ফুটবল খেলায় গোলকিপারের পজিশনটি হল এমন একটি পজিশন যেটিকে ফুটবল ভক্ত ও অনুরাগীরা প্রায়শই ছোট করে দেখে থাকেন এবং যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন না। কেউ কেউ আবার এমনটিও মনে করেন যে, গোলকিপাররা পূর্ণাঙ্গ ফুটবলারই নন, বরং তারা শুধু গোলের সামনে দাঁড়িয়েই থাকেন প্রতিপক্ষের অ্যাটাকারদের শট রুখে দেওয়ার জন্য। তবে যাই হোক, সেগুলি হল বোকা মানুষদের কথা। যদি প্রকৃত চিত্রের দিকে তাকানো হয়, তাহলে দেখা যায় যে, গোলকিপাররা হলেন তাদের দলের একটি অপরিহার্য অংশ, এবং প্রিমিয়ার লীগের মত প্রতিযোগিতাময় একটি লীগে তাদের গুরুত্ব আরো বহু অংশে বেড়ে যায়। সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, গোলকিপিং এর জন্য দরকার হয় অন্যান্য পজিশনের খেলোয়াড়দের চেয়ে অধিক ধৈর্য্য, মনযোগ, এবং মানসিক শক্তি। গোলপোস্টের নিচের জীবন মোটেও ততটা সহজ নয় যতটা সাধারণ মানুষ ভেবে থাকেন।
বছরের পর বছর ধরে বহু কিংবদন্তি গোলকিপারই গোলের সামনে তাদের মহিমা দেখয়ে এসেছেন। বিশ্বখ্যাত সব স্ট্রাইকাররাই তাদের ক্যারিয়ারে আরো অনেক বেশি গোল করতে সক্ষম হতেন, যদি না সেসকল অনবদ্য গোলকিপাররা তাদেরকে রুখে না দিতো। শুধু তাই নয়, একটি দলের সম্পূর্ণ ডিফেন্স বা রক্ষণভাগকে তার প্রকৃত গঠন ধরে রাখার ক্ষেত্রেও সেই দলের গোলকিপারের কৃতিত্ব অওরিসীম হয়ে থাকে। সকল গোলকিপারকেই আমরা দেখেছি তাদের সামনে থাকা ডিফেন্ডারদের উপর চিৎকার করতে। এছাড়া, অনিবার্য গোলের হাত থেকে দলকে রক্ষা করার ক্ষেত্রেও তাদের কোনই জুড়ি নেই।
পিটার স্মাইকেল, ডেভিড সিম্যান, এডউইন ভ্যান ডার সার, এবং পিতর চেক প্রমুখ হলেন প্রিমিয়ার লীগ ইতিহাসের সবচেয়ে সফল গোলকিপারদের মধ্যে অন্যতম। শুধু তাই নয়, গোলকিপারদের সম্বন্ধে মানুষের সাধারণ ধারণা ভেঙে পুরোপুরিভাবে তাদের সম্মান ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এসকল গোলকিপারদের অনেক বড় হাত রয়েছে। গোলকিপাররা এখন আউটফিল্ড খেলোয়াড়দের চেয়ে কোন অংশেই কম নন। কে ভুলতে পারে হোসে মোরিনহোর অধীনে সেই অনবদ্য চেলসি দলের কথা, যেখানে গোলকিপার পিতর চেক তার দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলির পরিচয় দিয়ে পুরো মৌসুমে মাত্র ১৫টি গোল হজম করেন। তার সেই রেকর্ডটি এখনো প্রিমিয়ার লীগের কোন গোলকিপারই ভাঙতে পারেননি।
এছাড়া ফুটবল প্রেমীদের মনে আরো স্মরণীয় হয়ে রয়েছে পিটার স্মাইকেলের অসাধারণ নেতৃত্বের কথা। তিনি নিজের জোড়ালো কন্ঠ দিয়ে পুরো ইউনাইটেড ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ করতেন, এবং সেটির জোড়েই ক্লাবটি ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত ট্রেবল জিততে সক্ষম হয়, আবার বেশ কিছু প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জিততেও সক্ষম হয়। এছাড়া, আর্সেনালের বিখ্যাত ইংরেজ ঝুটিওয়ালা গোলকিপার ডেভিড সিম্যানও ছিলেন আপন অধিকারে একজন কিংবদন্তি। গানারস’দের সাফল্যে তার ছিল দারুণ কৃতিত্ব।
প্রিমিয়ার লীগে খেলা অনবদ্য সব গোলকিপারদের তালিকা অশেষ, তবে এখানে আমরা এমন ১০ জন গোলি’র নাম উল্লেখ করার চেষ্টা করব যারা এই পজিশনটির মান যথাযথভাবে রেখেছেন, এবং আমাদের তৈরি প্রিমিয়ার লীগের সর্বকালের সেরা ১০ জন গোলকিপার এর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
১০. জেনস লেম্যান – আর্সেনাল (10. Jens Lehmann – Arsenal)
