কেবলমাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যেই প্রিমিয়ার লীগ এর বহুল প্রত্যাশিত ২০২২-২৩ মৌসুমটি শুরু হতে যাচ্ছে, এবং সকলের প্রতিক্ষার বাঁধ যেন ভাঙার উপক্রম। এমন সময়ে এসে যখন আমরা সকলেই অপেক্ষায় আত্মহারা, তখন এই নতুন মৌসুম থেকে কি কি আশা করা যায়, তা নিয়ে পর্যালোচনা না করলেই নয়।

প্রিমিয়ার লীগের মত একটি কঠিন ও প্রতিযোগিতামূলক কম্পিটিশনে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার কৃতিত্বটি অর্জন করা খুবই বড় এবং গৌরবের একটি বিষয়। আর এবারের ২০২২-২৩ মৌসুমটি হতে যাচ্ছে আরো একটু বেশিই কঠিন। প্রত্যেকটি বড় দলের নিকট রয়েছে অসম্ভব রকমের প্রতিভাবান সব অ্যাটাকিং অস্ত্র, এবং যদি আপনি মনে করে থাকেন যে গত মৌসুমটি ছিল মজায় ভরপুর, তাহলে একটু অপেক্ষা করুন, কারণ আগামী মৌসুমটি হতে যাচ্ছে আরো বেশি মসলাদার। যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল, তেমনটিই হয়েছে বা হচ্ছে। প্রিমিয়ার লীগের সকল বড় দলই হয় ইতিমধ্যেই আক্রমণভাগ আরো বেশি শক্তিশালী করেছে, অথবা তারা তেমনটি করার প্রক্রিয়ায় লিপ্ত রয়েছে।

প্রিমিয়ার লীগের ২০২১-২২ মৌসুমের শেষে গিয়ে দেখা গিয়েছিল যে, লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহ্ এবং টটেনহামের সন হিউং মিন উভয়কেই ২৩ গোল নিয়ে গোল্ডেন বুট পুরষ্কারটি ভাগাভাগি করে নিতে হচ্ছে। এবং, মজার বিষয় হল এটি যে, গোল্ডেন বুটটির গন্তব্য নির্ধারণ করার জন্য মৌসুমের শেষ দিনের শেষ মুহূর্তগুলো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল সেবার। মৌসুমের শেষ দিনে সন হিউং মিনকে নরউইচ সিটি’র বিরুদ্ধে দুইটি গোল করতে হয়েছিল মোহাম্মদ সালাহ্ এর গোল ট্যালিকে ছোঁয়ার জন্য, কারণ সালাহ্ও সেদিন ওলভস এর বিরুদ্ধে একটি গোল করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

মোহাম্মদ সালাহ্ এবং সন হিউং মিন এবারও প্রিমিয়ার লীগের গোল্ডেম বুটের লড়াইয়ে সামিল থাকবেন, সে ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই। তবে, এবার তাদেরকে পুরষ্কারটির জন্য লড়াই করতে হবে ইউরোপের সেরা কিছু স্ট্রাইকার বা ফরোয়ার্ডদের সাথে। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাস বা ঐতিহ্য যেটিই বলুন না কেন, সেটি অনুসারে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, গোল্ডেন বুট বিজয়ী খেলোয়াড়টি লীগ টেবিলের যেকোন প্রান্ত থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেন। আগামী মৌসুম থেকে ম্যানচেস্টার সিটি’র হয়ে খেলার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ড। তাকে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্ট্রাইকারদের মধ্যে একজন হিসেবে দেখা হয়, এবং তিনি যে এবারের গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে সামিল থাকবেন, সে ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই।

