সূচিপত্র (Table of contents)

  • ভূমিকা – জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো
  • প্রিমিয়ার লীগের যেসকল ক্লাব খেলোয়াড় কিনতে পারে
  • প্রিমিয়ার লীগের যেসকল ক্লাব খেলোয়াড় বিক্রি করতে পারে
  • ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং তাদের সম্ভাব্য ট্রান্সফার টার্গেটসমূহ
  • আর্সেনাল এবং তাদের সম্ভাব্য ট্রান্সফার টার্গেটসমূহ

ভূমিকা (Introduction)

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ উপলক্ষে বর্তমানে ক্লাব ফুটবল কিছুটা বিশ্রাম নিচ্ছে, এবং পুরো ফুটবল বিশ্বের চোখ তাই এখন কাতারের দিকে। ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোন বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মুসলিম বিশ্বে, তাও আবার শীতকালে। এর ফলে ক্লাব ফুটবলের মৌসুমের শিডিউল পরিবর্তিত হয়েছে, এবং সম্ভবত ক্লাবসমূহের ক্রীড়াকৌশলও অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে, বিশেষ করে প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবগুলির ক্ষেত্রে।

এছাড়া, যেহেতু এবার নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাস জুড়ে ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেহেতু এবারের শীতকালীন বা জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোটিও হতে চলেছে এযাবতকালের ব্যস্ততম জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো। ২০২৩ সালের শুরুটা ধামাকার সাথেই হতে চলেছে!

আজ তাই আমরা দেখে নিব কাতার বিশ্বকাপের পর ট্রান্সফার উইন্ডোটিতে কিভাবে প্রিমিয়ার ক্লাবগুলি নিজেদের কার্যসম্পাদন করতে পারে।

প্রিমিয়ার লীগের যেসকল ক্লাব খেলোয়াড় কিনতে পারে (Premier League’s buying clubs)

প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবসমূহ এবং এর বাইরে ইউরোপের অন্যান্য বড় বড় দেশের বা লীগের ক্লাবগুলির মধ্যকার অর্থনৈতিক দূরত্ব বা পার্থক্য দিন দিন আরো বড়ই হয়ে চলেছে, এবং সেটির যথাযথ প্রমাণ আমরা পেয়েছি গত গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে। সেই ট্রান্সফার উইন্ডোটিতে প্রিমিয়ার লীগের ক্লাবগুলি সম্মিলিতভাবে মোট খরচ করেছিল প্রায় ২.২৩৭ বিলিয়ন ইউরো, যেখানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরচ করা লীগ ইতালিয়ান সিরি আ এর ক্লাবগুলির মোট খরচ হয়েছিল প্রায় ৭৪৯.২ মিলিয়ন ইউরো। এই দুই সংখ্যার মধ্যে একটি ১.৫ বিলিয়ন ইউরোর তফাৎ লক্ষনীয়। এটি একটি বিশাল তফাৎ, যা অদূর ভবিষ্যতে দূর হওয়ার সুযোগ খুবই কম।

বিশ্বব্যাপী খেলোয়াড়েরা এই লীগটিতে খেলতে আসার জন্য মুখিয়ে থাকে, কারণ সেখানকার ক্লাবগুলিও তাদেরকে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে দলে নিতে প্রস্তুত থাকে, এবং তাদেরকে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে বেতন দিতেও প্রস্তুত থাকে, যা হয়তো তারা আর অন্য কোথাও পেতো না। যখন একজন খেলোয়াড় দেখেন যে এই লীগের মিড টেবিল দলগুলিতেও চ্যাম্পিয়নস লীগ পর্যায়ের কোচেরা কোচিং করাতে আসেন, তখন তারা এই লীগ থেকে চাইলেও দূরে থাকতে পারে না।