জার্মান এই স্টলওয়ার্ট গোলকিপার প্রিমিয়ার লীগে ততটাও সময় কাটাননি, যতটা সময় সেখামে কাটিয়েছেন এই তালিকার অন্যান্য সকল গোলকিপাররা। তিনি গানারস’দের হয়ে শুধুমাত্র ১৪৬ বার মাঠে নেমেছেন, তবে তাতেই তিনি ঠিক নিশ্চিত করে গিয়েছেন যেন আর্সেনাল ও প্রিমিয়ার লীগ সমর্থকরা তাকে অনেকদিন ধরে মনে রাখেন।
লেম্যানই কেবলমাত্র এমন একজন গোলকিপার, যিনি প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে একটি পুরো মৌসুম অপরাজিত থেকে শেষ করেছেন। তাকে ডেভিড সিম্যান এর মত কিংবদন্তিদের কাতারে রাখা না গেলেও আর্সেনালের জন্য তিনি ছিলেন একটি ভরসার নাম।
৯. ব্র্যাড ফিডেল – বিভিন্ন ক্লাব (9. Brad Fiedel – Different Clubs)
এই বয়সহীন আমেরিকান কিংবদন্তি গোলকিপার প্রিমিয়ার লীগে অভিষেক করেন লিভারপুলের হয়ে, ১৯৯৭ সালে। সে সময়ে তার দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হয় তৎকালীন ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের গোলকিপার ডেভিড জেমস এর সাথে।
আমেরিকান এই তারকা ফুটবলার লিভারপুল ছাড়াও প্রিমিয়ার লীগে খেলেছেন টটেনহ্যাম হটস্পার্স এবং এস্টন ভিলা’র মত ঐতিহ্যবাহী সব ক্লাবে। তিনি ৪৪ বছর বয়সেও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলেছেন, এবং এখনও অবধি তিনি এস্টন ভিলা’র হয়ে খেলা সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়। তার ক্যারিয়ারে কিছু বড়সড় ভুল বা ব্লান্ডার লক্ষণীয় হলেও তিনি ছিলেন একজন পাক্কা যোদ্ধা। এবং, তার ক্যারিয়ারে কোন বড় অর্জন না থাকলেও যে পরিমাণ ধারাবাহিকতা তিনি প্রদর্শন করেছেন, তা সত্যিই অবাক করার মত।
৮. জো হার্ট – বিভিন্ন ক্লাব (8. Joe Hart – Different Clubs)
এই ইংলিশ শটস্টপার তার দিনে ছিলেন একজন আস্তা পাথরের দেয়াল। সাবেক এই ম্যানচেস্টার সিটি গোলি (৪৫ বছর পর সিটি’র প্রিমিয়ার লীগ জেতার দৌড়ে যার ছিল অসীম কৃতিত্ব) বেশ কয়েক বছর ধরেই ছিলেন থ্রি লায়নস’দের (ইংল্যান্ড জাতীয় দলের) ফার্স্ট চয়েজ গোলকিপার। তিনিই শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলে তার পূর্বজ ডেভিড সিম্যান এর জায়গাটি পূর্ণাঙ্গভাবে নিজের করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সাফল্যমণ্ডিত সময় তিনি পার করেছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে, যেখানে তিনি জিতেছেন দুই দুইটি প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা (২০১২ ও ২০১৪)। তবে, পেপ গার্দিওলা ক্লাবটির দায়িত্ব নেওয়ার পর হার্টের গোলকিপিং তার প্লেয়িং সিস্টেম অনুযায়ী উপযুক্ত না হওয়ায় হার্টকে দল ছাড়তে হয়। এরপর থেকে তিনি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, এমনকি ইতালির বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন, এবং সুনাম কুড়িয়েছেন।
৭. এডারসন মরায়েস – ম্যানচেস্টার সিটি (7. Ederson Moraes – Manchester City)
গত কমপক্ষে ৪ মৌসুম ধরে ইংল্যান্ড এবং ইউরোপের সেরা গোলকিপারদের তালিকায় একটি নামের উপস্থিতি অবধারিত, এবং সেটি হল ম্যান সিটি শটস্টপার এডারসন মরায়েসের নাম। পেপ গার্দিওলা তার তিকি-তাকা ফুটবল ম্যানচেস্টার সিটিতে প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে বার্সেলোনা থেকে ক্লাউদিও ব্রাভোকে দলে ভেড়ান। কিন্তু, সেই ট্রান্সফারটি কাজে না আসায় পেপ গার্দিওলা বেনফিকা থেকে সিটিতে আনেন এডারসনকে, এবং বাঁকিটা আসলেই ইতিহাস!