স্পার্স আক্রমণভাগে সন হিউং মিন এর সতীর্থ এবং ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়ক হ্যারি কেইনও সবসময়ই এই পুরষ্কারটির লড়াইয়ে লিপ্ত থেকে এসেছেন, এবং ইতিমধ্যে তিনি কয়েকবার সেটি জিতেও নিয়েছেন। গত মৌসুমে অবশ্য এই অনবদ্য গোলস্কোরার তার দলের অন্যান্য সদস্যদের জন্য গোল তৈরি করার লক্ষ্যে কিছুটা মিডফিল্ডে নেমে খেলেছিলেন। তবে, আশা করা যাচ্ছে যে, এবারের মৌসুমে তিনি আবারো তার স্বভাবসুলভ স্ট্রাইকারের পজিশনেই ফিরে যাবেন, অধিক গোলের আশায়।

আরবি লাইপজিগ এর বিরুদ্ধে প্রাক মৌসুম ফ্রেন্ডলি ম্যাচে চারটি গোল করার মাধ্যমে লিভারপুলের নতুন স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজও তার আগমণী বার্তা জানিয়ে দিয়েছেন সকলকেই, এবং তিনি চেষ্টা করবেন আগামী মৌসুমেও তার সেই ফর্মটি ধরে রাখার।

পড়ুন:  Arsenal reach agreement to sign Jurrien Timber from Ajax

যদিও তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়তে ইচ্ছুক, তবুও মনে হচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে আরেকটি মৌসুমের জন্য রেড ডেভিলদের সাথেই থাকতে হবে, এবং তাকে গোল্ডেন বুটের জন্য প্রতিযোগী হিসেবে না দেখাটা একরকম বোকামিই হবে। অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সুযোগসন্ধানী এই পর্তুগিজ কিংবদন্তি সবসময়ই একজন গোল-থ্রেট, এবং তিনি এই লড়াইয়ে অবশ্যই সামিল থাকবেন। এছাড়া, আন্ডারডগ হিসেবে হলেও লড়াইয়ে থাকতে পারেন লেস্টার সিটি’র জেমি ভার্ডি, ব্রেন্টফোর্ডের আইভান টনি, এবং আর্সেনালের নতুন সাইনিং গ্যাব্রিয়েল জেসুসসহ আরো অনেকে। গোল্ডেন বুটের আরেকজন নতুন দাবিদার হতে পারেন দীর্ঘকায় সার্বিয়ান ফরোয়ার্ড আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ, যিনি ফুলহ্যামের হয়ে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৪৩টি গোল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাকে যদি যথাযথভাবে বল সাপ্লাই করতে পারে ফুলহ্যামের খেলোয়াড়েরা, তাহলে তিনি অবশ্যই গোল্ডেন বুটের জন্য একজন শক্ত প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হবেন। এখন আমরা প্রিমিয়ার লীগের আগামী মৌসুমের গোল্ডেন বুট প্রতিযোগীদের ব্যাপারে আরো বিস্তারিতভাবে জানবো। চলুন, শুরু করা যাক।

 

মোহাম্মদ সালাহ্ – লিভারপুল (Mohamed Salah)

ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মোহাম্মদ সালাহ্ লিভারপুলের জন্য একটি মহান খেলোয়াড়ে পরিণিত হয়েছেন। ২৩টি গোল নিয়ে তিনি টটেনহ্যাম হটস্পার্স এর সন হিউং মিন এর সাথে সম্মিলিতভাবে গত মৌসুমের গোল্ডেন বুট পুরষ্কারটি জিতেছিলেন। এ ব্যাপারে বহু তর্ক বিতর্ক থাকলেও, অনেকের মতেই এই মিশরীয় জাদুকর হচ্ছেন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় মাপের ফুটবলারদের মধ্যে একজন। এবং, তিনি যে আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগসহ পুরো ইউরোপে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় জায়গা করে নিবেন, সে ব্যাপারে এখন আর কোনই সন্দেহ নেই। যেহেতু, সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড সাদিও মানে বায়ার্ন মিউনিখের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন, সেহেতু লিভারপুলের হয়ে গোলস্কোরিং এর দায়িত্বটি এখন অনেকাংশেই এসে পড়বে একা সালাহ্ এর ঘাড়ে। এর ফলে তার গোল ট্যালি আগামী মৌসুমে আরো উঁচু হবে বলেই আমাদের ধারণা।