বিশ্ব ফুটবলের সেরা সেরা খেলোয়াড়দের জন্য এবারের বিশ্বকাপটি খুব কঠিন হতে চলেছে, কারণ জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে নিজেদের দলকে আরো শক্তিশালী করার জন্য এবং মৌসুমের একটি কঠিন দ্বিতীয়ার্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য ক্লাবগুলি মুখিয়ে আছে। যেসকল প্রতিভাবান যুবা খেলোয়াড়দেরকে বড় বড় ক্লাবগুলি তাদের নজরের অধীনে রেখেছে, তারা নিজেদের জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে ভালো পারফর্ম করতে চাইবে, কিন্তু তার সাথে সাথে ইঞ্জুরির ঝুকিতেও তাদেরকে পড়তে হবে। 

বিশ্বকাপের ফলে অনেক নতুন ও অজানা খেলোয়াড়দেরকে টার্গেট করবে ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলি, আবার এমনও অনেক খেলোয়াড় থাকবেন যাদেরকে অনেক ক্লাবই অনুসরণ করছিল, কিন্তু বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফর্ম করতে না পারায় ক্লাবগুলি তাদের উপর থেকে নিজেদের ইন্টারেস্ট সরিয়ে নিবে। খেলোয়াড়েরাও এই ব্যাপারগুলি খুব ভালো করেই জানেন, এবং তাই এমন অনেকেই রয়েছেন যারা বিশ্বকাপে তাদের নিজ নিজ রাষ্ট্রের সম্মানের জন্য নয়, বরং সেই বহুল প্রতীক্ষিত প্রিমিয়ার লীগ মুভটি পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যেই কাতারে খেলতে নামবেন।

পড়ুন:  ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য কি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে বিক্রি করে দেওয়াটাই শ্রেয় হবে?

প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষভাগ ও মধ্যভাগ এর ক্লাবগুলি বহু কারণেই নতুন নতুন খেলোয়াড়দেরকে দলে ভেড়াতে চাইবেন। সবশেষে, খেলোয়াড় কেনার একটিই উদ্দেশ্য থাকে — মাঠের সাফল্য। তবে, মিড টেবিল দলগুলি, যারা কি না মূলত সেলিং ক্লাব হিসেবে পরিচির, এটিও চায় যেন এমন কিছু খেলোয়াড়দেরকে তারা কিনে নিতে পারে যারা কি না অপেক্ষাকৃত বড় ক্লাবগুলির নজর এড়িয়ে গিয়েছে। এমন খেলোয়াড়দেরকে তারা দলে ভেড়ায় কেবলমাত্র ভবিষ্যতে তাদেরকে বড় কোন দলের নিকট বিক্রি করে অনেক লাভ করার উদ্দেশ্যেই।

আবার এমনও অনেক মিড টেবিল ক্লাব রগাকে যারা উদীয়মান ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দেরকে দলে ভেড়ায় দলটির ভবিষ্যৎকে মাথায় রেখে, এবং অদূর ভবিষ্যতে লীগ টেবিলের শীর্ষ ৬ এ প্রবেশের আশা নিয়ে।

লীগের বড় বড় দলগুলি, বা সেসকল দল যাদেরকে সবাই প্রিমিয়ার লীগের “শীর্ষ ছয়” হিসেবে চেনে, তারা চাইবে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রতিভাগুলোকেই দলে নিতে। ফিফা বিশ্বকাপের মত বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে যেসকল খেলোয়াড়েরা ভালো পারফর্ম করবে, তাদের উপর এসকল বড় ক্লাবগুলির নজর অবশ্যই থাকবে, এবং তাদের পেছনে এই ক্লাবগুলি অঢেল অর্থ ব্যয় করলেও তা মোটেও বিষ্ময়কর কিছু হবে না।

এসকল নতুন ও উদীয়মান খেলোয়াড়েরাই সেসকল বড় ক্লাবগুলিকে সাফল্য পর্যন্ত নিয়ে যাবে। যেহেতু বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই প্রিমিয়ার লীগের অসমাপ্ত মৌসুমটি পুনরায় শুরু হবে, সেহেতু ঐসকল ইন-ফর্ম খেলোয়াড়েরা লীগটিতে একটি তাৎক্ষনিক প্রভাব ফেলতে পারবে।

