প্রেডিকশন (Prediction)

নেদারল্যান্ডস ১ – ১ আর্জেন্টিনা (অতিরিক্ত সময় শেষে)  |  নেদারল্যান্ডস ৪ – ৫ আর্জেন্টিনা (পেনাল্টি শুট আউট)

ভেন্যুঃ লুসেইল আইকনিক স্টেডিয়াম

নেদারল্যান্ডস বনাম আর্জেন্টিনা’র ম্যাচটি এখন বিশ্বকাপে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে তা আর্জেন্টিনা বনাম নাইজেরিয়া ফিক্সচারটিকেও যেকোন সময় হার মানাতে পারে। এই দুই দল একে অপরের নিকট একদমই অপরিচিত নয়, বরং বহুবার তারা একে অপরের হৃদয় ভেঙেছে বিশ্ব ফুটবলের এই সর্বোচ্চ আসরে।

শুধু বিশ্বকাপই নয়, বরং বিশ্বকাপের বাইরেও দু’দলের মধ্যকার পুরো ইতিহাস খতিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে, নেদারল্যান্ডসই বেশির ভাগ সময় আর্জেন্টিনার স্বপ্নভঙ্গ করেছে। তবে, দু’দলের মধ্যকার সর্বশেষ ম্যাচটিতে অরানিয়া খ্যাত নেদারল্যান্ডস পেনাল্টি শুট আউটে হেরে যায়, এবং ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে ব্যর্থ হয়। এবার তারা সুযোগ পাবে সেই পরাজয়টির প্রতিশোধ নেওয়ার।

ফর্ম বিবরণীঃ নেদারল্যান্ডস (Form Guide: Netherlands)

আফকন চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল ও স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে সহজ দু’টি জয়, এবং ইকুয়েডরের বিপক্ষে ড্র নিয়ে গ্রুপ ‘এ’ থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই রাউন্ড অব ১৬ তে পৌঁছায় ডাচ’রা, যেখানে তারা মুখোমুখি হয় যুক্তরাষ্ট্রের। সেটি অনেকের মতেই নেদারল্যান্ডস এর জন্য একটি কঠিন ম্যাচ হলেও, বেশ সহজে ও পারদর্শীতার সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের দূর্গ ভেদ করে ডাচ’রা। গ্রুপ পর্যায়ের তপ্ততা পেরিয়ে সেটি ছিল তাদের জন্য একটি আরামদায়ক আউটিং।

সেদিন তারা সকলের মন জয় করেছিল ঠিকই, তবুও বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতনামা ও প্রতিভাবান ডিফেন্ডাররা দলে থাকা সত্ত্বেও তাদের ডিফেন্স কেন নড়বড়ে, সে ব্যাপারে অনেকেই সন্দীহান। আর্জেন্টিনা এমন একটি দল যারা খুব বেশি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে না, এবং তাদের বিপক্ষে রক্ষণভাগে তাই ডাচ’রা কোন প্রকার ভুল করতে চাইবে না, নতুবা তাদেরকে আবারও নক আউট পর্যায়ে এসে হৃদয়ভঙ্গের শিকার হতে হবে।

ফর্ম বিবরণীঃ আর্জেন্টিনা (Form Guide: Argentina)

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাউন্ড অব ১৬ এর ফিক্সচারটিতে আকষ্মিকভাবে বেশ খানিকটা প্রতিযোগিতার শিকার হয় আর্জেন্টিনা। বলাই বাহুল্য, রাউন্ড অব ১৬ থেকে বাদ পড়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত অজি’রা ছিল এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা চমক। অপ্রস্তুত ডিফেন্ডিং এর কারণে আর্জেন্টিনা বেশ কয়েকবার বিপদের সম্মুখীন হয়েছিল ম্যাচটিতে। শেষ পর্যন্ত তাদের গোলকিপার ও ডিফেন্ডাররা কোনরকম দলকে বাঁচান।

পড়ুন:  আর্সেনাল বনাম অ্যাস্টন ভিলা প্রিভিউ

এছাড়া, তাদের আক্রমণভাগও এখন পর্যন্ত পুরোপুরিভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারেনি, গোলের সামনে প্রায়ই হয়েছে লক্ষ্যচ্যুত। নেদারল্যান্ডস এর মত দল, যাদের নিকট রয়েছে কি না একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ডিফেন্স, তাদের বিপক্ষে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করলে খালি হাতেই ঘরে ফিরতে হতে পারে মেসি ও তার সতীর্থদের।

ম্যাচটিতে যা যা ঘটতে পারে (How the game could go)

উভয় দলই খুব ভালো করে একে অপরকে চেনে। এছাড়া, উভয় পক্ষেই বেশ কয়েকজন ক্লাব টিমমেট’রাও রয়েছেন। এটি খুবই টাইট এবং চাপসম্পন্ন ম্যাচ হতে চলেছে, এবং মিডফিল্ডের লড়াই যে দল জিতবে, তারাই বাজিমাত করতে পারবে বলে আমাদের ধারণা।

আর্জেন্টিনা বল পায়ে ডাচ’দের চেয়ে বেশি পরিমাণে জাদুকরী মুহূর্ত তৈরি করতে পারবে। নিজেদের জালে বল জড়াতে না দিতে হলে নেদারল্যান্ডসকে করতে হবে মরণপণ ডিফেন্ডিং, এবং নিজেদের সবটুকু মাঠে ঢেলে দিতে হবে তাদের। তবে, এই ম্যাচটিতে খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি দেখা যাচ্ছে, এবং শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুট আউটেই খেলার ফলাফল নির্ধারণ হবে বলে আমরা মনে করি, যেখানে খুব স্বল্প ব্যবধানে জয়লাভ করবে লা আলবেসিলেস্তে’রা।

Share.
Leave A Reply