 

হিউং মিন সন – টটেনহ্যাম হটস্পার্স (Heung Min Son – Tottenham Hotspurs)

গত মৌসুমজুড়ে তার দলের যখনই প্রয়োজন পড়েছে, তখনই গোল নিয়ে হাজির হয়েছেন দক্ষিণ কোরীয় সুপারস্টার সন হিউং মিন। সেবার তিনি প্রমাণ করেছেন যে, তিনি আসলেই একজন জাত গোলস্কোরার, এবং ভালো সাপ্লাই পেলে তিনি যেকোন দলের ডিফেন্সের জন্যই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। তার আগের বেশ কিছু মৌসুমের স্পার্সকে গোলের জন্য তাকিয়ে থাকতে হয়েছিল অধিনায়ক হ্যারি কেইন এর দিকে। তবে এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডও হাঁফ ছেড়ে বাঁঁচবেন এটি ভেবে যে, দলটির হয়ে গোল করার দায়িত্ব এখন আর শুধু তার একার ঘাড়ে নেই।

প্রিমিয়ার লীগের ২০২১-২২ মৌসুমে দক্ষিণ কোরীয় এই ফুটবলার মোট ২৩টি গোল করে মোহাম্মদ সালাহ্ এর সাথে সম্মিলিতভাবে লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার সম্মান অর্জন করেছিলেন। যে ব্যাপারটি তাকে অন্যান্য সকল ফরোয়ার্ডদের থেকে আলাদা ও অধিকতর বিপজ্জনক করে তোলে তা হচ্ছে তার শুটিং দক্ষতা। প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ানোর জন্য তাকে ডি বক্সের ভেতরে অবস্থান করতে হয় না। দূরপাল্লার মাপা শট মারার ক্ষেত্রে তিনি অসম্ভব রকমের পারদর্শী। এমনকি, তার করা গোলগুলির অধিকাংশই আসে এমন লং-রেঞ্জ শট থেকে, যা যেকোন দর্শকের জন্যই হয় অতি দর্শনীয় ও স্মরণীয়।

পড়ুন:  প্রিমিয়ার লিগের শিরোনাম বিজয়ী: যাদের সবচেয়ে বেশি ট্রফি রয়েছে

 

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো – ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Cristiano Ronaldo – Manchester United)

অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে যে, পর্তুগিজ এই কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে, যদিও তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের লাল জার্সিতে আর নাও দেখা যেতে পারে, তবুও নিশ্চিতরূপে তিনি অন্য কোন দলে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে একজন রেড ডেভিল হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। গত মৌসুমে, যেটি কি না আলোচনা সাপেক্ষে ছিল সম্ভবত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে মৌসুম, তিনি প্রিমিয়ার লীগে ১৮টি গোল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমন গড়পড়তা একটি দলের হয়ে এতগুলি গোল করতে পারাটাই একটি গৌরবান্বিত অর্জন বলে আমরা মনে করি।

যদিও এখন তার বয়স ৩৭ ছুঁয়েছে, তবুও পাঁচবারের এই ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলার তার শারিরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন, যার ফলে ধারণা করা যাচ্ছে যে, আরো বেশ কিছু বছর ধরেই তিনি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মাঠ কাঁপাতে পারবেন। যদি এই ভেটেরান ফুটবলার শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই থেকে যান, তাহলে অবশ্যই তিনি গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে লিপ্ত থাকবেন, বিশেষ করে কারণ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নিকট বর্তমানে আর কোন স্ট্রাইকারই নেই।

 

হ্যারি কেইন – টটেনহ্যাম হটস্পার্স (Harry Kane – Tottenham Hotspurs)