এডারসন তার অসাধারণ বল কন্ট্রল, পজিশনাল সেন্স, এবং পাসিং ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে ব্রাভোকে প্রথমে বেঞ্চে ঠেলে দেন, এবং পরবর্তীতে ক্লাব ছাড়তে বাধ্য করেন। এই তালিকায় তার জায়গা করে নেওয়ার পেছনে অন্যতম বড় কারণ হল প্রিমিয়ার লীগে তিনিই হলেন প্রথম উত্তরুত্তর সুইপার কিপার। তার দেখাদেখি এখন এই লীগের অনেক গোলকিপারই তাদের পাসিং এর দিকে লক্ষ্য দিচ্ছেন, এবং অনেক উঁচু স্টার্টিং পজিশন গ্রহণ করছেন। এছাড়া, তার নিকট কিছু এসিস্টও রয়েছে, এবং হ্যাঁ, সেগুলি তিনি তার গোল পোস্ট থেকেই করতে সক্ষম হয়েছেন।
৬. পেপে রেইনা – লিভারপুল এবং এস্টন ভিলা (6. Pepe Reina – Liverpool and Aston Villa)
মোটামুটি উচ্চতার এই গোলকিপার হলেন লিভারপুলের ইতিহাসের সেরা গোলকিপারদের মধ্যে একজন। প্রিমিয়ার লীগ ইতিহাসে ১০০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন এরকম যেকোন গোলকিপারের মধ্যে রেইনা’র শতকরা ক্লিন শিটের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি।
চুলহীন সম্রাট খ্যাত এই গোলকিপার তার ফুটবলিং জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন লিভারপুলের হয়ে খেলা তার ৮টি বছরে, যেখানে তিনি শিরোপার সাথে সাথে অনেক সম্মানও অর্জন করেছিলেন। এরপর নাপোলিতে কিছুদিন খেলার পর আবারও তিনি প্রিমিয়ার লীগে ফেরত আসেন, এস্টন ভিলার হয়ে খেলার জন্য। তবে, ভিলেইনদের হয়ে ইঞ্জুরিবিঘ্নিত ক্যারিয়ারে তিনি মাত্র ১২টি খেলায় অংশ নিতে পেরেছিলেন, যার মধ্যে ২টিতে তিনি ক্লিন শিট রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
৫. ডেভিড ডে হেয়া – ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (5. David De Gea – Manchester United)
সাম্প্রতিক ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে ধারাবাহিক একজন গোলকিপার এবং ভবিষ্যতের একজন কিংবদন্তি হলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। তিনি হলেন এমন একজন গোলকিপার যিনি তার দলকে একটি সম্পূর্ণ মৌসুম জুড়ে নিজ হাতে বাচিয়েছেন, এবং সম্মানজনক একটি অবস্থানে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন।
সাবেক ম্যানেজার স্যার আলেক্স ফার্গুসনের বিদায়ের পর থেকে এই ৩১ বছর বয়সী ডে হেয়াই হলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সবচেয়ে ধারাবাহিক খেলোয়াড়, এবং একমাত্র উজ্জ্বল তারকা।
২০১৭ সালে এমিরেটস স্টেডিয়ামে তার করা অনবদ্য পারফর্মেন্স এর কথা ভুলে যাওয়া খুবই কঠিন। সেই খেলাটির কথা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভাসে ডে হেয়ার অসাধারণ সব সেভ এবং দূর্দান্ত গোলকিপিং স্কিলস।
যদিও অনেক দিন ধরেই অনেক ইউনাইটেড সমর্থক চেয়ে আসছেন যেন ডে হেয়া ক্লাব ছাড়েন, তবুও তিনি বার বার ক্লাবের প্রতি এবং সমর্থকদের প্রতি তার আনুগত্যের প্রমাণ দিয়েছেন, এবং তার ক্যারিয়ারের সেরা সময়টুকু তিনি এই গড়পড়তা ইউনাইটেড দলের সাথেই কাটিয়ে দিয়েছেন। অর্জন যতটুকুই হোক, ডে হেয়াকে চিরকাল প্রিমিয়ার লীগ গ্রেটস’দের কাতারেই ধরা হবে।
৪. এডউইন ভ্যান ডার সার – ফুলহ্যাম এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (4. Edwin Van Der Sar – Fulham and Manchester United)
ইতালিতে দুইটি বাজে মৌসুম কাটিয়ে যখন এই ডাচ গোলকিপার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দল ফুলহ্যামে যোগ দিয়েছিলেন, তখন তার কাছ থেকে কেউই তেমন কিছু আশা করেনি। ‘ফ্লায়িং ডাচম্যান’ খ্যাত এই লম্বা গোলকিপার তার পরের চার বছর ফুলহ্যামে খেলে মোট ৪২টি ক্লিন শিট অর্জন করে নিতে সক্ষম হোন।
