকল খেলোয়াড়দের কিনতে চেয়েছিলেন, তাদেরকে কিনতে অবশ্য দেয়নি ইউনাইটেডের ম্যানেজমেন্ট। আবার পরের মৌসুমে হোসে মোরিনহোর অধীনে যখন তারা ইউরোপা লীগ জিতে, তারপর তিনি দলের অতিরিক্ত কিছু খেলোয়াড়দের ছাঁটাই করতে চাইলে তাও করতে দেননি এড উডওয়ার্ড এবং ইউনাইটেডের ম্যানেজমেন্ট। তার পাশাপাশি, সেবারের ট্রান্সফার উইন্ডোতে মাত্র তিনজন খেলোয়াড়কে কেনা কখনোই যথেষ্ট ছিল না ইউনাইটেডকে লীগ টেবিলের ৬ষ্ঠ পজিশন থেকে ১ম পজিশনে আনার জন্য।
সেই সময়ে স্কাই স্পোর্টসের কাছে দেওয়া তার এক সাক্ষাৎকারে হোসে মোরিনহো বলেন, “আমি ইউরোপের চারটি ভিন্ন ভিন্ন দেশ জুড়ে মোট ৮টি লীগ শিরোপা জিতেছি। কিন্তু, এটি আমি আজ বলতে চাই যে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে প্রিমিয়ার লীগে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করানো ছিল আমার কোচিং জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন।”
যখন মোরিনহোর মত একজন সিরিয়াল উইনার এই ধরনের কিছু বলেন, তখন বোঝাই যায় যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর্দার পেছনের লোকগুলি কিছু তো একটা ভুল করে যাচ্ছেন গত কয়েক বছর ধরে। ২০১৯/২০ মৌসুম শেষে অলে গানার সলসকিয়ের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে লীগ টেবিলের ৩য় স্থানে অধিষ্ঠিত করতে সমর্থ্য হোন। কিন্তু তার পরের ট্রান্সফার উইন্ডোতে তাকে এনে দেওয়া হয় দুইজন খেলোয়াড় — এডিনসন কাভানি এবং ডনি ভ্যান ডে বিক — যাদেরকে কখনোই তিনি ফলে নিতে চাননি। যদিও পরবর্তী মৌসুমে ম্যান ইউনাইটেড তাদের খেলায় কিছুটা উন্নতি সাফহন করতে সক্ষম হয়, তবুও ট্রান্সফার কেন্দ্রিক নানা সমস্যায় জর্জরিত থেকেই যায় ক্লাবটি।
২০২১ এর প্রিসিজনের সময়ে অলে গানার সলসকিয়ের এর সহকারী, মাইক ফেলান, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কর্তৃপক্ষকে জানান দেন যে, সাবেক এই কার্ডিফ কোচ চান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলুক, এবং তা সফল করার উদ্দেশ্যে তাদের একজন বিশ্বমানের ডিপ-লাইং মিডফিল্ডার দরকার। তাদের এসব চাহিদা শোনা তো দূরে থাক, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কর্তৃপক্ষ তাদের নিজেদের ইচ্ছামত খেলোয়াড় কিনতে থাকে, এবং তারই জের ধরে তারা দলে ফিরিয়ে আনে তাদের সূর্য সন্তান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। এক দিক থেকে দেখলে, যদি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ক্লাবে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে তাকে প্রত্যাখ্যান করাও বেশ কঠিন একটি বিষয়। কিন্তু ফুটবলে, এবং বিশেষ করে প্রিমিয়ার লীগের মত কঠিন লীগে, এটি মনে রাখতেই হবে যে, একজন খেলোয়াড় এর চেয়ে অবশ্যই ক্লাব বড়।
পুরো মৌসুমজুড়েই ম্যান ইউনাইটেডের ভালো মিডফিল্ডারের কমতি যেন বার বার সবার চোখেই বিঁধছিল। তাদের মধ্যভাগের অবস্থা এতটাই বাজে ছিল যে, এমন সব ক্লাব যারা সিজন শেষে রেলিগেটেড হয়ে গিয়েছে, তারাও রেড ডেভিলদের মিডফিল্ডে ডমিনেট করে খেলেছে। পৃথিবীতে এমন অনেক ক্লাব রয়েছে যারা তাদের সকল সাইনিং এর পূর্বে শুধুমাত্র ম্যানেজারের কাছে কিছু মন্তব্য জানতে চান, যেমনটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও হয়ে থাকে। কিন্তু, এমনভাবে যেসকল ক্লাবে ট্রান্সফার করানো হয়, সেসব ক্লাবের একটি মজবুত এবং দায়িত্ববান স্কাউটিং নেটওয়ার্কও থাকতে হয়, যা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে বর্তমানে অনুপস্থিত।