প্রিমিয়ার লীগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলস্কোরারদের তালিকায় এই কিংবদন্তি স্পার্স ফরোয়ার্ড নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে ফেলেছেন। স্পার্স দলে একজন নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকেই তিনি নিয়মিতভাবে প্রিমিয়ার লীগের গোল্ডেন বুটের জন্য লড়াই করে এসেছেন, এবং বেশ কয়েকবার তিনি পুরষ্কারটি ঘরেও তুলেছেন।

তিনি হলেন এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি মৌসুমের অনেকাংশ জুড়ে ইঞ্জুরিতে থাকলেও, মৌসুমের শেষ ঘন্টা বাজার আগে তার গোল ট্যালি ২০ এর ঘরে বা অন্ততপক্ষে দুই অঙ্কে থাকবেই থাকবে। গত মৌসুমে, কিছু ট্যাকটিক্যাল কারণবশত তার উপর নাম্বার ১০ এর দায়িত্বটি সঁপেছিলেন কোচ এন্তোনিও কন্তে, যা তিনি অনেক দক্ষতার সাথে পালনও করেছিলেন। কিন্তু, তাতে তার গোল ট্যালিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। তবে, সেবার তিনি তার খেলার বুদ্ধিদীপ্ত দিকটি আমাদেরকে দেখিয়েছিলেন, যা আমরা এর আগে তেমন একটা দেখতে পাইনি। এবার অবশ্য স্পার্সের মিডফিল্ড আরো শক্তিশালী হওয়ায় তাকে আবার তার স্বভাবসুলভ স্ট্রাইকারের রোলে দেখা যাবে বলেই মনে হচ্ছে। তাই, তাকে এই তালিকা থেকে বাদ রাখাটা একপ্রকার বোকামিই হবে।

 

আর্লিং হাল্যান্ড – ম্যানচেস্টার সিটি (Erling Haaland – Manchester City)

মেশিনরূপী এই নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড এর জন্য কোনপ্রকার ভূমিকারই প্রয়োজন নেই। আজীবন ম্যানচেস্টার সিটি’র ভক্ত থাকা এই খেলোয়াড় এবার তার স্বপ্নের ক্লাবের হয়েই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবল লীগটিতে প্রবেশ করেছেন, এবং এখানেও তিনি অস্ট্রিয়ান বা জার্মান বুন্দেসলিগা’র মত করেই গোল বন্যা বওয়ানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

পড়ুন:  গেমসপ্তাহ 27 এর জন্য FPL সেরা বাছাই

যদিও ম্যানচেস্টার সিটি’র দলটির প্রত্যেক পজিশন থেকেই গোলস্কোরার বেরিয়ে আসেন, তবুও এই প্রোলিফিক গোলস্কোরারকেই এবারের গোল্ডেন বুটের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী হিসেবে ধরা হচ্ছে। তার নিন্দুকরা অবশ্য এটি বলবে যে, তার ইঞ্জুরি রেকর্ড ম্যানচেস্টার সিটি’র জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে আর যাই হোক, তার অসাধারণ দক্ষতা ও পূর্বের রেকর্ডই বলে দেয় যে, তিনি বেশ কিছু মৌসুম ধরে প্রিমিয়ার লীগ মাতাবেন।

 

ডারউইন নুনেজ – লিভারপুল (Darwin Nunez – Liverpool)

এই উরুগুয়ান ফরোয়ার্ড, যিনি কি না এবারের ট্রান্সফার উইন্ডো জুড়েই ছিলেন একজন ‘হট প্রপার্টি’, শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লীগ জায়ান্টস লিভারপুলে যোগ দিয়েছেন। এখন যখন তিনি মার্সিসাইডে অনেকটা মানিয়েও নিয়েছেন, তখন বলাই যায় যে, তিনি অল রেডস’দের হয়ে ভবিষ্যতে অনেক গোল করার সামর্থ্য রাখেন। তার জন্য পথ অনেকটাই ফাঁকা, এবং একজন কিংবদন্তি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তার মধ্যে রয়েছে বলেই ইয়ুর্গেন ক্লপ সাদিও মানে’র রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে তাকেই বেঁছে নিয়েছেন। 