তবে, সকল প্রিমিয়ার লীগ ক্লাবই সেসকল খেলোয়াড়দেরকে বিশ্বকাপের পরেই দলে ভিড়িয়ে ফেলবে না, যাদেরকে তারা টার্গেট করবে। বিশ্বকাপ হল ৫-৬ (সর্বোচ্চ ৭) ম্যাচের একটি সংক্ষিপ্ত টুর্নামেন্ট, যেখানে ভালো ফর্মে থাকা মানেই দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য ভালো খেলোয়াড় হয়ে যাওয়া বোঝায় না। সেখান থেকে একজন খেলোয়াড়ের সত্যিকারের পটেনশিয়াল বোঝাও অসম্ভবপ্রায়।

কিছু ক্লাব ঐসকল প্রতিভাবান খেলোয়াড়দেরকে এখন চিহ্নিত করে রাখবে, তাদেরকে নিয়মিত মনিটরিং এর মধ্যে রাখবে, এবং কোন প্রকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগামী গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডো পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। তবে, তারা এটিও মাথায় রেখেই আগাবে যে, তাদের এই দীর্ঘমেয়াদি টার্গেটগুলোকে যেন তাদেরই কোন প্রতিদ্বন্দ্বী দল তাদের চোখের সামনে থেকে সাইন না করিয়ে ফেলে।

প্রিমিয়ার লীগের যেসকল ক্লাব খেলোয়াড় বিক্রি করতে পারে (Premier League’s selling clubs)

লীগের যেসকল ক্লাব খেলোয়াড় বিক্রি করে নিজেদের পকেট ভারি করতে চায়, সেসকল ক্লাবগুলি অবশ্যই চাইবে যেন এবারের বিশ্বকাপে তাদের ক্লাবের খেলোয়াড়েরা অনেক ভালো পারফর্ম করে। তারা যত ভালো পারফর্মেন্স উপহার দিতে পারবে, তাদের বাজার মূল্যও ততটাই বাড়তে থাকবে, এবং তাদেরকে বিক্রি করলে সেই ক্লাবগুলিও ততটাই বেশি লাভবান হবে।

যদি বিশ্বকাপের ঠিক পড়েই সেসকল খেলোয়াড়দেরকে বিক্রি না করে ক্লাবগুলি তাদেরকে দলে রেখে দেয়, এবং মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে সেই খেলোয়াড়েরা আরো ভালো পারফর্ম করে বসে, তাহলে তাদের মূল্য আরো বেড়ে যাবে। বর্তমান ফুটবল বাজারে গতকালের মূল্য এবং আজকের মূল্যের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়।

পড়ুন:  আর্সেনালের পথে গ্যাব্রিয়েল জেসুসঃ গানারস'দের দলে কি কি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারবেন এই ব্রাজিলিয়ান?

আমরা যদি ব্রাইটন এন্ড হোভ এলবিয়ন এর কথাই ধরি, তাহলে তাদের দল থেকে মইসেস কাইসেদো, কাওরু মিতোমা, এলেক্সিস ম্যাকআলিস্টার, এবং লিয়ান্দ্রো তোসার্দ এবারের বিশ্বকাপে খেলছেন।

এই চারজন খেলোয়াড় সিগালস’দের হয়ে ইতিমধ্যে মৌসুমের প্রথমাংশে, অর্থাৎ বিশ্বকাপ শুরুর পূর্বেই, বেশ অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কোন একজন খেলোয়াড়ও যদি বিশ্বকাপে সেরা পারফর্মেন্স উপহার দিতে পারে, তাহলেই ব্রাইটন তাদের উপর থেকে একটি বড়সড় লভ্যাংশ অর্জন করে নিতে পারবে, কেননা তাদেরকে কেনার জন্য সিগালস’দের মোটেও খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়নি।

এবারের জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে সবচেয়ে সক্রিয় প্রিমিয়ার লীগ ক্লাব কোনটি হতে চলেছে? এবং তাদের দলের কোন কোন পজিশনে তারা শক্তিমত্তা বৃদ্ধি করতে চাইবে?