এরপর তার অসাধারণ সেসব পারফর্মেন্স দেখে তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিয়ে আসেন স্যার আলেক্স ফার্গুসন, এবং তার পর থেকেই শুরু হয় তার ইতিহাস রচনা। রেড ডেভিলদের হয়ে চার চারটি প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জিতেছেন এই ডাচ কিংবদন্তি। গোলকিপার হিসেবে একটানা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি এখনো নিজের দখলে রেখেছেন ভ্যান ডার সার।
৩. ডেভিড সিম্যান – আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার সিটি (3. David Seaman – Arsenal and Manchester City)
সাবেক এই ইংল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল গোলকিপার তার লম্বা চুল (পনিটেইল) ও সুঠাম গোঁফের বদৌলতে শুধুমাত্র যে ৯০ এর দশকে বিশ্বব্যাপী পুরুষদের জন্য একজন ফ্যাশন আইকন ছিলেন তাই নয়, তিনি ছিলেন একজন ভিন্নধর্মী এবং যথেষ্ট পারদর্শী একজন গোলকিপারও।
১৯৯২ সালে যখন সাবেক ইংলিশ ফার্স্ট ডিভিশন উচ্ছেদ করে প্রিমিয়ার লীগের প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন সিম্যান ইতিমধ্যে একজন প্রতিষ্ঠিত গোলকিপার। প্রিমিয়ার লীগের সেরা গোলকিপার হওয়ার দৌড়ে, অর্থাৎ গোল্ডেম গ্লোভস পুরষ্কারটির জন্য বহু বছর ধরে পিটার স্মাইকেলকে প্রতিযোগিতা দিয়ে গিয়েছেন ডেভিড সিম্যান।
২. পিটার স্মাইকেল – বিভিন্ন ক্লাব (2. Peter Schmeichel – Different Clubs)
ডেভিড সিম্যান যা যা অর্জন করেছিলেন তা অন্য কারো জন্য অর্জন করা ছিল প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি, তবে পিটার স্মাইকেলের অর্জনসমূহের ধারে কাছে কেউ যেতে পারলেও তাকে ফুটবলীয় অর্থে ঈশ্বর সমতুল্যই মনে করা হয়। তার সেরা সময়ে এই সুঠাম দেহের ড্যানিশ শটস্টপার ছিলেন একদম দূর্ভেদ্য, এবং পুরো ৯০ এর দশক জুড়েই তিনি ছিলেন স্যার আলেক্স ফার্গুসনের সবচেয়ে ভরসাবান যোদ্ধা।
তৎকালীন সেরা গোলকিপার হওয়ার পাশাপাশি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন স্মাইকেল জিতেছিলেন সর্বমোট ১১টি ঘরোয়া শিরোপা। এছাড়া এস্টন ভিলায় খেলাকালীন সময়ে তিনি পরিণত হোন প্রিমিয়ার লীগে গোল করা সর্বপ্রথম গোলকিপারে। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন তার সুঠাম উপস্থিতি এবং ডিফেন্স পরিচালনায় তার পারদর্শীতার জন্য।
১. পিতর চেক – চেলসি এবং আর্সেনাল (1. Petr Cech – Chelsea and Arsenal)
চেক প্রজাতন্ত্রের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র চেলসিতে থাকাকালীন সময়ে ছিলেন এক কথায় অভেদ্য এবং অপ্রতিরোধ্য। এখনও পর্যন্ত তার দখলে রয়েছে একটি প্রিমিয়ার লীগ মৌসুমে সবচেয়ে কম গোল হজম করার রেকর্ড, যা তিনি অর্জন করেছিলেন হোসে মোরিনহোর অধীনে খেলার সময়, ২০০৪-০৫ মৌসুমে।
এছাড়া তিনিই হলেন সেই গোলকিপার যার নিকট রয়েছে প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ক্লিন শিটও (২০২টি)। ২০১২ সালে চেলসিকে তাদের সর্বপ্রথম চ্যাম্পিয়নস লীগ শিরোপা এনে দেওয়ার পেছনেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন এই পিতর চেকই। এরপরে আর্সেনালের হয়ে খুব বেশি কিছু অর্জন করতে না পারলেও, তিনি আজীবন ফুটবল প্রেমীদের মনে একজন ভদ্র ও অনবদ্য (এবং হেলমেটধারী) গোলকিপার হিসেবেই রয়ে যাবেন।