মৌসুমের শুরুতেই অনেকে ধারণা করছেন যে, আগামী বেশ কিছু মৌসুমজুড়েই আমরা প্রিমিয়ার লীগের গোল্ডেন বুটের জন্য আর্লিং হাল্যান্ড বনাম ডারউইন নুনেজ এর লড়াই দেখতে পাব।

 

গ্যাব্রিয়েল জেসুস – আর্সেনাল (Gabriel Jesus – Arsenal)

ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড সম্প্রতি একটি বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আর্সেনালে পাড়ি জমিয়েছেন, এবং সাথে সাথেই তাকে কেন্দ্র করে আর্সেনাল সমর্থকরা তাদের প্রত্যাশার ঝুড়ি প্রস্তুত করে ফেলেছেন।

যদিও পেপ গার্দিওলা তাকে ম্যানচেস্টার সিটি’র আক্রমণভাগের মধ্যমণি হিসেবে খেলার তেমন একটা সুযোগ দেননি, আর্সেনাল ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা অবশ্য তাকে তেমন একটি পজিশনই অফার করেছেন। এতে করে জেসুস তার হারানো আত্মবিশ্বাসও অনেকটাই ফিরে পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে, যার কিছুটা ঝলক তিনি প্রাক মৌসুম ফ্রেন্ডলি ম্যাচগুলিতে খুব স্পষ্ট আকারেই দেখিয়েছেন, যেখানে সেভিয়ার বিরুদ্ধে একটি হ্যাট্রিকসহ তিনি ৪ ম্যাচে সর্বমোট ৭টি গোল করেছিলেন। প্রি সিজনে এমন পারফর্মেন্স এর পর তাকে গোল্ডেন বুটের জন্য একজন প্রতিযোগী হিসেবে না দেখাটা তার প্রতি একরকম অন্যায়ই হবে।

 

আলেকজান্ডার মিত্রোভিচ – ফুলহ্যাম (Aleksandr Mitrovic – Fulham)

ফুলহ্যামের এই ট্যালিসমানিক ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লীগে কোন নতুন মুখ নন। নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের হয়ে বেশ কিছুদিন খেলার পর তিনি ফুলহ্যামে যোগ দেন, এবং কয়েকবার চ্যাম্পিয়নশিপে রেলিগেটেড হওয়া সত্ত্বেও তিনি বার বার প্রিমিয়ার লীগ ফিরে এসেছেন সেই কটেজার’দের হয়েই। ফুলহ্যামকে এবারও অনেকেই রেলিগেশনের জন্য ফেভারিট মানছেন। কিন্তু, ফুলহ্যাম সমর্থকদের থেকে শুরু করে ব্রিটিশ মিডিয়া পর্যন্ত সকলেই মনে করেন যে, গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপে ৪৩টি গোল করা মিত্রোভিচ এবার প্রিমিয়ার লীগে ভালো কিছু করে দেখাবেন। 

অতীতে নানা রকম নৈতিকতা বিষয়ক এবং ইঞ্জুরি জনিত কারণে তিনি প্রিমিয়ার লীগে একদমই কোনপ্রকার ছাঁপ রাখতে পারেননি। তবে, এবার যদি সবকিছু ঠিক থাকে, তাহলে তিনি নিজের দলকে রেলিগেশনের হাত থেকে বাঁচাতেও পারবেন, আবার গোল্ডেন বুটের জন্য অন্যদেরকে একটি শক্ত লড়াইও উপহার দিতে পারবেন বলেই আমরা মনে করি।

Share.
Leave A Reply