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United)

গত কিছুদিন ধরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো যেভাবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে এক প্রকার ঝড় তুলেছেন, তাতে এমনটিই মনে হচ্ছে যে আগামী জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে রেড ডেভিলদেরকে একজন নতুন স্ট্রাইকারের খোঁজে নামতেই হবে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ইতিমধ্যে রোনাল্ডোর সাথে তাদের চুক্তিটি ভঙ্গ করেছে, এবং নানা রিপোর্টে এমনটিও শোনা যাচ্ছে যে, তারা এই পর্তুগিজ তারকাকে জরিমানার অধীনেও আনার চেষ্টা করবে। 

এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, এবং সেটি হল যে, তারা কি এন্থোনি মার্শিয়াল এর ডেপুটি হিসেবে কোন স্বল্পমেয়াদী স্ট্রাইকারকে লোনে আনবে, নাকি ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোন বড়সড় স্ট্রাইকারকে দলে ভেড়াবে? এখানে বলাই বাহুল্য, পরের অপশনটি কার্যকর করা জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে বেশ কঠিনই হবে। এই ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলাটা এখন অসম্ভব, তবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ক্লাব ত্যাগ করার পরে যে তাদের স্ট্রাইকার অপশন একদমই কমে যাবে সে ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই।

রেড ডেভিলদের আরেকটি পজিশন যেখানে ভালো খেলোয়াড়ের ঘাটতি রয়েছে তা হল রাইট ব্যাক৷ পজিশনটিতে এবারের মৌসুমে ডিয়োগো ড্যালো অতি অসাধারণ পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছেন, এবং তার নিকট থেকে এমন পারফর্মেন্স দলের জন্যও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এরোন ওয়ান-বিসাকা এবং ব্র‍্যান্ডন উইলিয়ামস এর উপর ম্যানেজারের খুব একটা ভরসা নেই বলেই জানা গিয়েছে।

প্রিমিয়ার লীগের সর্বশেষ ম্যাচডে’তে ফুলহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচটিতে রাইট ব্যাক পজিশনে খেলানো হয়েছিল টাইরেল ম্যালেশিয়াকে (স্বভাবত একজন লেফট ব্যাক), এবং সেখানে তিনি একদমই ভালো খেলতে পারেননি। ম্যাচের বেশ কিছু মুহূর্তে তিনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। 

সম্ভাব্য ট্রান্সফার টার্গেটসমূহ (Likely transfer targets)

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের প্রধান টার্গেট হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে নাপোলি স্ট্রাইকার ভিক্টোর ওসিমহেন’কে। তিনি হলেন বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী স্ট্রাইকারদের মধ্যে একজন, কিন্তু জানুয়ারিতে তাকে নাপোলি খুব সহজে ছাড়বে না বলেই ধারণা করা যাচ্ছে, বিশেষ করে কারণ নাপোলি বর্তমানে সিরি আ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে।

তার অল্টারনেটিভ হিসেবে তারা তাকাতে পারে লিল স্ট্রাইকার জনাথান ডেভিড এর দিকে। প্রতিভাবান এই ক্যানাডিয়ান ফরোয়ার্ড অনেক দলেরই র‍্যাডারে ধরা পড়বেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে তার পারফর্মেন্স এর দিকে কঠোর নজর রাখবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

পড়ুন:  4 Incidents in the English Premier League_ When Rivalries Became Too Heated

পিএসভি আইন্ডহোভেন এর কোডি গাকপো’র দিকেও বিশেষ নজর রাখবে তারা। গত গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে তাকে প্রায় দলে ভিড়িয়েই ফেলেছিল রেড ডেভিলরা, এবং এবার তারা আরো একটি চেষ্টা চালিয়ে দেখতেই পারে, যদিও এখন তার মূল্য আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাবে।

আর্সেনাল (Arsenal)

বিশ্বকাপ বিরতিতে প্রবেশের আগে আর্সেনাল প্রিমিয়ার লীগের শীর্ষে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করেছে, এবং ম্যানচেস্টার সিটির থেকে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে। তারা এবার একটি সত্যিকারের শিরোপা প্রত্যাশী দল, তবে তাদের স্কোয়াড ডেপথ অনেকটাই কম।