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্কাউটিং নেটওয়ার্কে এখনো সেসকল কর্মকর্তারাই কাজ করে চলেছেন যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তেন হাগ ম্যানেজারের দায়িত্ব নেওয়ার আগে আসা ৪ জন ম্যানেজার। এ জন্যই এটি হলপ করে বলা যায় যে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্কাউটিং নেটওয়ার্ক এর অবস্থা তাদের সম্পূর্ণ প্রথম একাদশের অবস্থার চেয়েও হযবরল।
যদি আমরা ইউরোপ জুড়ে ২০২১-২২ মৌসুমের সবচেয়ে বেশি অর্থ আয়কারী দশ জন ফুটবলারের তালিকার দিকে তাকাই, তাহলে আমরা দেখতে পাব যে, সেই তালিকার ৫জন খেলোয়াড়ই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেন। স্যার আলেক্স ফার্গুসনের অধীনে ম্যান ইউ কেবলমাত্র একবারই তাদের বেতনের কাঠামোটি ভেঙেছিল, এবং সেটিও রয় কিন এর মত একজন বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড়ের জন্য, যাকে দলটির অধিনায়কের পদবী থেকে তার অবসরের আগে কেউ নামাতে পারেনি। আর এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এই মৌসুমের অনেক চ্যাম্পিয়নস লীগ এবং প্রিমিয়ার লীগ জয়ী খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন সিয়ানিং জ্যাডোন স্যাঞ্চো।
২০১৪ সালে ওয়েইন রুনিকে দেওয়া মাল্টি মিলিয়ন ডলার চুক্তিটির পর থেকেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বেতন কাঠামো পুরোপুরিভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছে। এরপর আমরা দেখেছি যে, ২০১৮ সালে ইউনাইটেডের নতুন সাইনিং এলেক্সিস স্যাঞ্চেজ তার প্রথম চুক্তিতেই পেয়েছেন ৫০০,০০০ ইউরোর সাপ্তাহিক বেতন। ক্লাবটির এই বদ অভ্যাস তখন থেকেই তাদেরকে আঁকড়ে ধরে আছে। যেহেতু তাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শুধু একটি অসম্ভবপ্রায় গ্যালাক্টিকো বানানোর জন্যই খেলোয়াড় কিনে আসছে, তাই আমরা মনে করি নতুন ম্যানেজারের অধীনেও তাদের সেই অভ্যাসটি পরিবর্তন হবে না।
২০২২-২৩ মৌসুমের প্রাককালে এসে দেখা যাচ্ছে যে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের সর্বশেষ প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জেতার পর থেকে ১০ বছর কেটে গিয়েছে, এবং তারা সর্বশেষ যেকোন শিরোপা জেতার পরও কেটে গিয়েছে ৫টি বছর। তবে, তারা যদি লিভারপুলের মত কিছুটা সময় নিয়ে দল সাজাই এবং শেষ পর্যন্ত গিয়ে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়, তাহলে আবার সবাই এইসব খারাপ দিনের কথা ভুলে গিয়ে শুধু তাদের অসাধারণ ক্রীড়ানৈপূণ্যের গুণগানই করবে। কিন্তু, বর্তমান প্রেক্ষাপটে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলার মান, তাদের সাইনিং সমূহের মান এবং একটি বিখ্যাত ক্লাব হিসেবে তাদের ভাবমূর্তি সবকিছুই যেন নিচের দিকেই নেমে যাচ্ছে, এবং তা অদূর ভবিষ্যতে পরিবর্তনের কোন আশা কমপক্ষে আমরা তো দেখতে পাচ্ছি না। এখন আগামী কয়েক মৌসুমে তাদের ফলাফলই বলে দিবে যে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটির ভাগ্যও নটিংহ্যাম ফরেস্ট বা এস্টন ভিলাদের মত হয় কি না।