অনেকে এমন বিতর্ক উত্থাপন করতেই পারেন যে, এই ছোট স্কোয়াড থাকার কারণেই তারা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে, এবং নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে পেরেছে। কিন্তু, পুরো মৌসুমটি এতই বড় বা দীর্ঘ যে, এর মধ্যে যেকোন সময় তাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ কোন খেলোয়াড় ইঞ্জুরিতে পড়ে যেতেই পারেন। শিরোপার লড়াই কখন কোন দিকে মোড় নিবে তা বোঝা বড়ই দায়।

বর্তমানে তারা তিনটি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে, এবং সেটির জন্যও তাদের নিকট যথেষ্ট স্কোয়াড ডেপথ নেই। গ্রানিত জাকা বা থমাস পার্টে এর মত খেলোয়াড়েরা ইঞ্জুরিতে পড়লে তাদের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে দলে ভালো কোন খেলোয়াড় নেই গানারস’দের।

তবে, তাদের দলের সবচেয়ে বড় জায়গা যেখানে উন্নয়নের দরকার, সেটি হল মিডফিল্ড। মোহাম্মদ এলনেনি একজন যোগ্য উত্তরসুরী হলেও আলবার্ট সাম্বি লাকোংগা এবারের মৌসুমে এমন কিছুই করতে পারেননি যার দ্বারা এটি প্রমাণ হয় যে, তিনি একজন ভালো কভার অপশন। এছাড়া, তাদের হয়তো ওয়াইড পজিশনগুলিতেও কভার দরকার হবে, বিশেষ করে লেফট উইং এ।

সম্ভাব্য ট্রান্সফার টার্গেটসমূহ (Potential transfer targets)

লেস্টার সিটি’র বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ইউরি টিলেমানস এর আগেও আর্সেনালের সাথে লিংকড ছিলেন, এবং জানুয়ারিতে এমিরেটস স্টেডিয়ামে মুভ করতেই পারেন। বেলজিয়ান এই তারকা তাদের মিডফিল্ডে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গুণমান যুক্ত করতে সক্ষম হবেন, এবং বেশ কম দামেই তাকে কিনতে পারবে গানারস’রা এমনটিই ধারণা করা যাচ্ছে, কেননা আগামী গ্রীষ্মে লেস্টারের সাথে তার চুক্তির মেয়াদ সম্পন্ন হবে।

ল্যাৎসিও মিডফিল্ডার সার্জি মিলিঙ্কোভিচ-স্যাভিচ বহু বছর যাবত ইতালিয়ান লীগ থেকে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু কোন কারণে তা এতদিনেও সম্ভবপর হয়নি। যেহেতু আর্সেনাল এখন মিডফিল্ডার এর খোঁজে লিপ্ত, তাই তার দুকে তাদের নজর যেতেই পারে।

এছাড়া, ২১ বছর বয়সী উইংগার মিখায়লো মুদ্রিক অনেক দিন ধরেই শাখতার দোনেৎস্ক ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন, এবং তার সাথে লিংকড ক্লাবগুলির মধ্যে অন্যতম হল আর্সেনাল। জানুয়ারিতে তারা সেটি সম্পন্ন করলেও করে ফেলতে পারে।

ইউক্রেনিয়ান ক্লাব শাখতার এর স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লো নিকোলিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তাদের এই “ফেনোমেনন” খ্যাত খেলোয়াড়টিকে পাওয়ার জন্য অনেক ক্লাবই আগ্রহী এবং সঠি মূল্য পেলে তারা জানুয়ারিতে তাকে বিক্রি করতেও রাজি।

এখন আমরা যা করতে পারি, তা হল আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা। তারপর আর জল্পনা কল্পনা নয়, নিজ চোখেই আমরা দেখতে পাব কোন ক্লাব কাকে কিনছে, বা কাকে নিজ ক্লাব থেকে বিক্রি করে দিচ্ছে।

Share.
Leave A Reply